পাতা:রামদাস গ্রন্থাবলী দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৪৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ । se রাখিয়াছে। এই অদ্ভুত ব্যাপার সন্দর্শনে অমাত্যের মনে প্রীতি ও বিস্ময় উভয়ই উৎপন্ন হইল। অমাত্য আশ্চর্য্যান্বিত হইয়া সে সংবাদ তৎক্ষণাৎ রাজসকাশে বহন করিল। রাজ গুদ্ধোদন অমাতামুখে ঐ অদ্ভূত বাৰ্ত্ত শ্রবণ করিয়া অবিলম্বে সেই জম্ব তলে গমন করিলেন। কুমার তখনও ধ্যানস্থ । রাজা দেখিলেন, যেন এক অনিৰ্ব্বাচ্য তেজোরাশি রমণীয়তম মূৰ্ত্তিতে কোন এক অনিৰ্ব্বাচ্য ভাব ধ্যান করিতেছেন । দেখিয়া রাজার চৈতন্ত হইল, পুত্রভাব অপগত হইল । কে যেন তাহাকে অনুরোধ করিল,—আকর্ষণ করিল,—তাই তিনি পুত্রভাব ভুলিয়া গিয়া বুদ্ধভাবে বুদ্ধদেবকে প্রণাম করিলেন । কুমার শাক্যসিংহ প্রাতঃকালাবধি অপরাহু পৰ্য্যন্ত ধ্যানস্থ থাকিয় সৌগত জ্ঞানের দ্বারা শাক্যগণের ঋদ্ধি পরিদর্শনপূর্বক প্রতিবুদ্ধ হইলেন । অর্থাৎ তাহার সমাধি ভঙ্গ হইল। সমাধিভঙ্গের পর, তৎস্থানে পিতা সমাগত হইয়াছেন দেখিয়া, প্রথমে তাহার চরণ স্পর্শ করিলেন, অনন্তর তাহার সহিত নিম্নলিখিত প্রকারে আলাপ করিতে লাগিলেন । “পিতঃ ! আপনি হিংসাময়ী কৃষি পরি ত্যাগ করুন। এই কাৰ্য্য নিতাস্ত গৰ্হিত । ইহাতে পদে পদে হিংস ঘটনা হয় । স্ববর্ণে প্রয়োজন থাকিলে সুবর্ণ বৃষ্টি করিব, বস্ত্রের প্রয়োজন হষ্টলে বস্ত্রবর্ষণ হইবে, অন্ত যা কিছু চাহেনসমস্তই পাইবেন—আপনি এই হিংসারূপ কৃষি পরিত্যাগ করুন । সৰ্ব্বজগতের মুখোদেশে উত্নাক্ত হউন ৷” কুমার শাক্যসিংহ পিতার কৃষিগ্রাম দেখিতে গিয়া গুঃখিত হইয়াছিলেন। তাহার চিত্ত পরদুঃখে বিচলিণ্ড হইয়াছিল। তাই তিনি ধ্যানস্থ হইয়া, সমাহিত হইয়া, চিত্তচাঞ্চল্যের অবরোধ, দুঃখের বিঘাত, শাক্যকুলের ভবিষ্য ঋদ্ধি, সম্যকৃ জ্ঞানের লাভোপায়, জগতের দুঃখবিনাশ,–এই সকল বিষয়ের অনুসন্ধান করিতেছিলেন । পিতা আগমন করিলে, তাহার ধ্যান ভঙ্গ হইল । তিনি ষে আপনার বোধিত্বলাভের জন্ত ও জগতের হিতের জন্ত চিন্তৈকতানত উত্থাপন করিয়াছিলেন, ধ্যানভঙ্গ হইলেও তাহার বেগ তখন পর্যন্তও ছিল । তাই তিনি পিতাকে ও সমাগত শাক্যদিগকে দুঃখাস্তকর উপদেশ সকল দিয়াছিলেন। উপদেশ দেওয়া শেষ হইলে, তিনি স্বজনসমূহে পরিবৃত হইয়া প্রফুল্লমনে কপিল- , বস্তু নগরে পুনঃপ্রবেশ করিয়াছিলেন।

  • v