পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চারি প্রশ্নের উত্তর s হও তবে সে ব্যক্তিকে কি কহা উচিত হয়। বিশেষতে দুই স্বধৰ্ম্মচু্যতের মধ্যে একজন আপনার ত্রুটি স্বীকার ও আপনাকে সাপরাধ অঙ্গীকার করে ও দ্বিতীয় ব্যক্তি আপনাকে পবিত্র জানিয়া অন্যকে প্ৰগলভ্যপূর্বক স্বধৰ্ম্মরাহিত্য দোষ দেখাইয়া ত্যজ্য কহে তবে ঐ দ্বিতীয় ব্যক্তির প্রতি কি শব্দ প্রয়োগ কৰ্ত্তব্য হয়৷ যদি ধৰ্ম্ম[৫]সংস্থাপনাকাজক্ষী কহেন যে পূর্বোক্ত বচন সকল অর্থাৎ শূদ্রান্ন গ্ৰহণ ইত্যাদি দোষে জ্বলন্ত ব্ৰাহ্মণও পতিত হয়। ও সূৰ্য্যোদয়ানন্তর মুখ প্ৰক্ষালন করিলে সে পাপিষ্ঠের পূজাধিকার থাকে না। আর আসনে পা রাখিয়া ভোজন করিলে গোমাংস ভোজন হয়। আর বাম হস্তে পাত্ৰ উঠাইয়া জল পান করিলে সুরাপান হয়। এ সকল নিন্দার্থবাদ মাত্র ইহার তাৎপৰ্য্য এই যে শূদ্রান্ন গ্ৰহণাদি করিবেক না। তবে ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাজক্ষী যোগবশিষ্ঠের এই বচন যে সংসার বিষয়ে আসক্ত হইয়া আপনাকে ব্ৰহ্মজ্ঞানী কহে সে অন্ত্যজের ন্যায় ত্যজ্য হয়। তাহাকে নিন্দার্থবাদ না কহিয়া কি প্রকারে যথার্থবাদ কহিতে পারেন । সংসারের বিষয়ে আসক্ত হওয়া এবং আপনাকে ব্ৰহ্মজ্ঞানী অঙ্গীকার করা জ্ঞাননিষ্ঠের জন্যে নিষিদ্ধ হয় ইহা কেন না। ওই বচনের তাৎপৰ্য্য হয়। এ কথা যদি কহেন যে পূর্ব ২ বচনকে নিন্দার্থবাদ না কহিলে তঁাহার নিজের নিস্তার হয় না। আর যোগবশিষ্ঠের বচনকে যথার্থবাদ না মানিলে জ্ঞানীদের প্রতি নিন্দা করিবার উপায় দেখেন না। তবে তিনি ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাজক্ষী সুতরাং আমরা কি কহিতে পারি। বস্তুতঃ যোগবশিষ্ঠের যে শ্লোক ধৰ্ম্মসংস্থাপনাকাজক্ষী লিখিয়াছেন তাহার অর্থ বিশেষরূপে সেই যোগবশিষ্ঠের শ্লোকান্তরের দ্বারা অবগত হওয়া উচিত তথাচ যোগবশিষ্ঠে “বহির্ব্যাপারসংরম্ভে হৃদি সংকল্পবৰ্জিতঃ । কৰ্ত্ত বহিরাকৰ্ত্তান্তরেবং বিহর রাঘব”। অর্থাৎ [৬] বাহােতে ব্যাপারবিশিষ্ট মনেতে সংকল্প ত্যাগ আর বাহিরেতে আপনাকে কৰ্ত্তা দেখাইয়া ও মনেতে অকৰ্ত্তা জানিয়া হে রামচন্দ্ৰ লোকযাত্ৰা নির্বাহ কর। অতএব জ্ঞানাবলম্বী অথচ বিষয়ব্যাপারযুক্ত ব্যক্তিকে দেখিয়া দুই অনুভব হইতে পারে এক এই যে মনেতে আসক্ত হইয়া ব্যাপার করিতেছে দ্বিতীয় এই যে আসক্তি ত্যাগপূর্বক ব্যাপার করিতেছে যেহেতু মনের যথার্থ ভাব পরমেশ্বরই জানেন তাহাতে দুর্জন ও খাল ব্যক্তিরা বিরুদ্ধ পক্ষকেই গ্ৰহণ করিয়া থাকেন অর্থাৎ কহিবেন যে আসক্তিপূর্বকই বিষয় করিতেছে আর সজ্জন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উত্তম পক্ষকেই গ্ৰহণ করেন। অর্থাৎ কহিবেন যে এ ব্যক্তি জ্ঞান সাধনে প্ৰবৃত্ত হইয়াছে তবে বুঝি যে আসক্তি ত্যাগপূর্বকই বিষয় করিতেছে যেমন জনকাদির রাজ্য শাসন ও শত্ৰু দমন ইত্যাদি বিষয়ব্যাপার দেখিয়া দুৰ্জনেরা তাহাদিগকে বিষয়াসক্ত R