পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S88 রামমোহন-গ্ৰন্থাবলী উল্লেখ করিয়া থাকে, সে যাহা হউক আমাদের নিয়মানুসারে এ সকল কটুক্তির छेखत দিবার প্রয়োজন নাই। কিন্তু ঐ সকল পৃষ্ঠের মধ্যে যে কিঞ্চিৎ শাস্ত্রীয় কথা আছে তাহার উত্তর লিখিতেছি । ১২৬ পৃষ্ঠে লিখেন যে “তত্ত্বজ্ঞানীর হিংসা মাত্ৰই অবিহিত হয়। কিন্তু যে২ কৰ্ম্মে হিংসার বিধি আছে সেই সকল কৰ্ম্মে তাহারদিগের প্রতি অনুকল্পের বিধান করিয়াছেন”। উত্তর, তত্ত্বজ্ঞানী শব্দের মুখ্যার্থ প্ৰাপ্তজ্ঞান ব্যক্তিরা হয়েন, তাহাদের প্ৰতি কৰ্ম্মেরি বিধি নাই সুতরাং কৰ্ম্মের অঙ্গ যে হিংসা তাহার অনুকল্প সুদূরপরাহত হয়, ভগবদগীতা ( নৈব তস্য কৃতেনার্থে নাকুতেনেহ কশ্চন ) অর্থাৎ জ্ঞানীর কৰ্ম্ম করিলে পুণ্য নাই এবং কৰ্ম্ম ত্যাগে পাপ হয় না। বিশেষত তত্ত্বজ্ঞানীদের মধ্যে কেহ২ যেমন জনক বশিষ্ঠাদি যখন লোকসংগ্রহের জন্যে যজ্ঞাদি কৰ্ম্ম করিয়াছিলেন তখন বিহিত হিংসাও করিয়াছেন, অতএব তত্ত্বজ্ঞানীর প্রতি অনুকল্পের বিধি দিয়াছেন এরূপ কথন এ মতেও অযুক্ত হয় । তত্ত্বজ্ঞানী শব্দে যদি প্ৰাপ্তজ্ঞান না কহিয়া জ্ঞানেচ্ছক অভিপ্রেত হয় তবে তাহারা সাধনাবস্থায় দুইপ্ৰকার হয়েন তাহার উত্তম কল্প বর্ণাশ্রমাচারবিশিষ্ট সাধক ও কনিষ্ঠ কল্প বর্ণাশ্রমাচারহীন সাধক, তাহাতে বৰ্ণাশ্রমাচারবিশিষ্ট সাধকের হিংসাত্মক নিত্য নৈমিত্তিক যজ্ঞাদি কৰ্ম্ম কৰ্ত্তব্য হয়। যাহা এই পুস্তকের ৯৬ পৃষ্ঠ অবধি বিস্তাররূপে লিখা গিয়াছে এবং যজ্ঞীয় মাংস ভোজনের আবশ্যকতা মনুবচনে প্ৰাপ্ত হইতেছে। যথা মনুঃ ( নিযুক্তস্তু যথা ন্যায়ং যে মাংসং নাত্তি মানবঃ । সি প্ৰেত্য পশুতাং যাতি সম্ভব।ানেকবিংশতিং ) যে ব্যক্তি যজ্ঞাদিতে নিযুক্ত হইয়া মাংস ভোজন না করে সে মৃত্যু পরে একবিংশতি জন্ম পশু হয়। বরঞ্চ ভগবান মনু ঐ প্রকরণে লিখেন যে (এম্বৰ্থেষু পশুন্য হিংসন বেদতত্ত্বার্থবিন্দ্ৰিজঃ। আত্মানঞ্চ পশুংশ্চৈব গময়ত্যুত্তমাং গতিং ) এ সকল কৰ্ম্মে পশু হিংসা করিয়া বেদার্থবিজ্ঞ দ্বিজেরা আপনাকে ও পশুকেও উত্তম গতি প্ৰাপ্ত করান । পূর্বোক্ত ভগবদগীতা ও বেদান্ত এবং মনুবচনের বিপরীত যে কোনো মত থাকে সে প্ৰশংসনীয় নহে। ১৩৭ পৃষ্ঠে ( মধুপৰ্কে চ যজ্ঞে চ) ইত্যাদি মনুর দুই বচন লিখিয়াছেন। তাহার দ্বারা আমাদের পূর্বলিখিত যে ( দেবান পিতৃন সমভ্যৰ্চ্য খাদন মাংসং ন দোষাভাক ) ইত্যাদি বচনেরই পোষক হইয়াছে অর্থাৎ বৈধ হিংসাতে কদাপি দোষ নাই । ১৩৮ পৃষ্ঠে অগস্ত্য সংহিতার বচন লিখেন যে ( হিংসা চৈব ন কৰ্ত্তব্য। বৈধহিংসা চ রাজসী । ব্ৰাহ্মণৈঃ সা ন কৰ্ত্তব্য যতস্তে সাত্বিক মতাঃ।) কি বৈধ কি অবৈধ হিংসা মাত্ৰই করিবেক না যেহেতু বৈধ হিংসাও রাজসী হয়, ব্ৰাহ্মণের সত্বগুণাবলম্বী