পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S98 রামমোহন-গ্ৰন্থাবলী প্ৰথমত এ সকল বচন কোন গ্ৰন্থকারের ধূত তাহ ধৰ্ম্মসংহারকের লিখা উচিত ছিল ; দ্বিতীয়ত এ সকল বচনের সহিত শাস্ত্ৰান্তরের বিরোধ না হয় এ নিমিত্ত ইহাকে পশুভাবের স্তুতিপর অবশ্যই মানিতে হইবেক, যেহেতু কলিকালে বীরভাব সৰ্ব্বথা প্ৰশস্ত এবং অন্য ভাবের অপ্ৰশস্ততাবোধক বচন সকল যাহা প্ৰসিদ্ধ টীকা প্ৰাপ্ত ও প্ৰসিদ্ধ সংগ্ৰহকারের ধূত হয় তাহা আমরা পূর্বোত্তরে লিখিয়াছি, সম্প্রতিও তদ্ভিন্ন অন্য ২ বচন লিখিতেছি। কুলাৰ্চনদীপিকাধুত কামাখ্যাতন্ত্রে (জম্বুদ্বীপে কলে দেবি ব্ৰাহ্মণস্তু বিশেষতঃ । পশুর্ন স্যাৎ পশুর্ন স্যাৎ পশুর্ন স্যান্মমাজ্ঞয়া ) মহানির্বাণে ( কলৌ ন পশুভাবোেহস্তি দিব্যভােবঃ কুতো ভবেৎ। । অতো দ্বিজাতিভিঃ কাৰ্য্যং কেবলং বীরসাধনং। সত্যং সত্যং পুনঃ সত্যং সত্যং সত্যং ময়োচ্যতে। বীরভাবং বিনা দেবি সিদ্ধিনাস্তি কলৌ যুগে ) ইহার সংক্ষেপার্থ, কলিকালে জম্বুদ্বীপে বিশেষতঃ ব্ৰাহ্মণ কদাপি পশুভাব আশ্রয় করিবেন না। কলিতে পশুভাব হইতে পারে না, দিব্যভাব কিরূপে হয়। অতএব দ্বিজের কলিতে কেবল বীরসাধন করিবেন। এখন আমাদের লিখিত বীরভাবের প্রশস্ত্যসূচক এই সকল বচন ও ধৰ্ম্মসংহারকের লিখিত পশুভাবের প্রশস্ত্যসূচক বচন উভয়ের পরস্পর অনৈক্য দেখাইতেছি, যেহেতু তঁহার লিখিত বচনে কলিতে পশুভাবেই সাধন প্ৰশস্ত হয় এবং তাহার দ্বারা কেবল সিদ্ধি জন্মে ইহা বোধ হয়, আর আমাদের লিখিত পূর্ব ২ ংগ্ৰহকারকৃত বচনে ইহা প্ৰাপ্ত হইতেছে যে কলিতে বীরসাধনই প্ৰশস্ত ও তাতার দ্বারাই কেবল সিদ্ধি হয় ; অতএব এরূপ বিরোধস্থলে সংগ্ৰহকারের সর্বসামঞ্জস্যে এইরূপ মীমাংসা করিয়াছেন যে পশুভাবের বিধায়ক যে সকল বচন তাহা সেই অধিকারে পশুভাবের স্তুতিপর হয় এবং বীরভাবের বিধায়ক বচন সকল তদধিকারে তাহার মাহাত্ম্যজ্ঞাপক হয়, যেমন বিষ্ণুপ্ৰধান গ্রস্থে ব্ৰহ্মা ও মহেশ্বর হইতে বিষ্ণুর প্রাধান্য বর্ণন দ্বারা ও বৈষ্ণব ধৰ্ম্মের সর্বোত্তমত্ব কথনের দ্বারা ভগবান বিষ্ণুর এবং তদ্ধৰ্ম্মের স্তুতিমাত্র তাৎপৰ্য্য হয়, রামায়ণে ( অহং ভবান্নাম জপন কৃতার্থে বসামি কাশ্যামনিশং ভবা ন্যা )- মহাদেব কহিতেছেন যে হে রাম আমি তোমার নাম জপেতে কৃতকাৰ্য্য হইয়া নিরন্তর ভবানীর সহিত কাশীতে বাস করি ; এবং শিবপ্ৰধান গ্রন্থে ব্ৰহ্মা ও বিষ্ণু হইতে শিবের প্রাধান্য বর্ণন ও শৈব ধৰ্ম্মের সর্বোত্তমত্ব কথন দ্বারা ভগবান মহেশ্বরের ও মাহেশ্বর ধৰ্ম্মের স্তুতি বোধ হয়, মহাভারতে দানধৰ্ম্মে ( রুদ্রভক্ত্য তু কৃষ্ণেন জগদ্ব্যাপ্তং মহাত্মনা) অর্থাৎ মহাদেবে ভক্তির দ্বারা কৃষ্ণ জগদ্ব্যাপক হইয়াছেন ; আর শক্তিপ্রধান তন্ত্রাদিতে বিষ্ণু প্ৰভৃতি হইতে শক্তির