পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S. b3 রামমোহন-গ্ৰস্থাবলী বিরুদ্ধ পক্ষকেই গ্ৰহণ করিয়া থাকেন। আর সজ্জন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উত্তম পক্ষকেই গ্ৰহণ করেন-যেমন জনকাদির রাজ্য শাসন ও শত্ৰু দমন ইত্যাদি বিষয় ব্যাপার দেখিয়া দুর্জনেরা তঁহাদিগকে বিষয়াসক্ত জানিয়া নিন্দা করিত এবং ভগবান কৃষ্ণ হইতে অৰ্জ্জুন জ্ঞান প্ৰাপ্ত হইয়া যুদ্ধ এবং রাজ্য করিলে পর দুর্জনেরা তঁহাকে রাজ্যাসক্ত জানিয়া নিন্দিতরূপে বর্ণনা করিত, ইহা পূর্ব ২ও দৃষ্ট আছে। তাহার উত্তরে ধৰ্ম্মসংহারক ৫২ পৃষ্ঠে ৬ পংক্তিতে লিখেন যে “মানুষ্যেও বাহা চিহ্নের দ্বারা সে ভাব বোধ করিতে পারেন। নতুবা দুষ্ট ও শিষ্ট কিরূপে বোধ হইতেছে।” এবং পরাশরের বচন ওই পৃষ্ঠে লিখিয়াছেন যাহার অর্থ এই যে স্বর বর্ণ ইঙ্গিত আকার চক্ষু চেষ্টা এই সকল বাহা চিহ্নের দ্বারা মনুষের অন্তর্গত ভাব বােধ করিবেক। অতএব এই বাহ্য লক্ষণের প্রমাণে ইদানীন্তন জ্ঞাননিষ্ঠদের প্রথম পক্ষই, অর্থাৎ আসক্তিপূর্বক ব্যাপার করিয়া ভাক্তজ্ঞানী হয়েন, ইহাই ধৰ্ম্মসংহারকের স্থির হইয়াছে। উত্তর, এরূপ বাহ্য লক্ষণকে ছল করিয়া নিন্দ করা ইহাও কেবল ইদানীন্তন হয় এমত নহে, বরঞ্চ পূর্বই যুগের দুর্জনেরাও যখন জনকাৰ্জ্জুন প্ৰভৃতি জ্ঞানীদিগকে নিন্দা করিত তখন তাহাদিগকে নিন্দার হেতু জিজ্ঞাসিলে এইরূপই উত্তর দিত যে “স্বর, বর্ণ, ইঙ্গিত, আকার চক্ষুঃ চেষ্টার দ্বারা আমরা জানিয়াছি যে ঐ জ্ঞাননিষ্ঠেরা আসক্তিপূর্বক বিষয়কৰ্ম্ম ও শত্ৰুবধ স্ত্রীসঙ্গ এবং ঐশ্বৰ্য্য ভোগ করিতেছেন। সুতরাং কৰ্ম্ম ব্ৰহ্ম উভয়ভ্ৰষ্ট হয়েন”। অতএব দুর্জনেরা সর্বকালেই পরনিন্দা করিবার নিমিত্ত দোষ আরোপ করিতে ক্ৰটি করে নাই । ৫৩ পৃষ্ঠে যোগবশিষ্ঠের বচন কহিয়া লিখিয়াছেন (সর্বে ব্ৰহ্ম বদিষ্যন্তি সংপ্ৰাপ্তে চ কলেী যুগে। নানুতিষ্ঠন্তি মৈত্ৰেয় শিশ্নোদরপরায়ণা: ) কলিযুগ প্ৰাপ্ত হইলে সকল লোক ব্ৰহ্ম এই শব্দ কহিবেক কিন্তু হে মৈত্ৰেয় শিশ্নোদরপরায়ণের অনুষ্ঠান করিবেক না। যোগবশিষ্ঠে ভগবান রামচন্দ্ৰকে সম্বোধন করিয়া বশিষ্ঠদেব উপদেশ করেন এ বচনে মৈত্ৰেয়ের সম্বোধন দেখিতেছি । সে যাহা হউক, যাহারা-২ ব্ৰহ্ম কহে এবং শিশ্নোদরপরায়ণ হইয়া অনুষ্ঠান করে না তাহারাই এ বচনের বিষয় হয়। ইহা সৰ্ব্বথা যুক্তিসিদ্ধ বটে। কিন্তু বচনে “সর্ব” শব্দ আছে ইহাকে নির্ভর করিয়া এমৎ অর্থান্তর যদি কল্পান, যে যাহারা ২ কলিতে ব্ৰহ্ম কহিবেন তাহারা সকলে শিশ্নোদরপরায়ণ হয়েন তবে ভগবান গোবিন্দাচাৰ্য্য ভগবান শঙ্করাচাৰ্য্য শ্ৰীধর স্বামী প্ৰভৃতি র্যাহারা জ্ঞানানুষ্ঠান কলিযুগে করিয়াছেন। তঁহাদের সকলকে এ বচনের বিষয় কহিতে হইবেক, ইহা কেবল রাগান্ধের কৰ্ম্ম হয় কি না পণ্ডিতেরা বিবেচনা করিবেন। অধিকন্তু কলির প্রভাব বর্ণনে এরূপ “সর্ব” শব্দ কথন সকল ধৰ্ম্মের