পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SRé রামমোহন-গ্ৰন্থাবলী প্ৰাণবিদ্যার এবং আত্মজ্ঞানের ইচ্ছা যাহাদের নাই তাহাদের আশ্ৰমকৰ্ম্মের আবশ্যকতার বিধান করিয়া ৩৬ সূত্রে এই পরের আশঙ্কার নিরাস করিতেছেন, যে আত্মজ্ঞান বর্ণাশ্ৰমকৰ্ম্মের নিতান্ত অপেক্ষা করেন। কিম্বা কোনো অংশে নিরপেক্ষ হয়েন, তাহাতে এই সূত্র লিখেন (অন্তরা চাপি তু তদ্ৰ ষ্টেঃ ৩৬) আশ্রমকৰ্ম্মরহিত ব্যক্তিরও জ্ঞানের অধিকার আছে যেহেতু বেদে দৃষ্ট হইতেছে, রৈক ও বাচক্লবী প্ৰভৃতি আত্মজ্ঞানীদের আশ্রমকৰ্ম্ম ছিল না। কিন্তু তঁহাদের পূর্বজন্মীয় সুকৃতির দ্বারা জ্ঞান সাধনে প্ৰবৃত্তি হইয়াছিল ( ৩.৬ )। তদনন্তর আশ্রমকৰ্ম্মবিশিষ্ট ও আশ্রম কৰ্ম্মরহিত এই দুই সাধকের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ হয় তাহা পরের সূত্ৰে কহিতেছেন ( অতস্তিতরােজ্যায়ো লিঙ্গাচ্চ) আশ্রমকৰ্ম্মরহিত সাধক হইতে আশ্ৰমকৰ্ম্মবিশিষ্ট সাধক জ্ঞানাধিকারে শ্রেষ্ঠ হয়েন যেহেতু শ্রুতি স্মৃতিতে আশ্রমীর প্রশংসা করিয়াছেন । সমুদায়ের তাৎপৰ্য্য এই যে আত্মজ্ঞান উৎপন্ন হইলে তাহার ফল যে মুক্তি তৎপ্ৰাপ্তির নিমত্ত অগ্নীন্ধনাদি বর্ণাশ্রম কৰ্ম্মের অপেক্ষা নাই, তবে লোকসংগ্রহের নিমিত্ত কোন ২ জ্ঞানীরা (যেমন বশিষ্ঠ জনকাদি) বর্ণাশ্ৰমকৰ্ম্মের অনুষ্ঠান করিয়াছেন, এবং লোকানুরোধ না করিয়া কোন ২ জ্ঞানীরা (যেমন শুক ভরত্যাদি) বর্ণাশ্রমাচারের অনুষ্ঠান করেন নাই, তাহাতে ওই আশ্রমী জ্ঞানী ও অনাশ্ৰমী জ্ঞানী দুইয়ের মধ্যে কাহাকেও পুণ্য পাপ স্পর্শ করে নাই । ( অতএব চাক্ষ্মীন্ধনাৰ্দ্ধ্যানপেক্ষা ) অর্থাৎ পরিপক্ক জ্ঞানীর কৰ্ম্মের অপেক্ষা নাই। বেদান্তের ৩ অধ্যায়ের ৪ পাদের এই ২৫ সূত্রের বিষয়, এবং ( নৈব তস্য কৃতেনার্থে নাকৃতেনেহ কশ্চন ) অর্থাৎ তঁহাদের পাপ পুণ্য ও কৰ্ত্তব্যাকৰ্ত্তব্য নাই । ইত্যাদি গীতাবাচনের বিষয় ওই জ্ঞানীরা হয়েন ॥ ( সৰ্ব্বাপেক্ষা চ যজ্ঞাদি শ্রণিতের শ্ববৎ ) অর্থাৎ জ্ঞানেচ্ছার প্রতি আশ্ৰমকৰ্ম্ম সকলের অপেক্ষা আছে, বেদান্তের ৩ অধ্যায়ের ৪ পাদের এই ২৬ সূত্রের বিষয়, ও ( এতান্যপি তু কৰ্ম্মাণি সঙ্গং ত্যক্ত ফলানি চ) অর্থাৎ চিত্তশুদ্ধির জন্যে কামনা ত্যাগ করিয়া আশ্রমকৰ্ম্ম করিবেক, ইত্যাদি গীতাবাচনের বিষয় মুমুক্ষু কৰ্ম্মীরা হয়েন ॥ (অন্তরাচাপি তু তদাষ্টে: ) অর্থাৎ জ্ঞানাধিকারে বর্ণাশ্রমাচারের অপেক্ষা নাই, বেদান্তের ৩ অধ্যায়ের ও পাদের এই ৩৬ সুত্রের বিষয়, ও (সৰ্ব্বধৰ্ম্মান পরিত্যাজ্য মামেকং শরণং ব্ৰজ ) অর্থাৎ বর্ণাশ্রমাচার ত্যাগ করিয়া আমি যে এক পরমেশ্বর আমার শরণ লও, ইত্যাদি গীতাবাচনের বিষয় বর্ণাশ্রমাচার্যকৰ্ম্মারহিত মুমুক্ষু ব্যক্তিরা হয়েন । অতএব অজ্ঞানতা প্ৰযুক্ত কিম্বা দ্বেষ পৈশুন্যতা হেতু এক সূত্রের ও এক বচনের বিষয়কে অন্য সূত্র অন্য বচনের বিষয় কল্পনা করিয়া শাস্ত্রের পরস্পর অনৈক্য