পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

어 275 y ors সাধনচতুষ্টয়াদিকে বেদান্তে ও গীতাদি মোক্ষশাস্ত্রে কারণ লিখিয়াছেন। কিন্তু ইহ জন্মে এ সকল বিশেষণ উত্তম অধিকারীর বিষয়ে হয় অর্থাৎ এরূপ বিশেষণাক্রান্ত হইলে ইহ জন্মেই ব্ৰহ্ম জানিবার ইচ্ছা মানুষের জন্মে। কিন্তু পূৰ্ব্বজন্মকৃত সুকৃতের দ্বারা ঐহিক সাধনচতুষ্টয় ব্যতিরেকেও মনুষ্যে ব্ৰহ্ম জানিবার ইচ্ছা হইয়া থাকে, বেদান্তের ৩ অধ্যায় ৪ পাদ ৫১ সূত্র ( ঐহিকমপ্যপ্ৰস্তুতপ্ৰতিবন্ধে তদর্শনাৎ ) যদি প্ৰতিবন্ধক না। থাকে। তবে অনুষ্ঠিত সাধনের দ্বারা ইহ জন্মে অথবা জন্মান্তরে ব্ৰহ্মজ্ঞান প্ৰাপ্তি হয় যেহেতু বেদে দেখিতেছি (গৰ্ভস্থ এব বামদেবঃ প্ৰতিপেদে ব্ৰহ্মভাবং ) গৰ্ত্তস্থ যে বামদেব তিনি ব্ৰহ্মভাব প্ৰাপ্ত হইয়াছেন অর্থাৎ তাতার ঐহিক কোনো সাধন ছিল নাই। সুতরাং পূৰ্ব্বজন্মের সাধনের দ্বারাই জ্ঞান প্ৰাপ্ত হইয়াছেন । ভগবদগীতা (পূর্বাভ্যাসেন তেনৈব হিয়তে হাবশোপি স: ) সেই পুৰ্ব্বজন্মের জ্ঞানাভ্যাসের দ্বারা ব্যক্তি অবশ হইয়া জ্ঞান সাধনে যত্ন করে। শাস্ত্ৰে সাধনচতুষ্টয়কে ব্ৰহ্মজিজ্ঞাসার কারণ কহিয়াছেন। অতএব যখন কোন ব্যক্তিতে ব্ৰহ্ম জানিবার ইচ্ছা উপলব্ধি হয় তখন অবশ্যই স্বীকার করিতে হইবেক যে এরূপ ইচ্ছার কারণ যে সাধনচতুষ্টয় তাহা ইহ জন্মে অথবা পূৰ্ব্বজন্মে। এ ব্যক্তির হইয়াছে নতুবা কারণ না থাকিলে কিরূপে কাৰ্য্যের সম্ভাবনা হয়। ভগবদগীতাতেও ইহাকে পুনঃ২ দৃঢ় করিয়া কহিয়াছেন (চতুর্বিবধা ভজন্তে মাং জনা: সুকৃতিনোৰ্জ্জুন। আৰ্ত্তো জিজ্ঞাসুরথার্থী জ্ঞানী চ ভারতীৰ্ষভ ) স্বামীর ব্যাখ্যা, পূৰ্ব্বজন্মের সুকৃতের দ্বারা চারি প্রকার ব্যক্তিরা আমাকে ভজন করেন প্ৰথম আৰ্ত্ত, দ্বিতীয় জিজ্ঞাসু, তৃতীয় অর্থার্থী, চতুর্থ জ্ঞানী। যেমন ব্ৰহ্মজিজ্ঞাসার অধিকারের কারণ সাধনচতুষ্টয় লিখিয়াছেন সেইরূপ শাক্ত শৈব বৈষ্ণব সৌর গাণপত্য ইত্যাদি তাবৎ উপাসনাতেই অধিকারের কারণ বাহুল্যরূপে লিখেন, তন্ত্রসারন্ধুত বচন (শান্তো বিনীতঃ শুদ্ধাত্মা শ্রদ্ধাবান ধারণক্ষমঃ। সমর্থশাচ কুলীনশ্চ প্রাজ্ঞঃ সচ্চরিতে যতিঃ । এবমাদিগুণৈযুক্তি শিষ্যে ভবতি নান্যথা ) শমগুণবিশিষ্ট অর্থাৎ অন্তরিান্দ্ৰিয়ের নিগ্ৰহবিশিষ্ট ও বিনয়যুক্ত, চিত্তশুদ্ধিবিশিষ্ট, শাস্ত্ৰে দৃঢ়বিশ্বাসী, ও মেধাবী, বিহিত কৰ্ম্মানুষ্ঠািনক্ষম, আচারাদি গুণযুক্ত, বিশেষদর্শী, সচ্চরিত্র, যত্নশীল ইত্যাদি গুণবিশিষ্ট হইলে শিষ্য হয় অন্যথা শিষ্য হইতে পারে না ৷ এ বচনে “শিষ্যে ভবতি নান্যথা৷” এই বাক্যের দ্বারা এ সকল বিশেষণকে সাকার উপাসনা বিষয়ে দৃঢ়তররূপে কহিয়াছেন। যদি ধৰ্ম্মসংহারিক কহেন যে “এ সকল বিশেষণ উত্তমাধিকারী শিষ্যের প্রতি হয়। কিন্তু মধ্যম ও কনিষ্ঠাধিকারে এ সমুদ্ৰায়ের নিয়ম নাই যেহেতু এরূপ সঙ্কোচ না করিলে সাকার উপাসনাতে অধিকারী প্ৰায় পাওয়া যাইবেক না এবং জ্ঞানসাধন বিষয়ে সাধনচতুষ্টয়ের সম্পূর্ণরূপে