পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৭৮

à Ab- রামমোহন-গ্ৰন্থাবলী মদ্য মাত্রের নিষেধ। ক্ষত্ৰিয় বৈশ্যের গৌড়ী প্ৰভৃতি মদ্যের কদাপি নিষেধ নাই অর্থাৎ রাগতও নিষিদ্ধ নহে। আর শূদ্রের প্রতি সুরা কিম্বা মদ্য এ দুইয়ের একও নিষিদ্ধ নহে। প্ৰায়শ্চিত্তবিবেককার নানা মুনিবচনের বিচার করিয়া পরে সিদ্ধান্ত করেন ( তদেবং পৈষ্ট নিষেধস্ত্ৰৈবৰ্ণিকানাং গৌড়ীমাধবীনিষেধস্তু ব্ৰাহ্মণানামেব ) তথা, ( রাজন্যাদীনান্তু গৌড়ীমাধবীপ্রভূতিসকলমদ্যপানে ন দোষা: ) অর্থাৎ ব্ৰাহ্মণাদি তিন বর্ণের পৈষ্টী সুরা নিষিদ্ধ হয়। আর কেবল ব্ৰাহ্মণের প্রতি গৌড়ী মাধবীর নিষেধ হয়। ক্ষত্ৰিয়াদি বর্ণের গৌড়ী মাধ্বী প্ৰভৃতি সর্বপ্রকার মদ্যপানে দোষ নাই। এখন জিজ্ঞাসা করি যে মনু যাজ্ঞবল্ক্যের অনুশাসনে ও মিতাক্ষরা ও প্ৰায়শ্চিত্তবিবেকের ব্যবস্থা দ্বারা শূদ্রের বৈধ বৈধ মদ্যপানে দোষাভাব মানিতে হইবেক, কি ধৰ্ম্মসংহারকের ব্যবস্থানুসারে ঐ সকলের সিদ্ধান্ত অন্যথা হইয়া শূদ্রের মদ্যপান নিষিদ্ধ ইতাই স্থির করা যাইবেক । ধৰ্ম্মসংহারক শূদ্র কমলাকরঞ্ছত কহিয়া যে পরাশরের বচন লিখেন তাহা শূদ্র কমলাকরঞ্ছত অথবা শূদ্র পদ্মাকরােতই বা হউক সমূলক যদি হইত। তবে মিতাক্ষরাকার, কুল্লােক ভট্ট, প্ৰায়শ্চিত্তবিবেককার, ইহঁরা অবশ্যই লিখিয়া ইহার মীমাংসা করিতেন ; যদ্যপিও ওই পরাশরবচন সমূলক হয় তবে মম্বাদি অন্য স্মৃতির সহিত একবাক্যতা করিবার জন্যে ব্ৰাহ্মণের গ্রাহ্য যে শ্ৰেীত যজ্ঞীয় মদিরা তাহারি নিষেধ পরাশরবচনে শূদ্রের প্রতি অভিপ্রেত হইবেক, অন্যথা মম্বাদি স্মৃতির সহিত একবাক্যতা থাকে না। এতদ্ভিন্ন শূদ্রের মদ্যপানবিধায়ক শত২ বচন তন্ত্রশাস্ত্রে দৃষ্ট হইতেছে এবং ওই শাস্ত্রের প্রসিদ্ধ সংগ্ৰহকারের তদনুরূপ ব্যবস্থা দিয়াছেন। এ স্থলে পুনরায় স্মরণ দেওয়াইতেছি যে স্মৃতিতে যে২ স্থানে ব্ৰাহ্মণের বিষয়ে মদ্যপানের নিষেধ কহিয়াছেন সে অবিহিত কামত মদ্যপার হয়, যেহেতু (নি মাংসভক্ষণে দোষো ন মদ্যে ন চ মৈথুনে) ইত্যাদি মম্বাদিস্মৃতিতে র্তাহারা বিহিত মদ্যপানে দোষাভাব স্বয়ং কহিয়াছেন । ২১৯ পৃষ্ঠের ৭ পংক্তি অবধি ২২১ পৃষ্ঠের ৯ পংক্তি পৰ্য্যন্ত যাহা লিখিয়াছেন তাহার তাৎপৰ্য্য এই যে স্বপক্ষ কিম্বা বিপক্ষ শ্ৰীকালীশঙ্কর নামে এক ব্যক্তিকে ধৰ্ম্মসংহারকের পরাভাবের আশয়ে আমরা উত্থাপিত করিয়াছিলাম। তিনি বাগদেবতার গ্ৰীত্যৰ্থে স্মৃতিপুরাণাদি স্বরূপ অস্ত্ৰ শস্ত্রের দ্বারা ধৰ্ম্মসংহারক কতৃক আগত মাত্রেই নিহত হইলেন ; কিন্তু ধৰ্ম্মসংহারক কি ২ উপায়ে আর কি ২ বচন রূপ শস্ত্ৰে ভঁাহাকে নিহত করিলেন তাহার বর্ণও লিখেন না, বিবরণ যদি লিখিতেন। তবে বিবেচনা করা যাইত যে তঁহাদের কোন পক্ষে জয় পরাজয় হইয়াছে ৷ ২২১ পৃষ্ঠের ১০ পংক্তিতে শৈবশক্তি গ্রহণের অপ্ৰমাণ্যের উদ্দেশে লিখেন যে