পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ Σ ο রামমোহন-গ্ৰন্থাবলী ইহ জন্মেই হওয়া আবশ্যক, এমৎ না কহিলে ব্ৰহ্মোপাসনার প্রবৃত্তিতে বাধা জন্মান যায় না” উত্তর, এরূপ কথন ধৰ্ম্মসংহারকের আশ্চৰ্য্য নহে, কিন্তু পূর্বলিখিত বেদান্তসূত্র ও ভগবদগীতার প্রাপ্ত স্পষ্টার্থকে যাহারা অমান্য করেন। তঁহাদের সহিত আমাদের শাস্ত্রীয় বিচার নাই। ৬৪ পত্রে ২ পংক্তি অবধি লিখেন যে তত্ত্বজ্ঞানীর লক্ষণ ভগবদগীতাতে কহিয়াছেন ( দুঃখেঘনুদ্বিগ্নমনাঃ সুখেসু বিগতস্পৃহঃ । বীতরাগভয়ক্ৰোধ: স্থিতধীমুনিরুচ্যতে) দুঃখেতে অনুদ্বিগ্নচিত্ত ও সুখেতে নিম্পূহ ও বিষয়ানুরাগশূন্য, ভয় ক্রোধ রহিত এবং মুনি অর্থাৎ মৌনশীল যে মনুষ্য তাহার নাম স্থিতধী অর্থাৎ তত্ত্বজ্ঞানী হয়। উত্তর, এ সকল স্বাভাবিক লক্ষণ সিদ্ধাবস্থায় হয়। কিন্তু সাধনাবস্থায় এ সমুদায় বিশেষণ ব্যক্তিতে নিয়ম করিলে সিদ্ধাবস্থা ও সাধনাবস্থা উভয়ের ভেদ থাকে না, গীতা ( বহুনাং জন্মনােমন্তে জ্ঞানবান মাং প্ৰপদ্যতে। বাসুদেবঃ সৰ্ব্বমিতি স। মহাত্মা সুদুল্লভঃ ) চারি প্রকার ভক্তের মধ্যে চতুর্থ জ্ঞানী তাহাকে সৰ্ব্বোত্তম কহিয়া তাহার সুদুল্লািভত্ব কহিতেছেন যে এই চতুর্থ ভক্ত অর্থাৎ জ্ঞাননিষ্ঠ কিঞ্চিৎ২ পুণ্য বৃদ্ধির দ্বারা অনেক জন্মের অন্তে আত্মজ্ঞানকে লব্ধ হইয়া চরাচর এই সমস্ত জগৎ বাসুদেবই হয়েন এই ঐক্য জ্ঞানে অর্থাৎ সর্বত্র আত্মদৃষ্টিরূপে আমার ভজন করেন। অতএব সেই অপরিছিন্ন দ্রষ্টা আতিশয় দুল্লভ হয়েন ৷ অৰ্থাৎ অনেক জন্ম সাধনাবস্থার পরে সিদ্ধাবস্থা জন্মে ( প্ৰযত্নাদ যতমান স্তু যোগী সংশুদ্ধকিস্বিষ: | অনেকজন্মসংসিদ্ধস্ততে যাতি পরাং গতিং ) স্বামী, যদি পূর্বোক্ত প্রকারে অল্প যত্নবিশিষ্ট জ্ঞাননিষ্ঠ ব্যক্তি পরজন্মে পরম গতিকে প্ৰাপ্ত হয় তবে যে ব্যক্তি উত্তরোত্তর জ্ঞানাভ্যাসে অধিক যত্ন করে এবং সেই অনুষ্ঠানের দ্বারা নিষ্পাপ হয় সে ব্যক্তি অনেক জন্মেতে সমাধির দ্বারা সম্পূর্ণরূপে জ্ঞানী হইয়া ততোধিক শ্রেষ্ঠ গতিকে প্ৰাপ্ত হইবেক ইহাতে আশ্চৰ্য্য কি ৷ এই গীতাবাক্যানুযায়ী ভাগবত শাস্ত্রেও সাধনাবস্থার অনেক প্ৰকার কহিয়াছেন, শ্ৰীভাগবতের একাদশ স্কন্ধে তৃতীয়াধ্যায়ে ( সৰ্ব্বভুতেষু য: পশ্যেৎ ভগবদ্ভাবমাত্মনঃ। ভূতানি ভগবত্যাত্মন্তেষ ভাগবতোত্তমঃ। ঈশ্বরে তদধীনেষু বালিশেষু দ্বিষৎসু চ । প্ৰেমমৈত্রীকৃপোপেক্ষা যঃ করোতি স মধ্যমঃ। আর্চায়ামেব হরয়ে পুজাং যঃ শ্ৰদ্ধয়ে হতে । না তদ্ভক্তেষু চান্তেষু স ভক্ত: প্ৰাকৃত: স্মৃত: ) স্বামী, জ্ঞানপক্ষে এবং “যদ্বা” কহিয়া ভক্তি পক্ষেও ব্যাখ্যা করিয়াছেন তাহার প্রথম পক্ষ লিখিতেছি। সকল জগতে আপনাকে ব্ৰহ্মস্বরূপে অধিষ্ঠিত এবং ব্ৰহ্মস্বরূপ আপনাতে জগৎকে যে দেখে অর্থাৎ সর্বত্র আত্মদৃষ্টি যে করে সে উত্তম । ভাগবত হয়। ঈশ্বরে শ্ৰীতি ও ঈশ্বরের ভক্তদের প্রতি সৌহার্দ ও মুখে কৃপা আর