পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় প্রশ্নোত্তর। ধৰ্ম্মসংহারকের দ্বিতীয় প্রশ্নের তাৎপৰ্য্য এই ছিল, যে সদাচার সদ্ব্যবহারহীন অভিমানীর যজ্ঞোপবীত ধারণ নিরর্থক হয়, তাতার উত্তরে আমরা লিখিয়াছিলাম যে সদাচার ও সদ্ব্যবহার শব্দ হইতে তাহার যদি এ অভিপ্ৰায় হয়, যে তাবৎ উপাসকের ও অধিকারীর যে আচার ও ব্যবহার তাহাকেই সদাচার ও সদ্ব্যবহার কহা যায়, তবে তাবৎ উপাসকের ও অধিকারীর उ52 \3 ব্যবহার এক ব্যক্তি হইতে এককালে কদাপি সম্ভব হয় না ; যেহেতু বৈষ্ণব ও কৌল প্রভৃতির আচার ও ব্যবহার পরস্পর অত্যন্ত, বিরুদ্ধ হয়, এমতে ধৰ্ম্মসংস্তারকের এবং অন্যের কাহারও যজ্ঞোপবীত ধারণ সম্ভবে না। দ্বিতীয়ত যদি আপন১ উপাসনাবিহিত যে সমুদায় আচার তাহাই সদাচার সদ্ব্যবহার ইতা ধৰ্ম্মসংহারকের অভিপ্রেত হয়, এবং তাহার আকরণে যজ্ঞোপবীত ধারণ বৃথা হয়, এমতে যে২ ব্যক্তি আপন উপাসনার সমুদায় আচার করিতে সমর্থ না হয়েন ঠাণ্ডার যজ্ঞোপবীত ধারণে অধিকার না থাকে। তবে প্ৰায় একালে যজ্ঞোপবীত ধারণে অধিকারী প্রাপ্ত হুইবেক না । তৃতীয়ত সদাচার ও সদ্ব্যবহার শব্দ দ্বারা আপন১ উপাসনাবিহিত যথাশক্তি অনুষ্ঠান করা ধৰ্ম্মসংহারকের যদি অভিপ্রেত হয়, ও যে২ অংশের অনুষ্ঠানে ত্রুটি জন্মে তন্নিমিত্ত মনস্তাপ ও স্ব১ ধৰ্ম্মবিহিত প্ৰায়শ্চিত্ত করিলে যজ্ঞসূত্র ধারণ বুথ হয় না, তবে এ ব্যবস্থানুসারে ধৰ্ম্মসংহারকের এবং অন্য অন্য ব্যক্তিরও যজ্ঞোপবীত রক্ষা পায় । চতুর্থ যদি ধৰ্ম্মসংহারক কহেন যে মহাজন সকল যাহা করিয়া আসিতেছেন তাহারই নাম সদাচার সদ্ব্যবহার হয়, তাহাতে জিজ্ঞাস্য ছিল যে মহাজন শব্দে কাহাকে স্থির করা যায় ; যেহেতু গৌরাঙ্গায় বৈষ্ণবসম্প্রদায়েরা কবিরাজ গোঁসাই, রূপসনাতন জীব প্রভৃতিকে মহাজন কহিয়া থাকেন এবং তাঁহাদের গ্রন্থ ও আচারানুসারে আচরণ করিতে উদ্যত হয়েন, এবং শাক্তসম্প্রদায়ের কৌলের বিরূপাক্ষ, নির্বাণাচাৰ্য্য, ও আগমবাগীশ প্রভৃতিকে মহাজন কহিয়া তাহদের আচার ও ব্যবহারকে সদাচার কােহন, এবং রামানুজী বৈষ্ণবেরা রামানুজ ও তৎশিষ্য প্রশিষ্যকে মহাজন কহিয়া তাহাদের আচারকে সদাচার জানেন এবং তদনুসারে অনুষ্ঠান করেন, এবং নানকপন্থী ও দাদুপন্থী প্রভৃতিরা পৃথক ব্যক্তি সকলকে মহাজন জানিয়া তাহদের ব্যবহার ও আচারানুসারে ব্যবহার ও আচার করিয়া থাকেন। একের মহাজনকে অন্যে মহাজন কহে না এবং ঐ সকল মহাজনের অনুগামীরা পরস্পরকে নিন্দিত ও অশুচি কহিয়া থাকেন ; অতএব ধৰ্ম্মসংহারকের এরূপ তাৎপৰ্য্য হইলে সদাচার ও সদ্ব্যবহারের