পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sb V রামমোহন-গ্ৰন্থাবলী দুঃখিত নহি, কিন্তু ধৰ্ম্মসংহারক। ইহা জানেন কি না যে জনক ও অৰ্জ্জুনাদির নিন্দক দুৰ্জন ও আধুনিক জ্ঞাননিষ্ঠদের নিন্দক দুৰ্জন এ দুইয়ে সেই সাদৃশ্য যাহা করাল ব্যান্ত্রে ও ধূৰ্ত্ত শৃগালে দৃষ্ট হয় ৷ ৫৬ পৃষ্ঠের শেষ পংক্তিতে আরম্ভ করিয়া লিখেন যে “নারদকে দাসীপুত্র ও ব্যাসকে ধীবরকন্যাজাত, পঞ্চ পাণ্ডবকে জারজ, ব্ৰহ্মাকে কন্যাগামী, মহাভারতকে উপন্যাস, দেবপ্ৰতিমাকে মৃত্তিক এবং শালগ্রামকে শিলা বলিয়া উপহাস করিয়া থাকেন তঁাহারা সুজন কি দুৰ্জন জানিতে ইচ্ছা করি” । উত্তর, নিন্দা উদ্দেশে ঐ সকল মহানুভাবকে যাহারা এরূপ কহে তাহারা অবশ্যই দুর্জন বটে। কিন্তু এইরূপ কথন মাত্রে যদি দুৰ্জ্জনতা সিদ্ধ হয় তবে ঐ সকল বৃত্তান্ত, যে সকল গ্রন্থে কহিয়াছেন' সে সকল গ্রন্থকারেরা ও তাহার পাঠক ধৰ্ম্মসংহারক প্ৰভৃতির আদৌ দুৰ্জন হইবেন। দাসীপুত্ৰ নারদ ও ধীবরকন্যাজাত ব্যাস ইত্যাদি পৌরাণিক বৃত্তান্ত লোকে প্ৰসিদ্ধই আছে সুতরাং ত্যাহার প্রমাণ লিখনে প্ৰয়োজন নাই। কিন্তু শেষের দুই প্ৰস্তাবের প্রমাণের প্রাচুৰ্য্য নাই এ নিমিত্ত তুহার প্রমাণ দিতেছি। প্ৰথম ভারতাদির উপন্যাস কথন। মহাভারত আদিপৰ্ব্ব ( লেখকো ভারতস্যাস্য ভাব ত্ত্বং গণনায়ক । ময়ৈব প্ৰোচ্যমানস্তন্য মনসা কল্পিত্যস্ত চ ) আমি যে কহিতেছি ও মনের দ্বারা কল্পিত হইয়াছে যে ভারত তাহার লেখক হে গণেশ তুমি হও ৷ শ্ৰীভাগবত ( যথা ইমাস্তে কথিত মহীয়সাং বিতায় লোকেষু যশঃ পরেযুষাং । বিজ্ঞানবৈরাগ্যবিবক্ষয়া বিভো বচাে বিভূতিন তু পারমাৰ্থ্যং ) রাজারা যশকে লোকে বিস্তার করিয়া মরিয়াছেন তোমাকে এ কথা সকল কহিলাম তাহার তাৎপৰ্য্য এই যে বিষয়ে আসার জ্ঞান ও বৈরাগ্য হইবেক এ কেবল বাক্যবিলাস অর্থাৎ বাক্যক্ৰীড়া মাত্র কিন্তু পরমাৰ্থযুক্ত নয়। দ্বিতীয় প্ৰতিমা বিষয়ে। যথা শ্ৰীভাগবতে দশমস্কন্ধে (যস্যাত্মবুদ্ধিঃ কুণপে ত্ৰিধাতুকে স্বাধীঃ কলাত্ৰাদিষু ভৌম ইজ্যধীঃ । যত্তীৰ্থ বুদ্ধিশ্চ জলে ন কহিঁচিজনেঘভিজ্ঞেষু স এব। গোখরা; ) অর্থাৎ যে ব্যক্তির কফপিত্তবায়ুময় শরীরে আত্মবুদ্ধি হয়। আর স্ত্রী পুত্ৰাদিতে আত্মভাব ও মৃত্তিকানিৰ্ম্মিত প্ৰতিমাদিতে পূজ্য বোধ আর জলে তীর্থ বোধ হয়। কিন্তু এ সকল জ্ঞান তত্ত্বজ্ঞানীতে না হয় সে গরুর গাধা অর্থাৎ অতি মূঢ় । আহ্নিক তত্ত্বধৃত শাতাতপবচন (অন্স, দেবা মনুষ্যাণাং দিবি দেব মনীষিণাং । কাষ্ঠলোষ্টেযু মুখ্যাণাং যুক্তস্তাত্মনি দেবতা) জলেতে ঈশ্বর বোধ ইতর মনুষের হয় আর গ্ৰহাদিতে ঈশ্বর বোধ দৈবজ্ঞানীরা করেন আর কাষ্ঠ লোষ্ট ইত্যাদিতে ঈশ্বর বোধ মুখেরা করে কিন্তু জ্ঞানীরা আত্মাতেই ঈশ্বর বোধ করেন। ঐ পৃষ্ঠে ৬ পংক্তিতে লিখেন যে “কোন দুৰ্জন দুগ্ধকে তক্র ও শর্করাকে বালুক,