পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ কথা ; পুরুষ-যজ্ঞ יכ\כל আবাহন করিয়া থাকি। ছান্দোগ্য উপনিষদ জোরের সহিত বলিতেছেন, “গায়ত্রী বৈ ইদং সৰ্ব্বং ভূতং যদিদং কিঞ্চ ; বাগ বৈ গায়ত্রী, বাগ বৈ ইদং সৰ্ব্বং ভূতং গায়তি চ ত্রায়তে চ”—সমস্ত ভূত যাহ। কিছু বিদ্যমান, এ সমস্তই গায়ত্রী ; গায়ত্রীই বাকৃ, বাকৃই সমস্ত ভূত ; গায়ত্রীই বাকৃরূপে সকল ভূতের নাম দেন এবং সকলকেই রক্ষা করেন। গায়ত্রী ছন্দের যে মন্ত্রটিকে আমরা বেদবাক্যের সার মন্ত্র বলিয়া গ্রহণ করিয়াছি, সেই মন্ত্রের দেবতা সবিতা, এই জন্য উহাকে সাবিত্রী মন্ত্র বলা হয় । এই জন্য গায়ত্রীর নামাস্তর সাবিত্রী । বিশ্বামিত্ৰ ঋষি উহা প্রচার করিয়াছিলেন । সম্ভবতঃ তদবধি আজি পর্য্যন্ত উহাই বেদের শ্রেষ্ঠ মন্ত্ররূপে গৃহীত হইয়া আসিতেছে । বেদপন্থী সমাজের প্রত্যেক বালক উপনয়নকালে আচার্য্যের নিকট এই মন্ত্র গ্রহণ করে এবং তদবধি যাবজ্জীবন এই মন্ত্রের জপে বাধ্য থাকে। বৃহদারণ্যক বলিতেছেন, —“স যামেব অমূং সাবিত্রীম্‌ অম্বাহ এব এষ সা”—সেই আচাৰ্য্য বালককে যে সাবিত্রী মন্ত্র দান করেন, সেই সাবিত্রী মন্ত্রই বিশেষত: গায়ত্রী। "এযা গায়ত্রী অধ্যাত্মং প্রতিষ্ঠিতা”—এই গায়ত্রী আত্মার উপরেই প্রতিষ্ঠিত। এই গায়ত্রীতে সমস্ত জগৎই প্রতিষ্ঠিত। বিষ্ণুর ত্রিপাদ দ্বারা জগৎ আক্রমণের উপাখ্যান ঋকৃসংহিতামধ্যে পুনঃ পুনঃ আছে। উহার গোড়ার তাৎপৰ্য্য যাহাই হউক, বিষ্ণুর তিন পদ এই লোকত্রয়কে বা সমস্ত প্রত্যক্ষ জগৎকে ব্যাপিয়া আছে, এই তাৎপর্য্য এখন দাড়াইয়া গিয়াছে। এই তিন পদ ব্যতীত বিষ্ণুর আর একটি চতুর্থ পদের বা পরম পদের কথা ভূয়োভূয়: শুনা যায়, যে পদ পরম ব্যোমে অবস্থিত, অর্থাৎ প্রত্যক্ষের অতীত, ইন্দ্রিয়ের অতীত লোকে বিদ্যমান। এইরূপে ব্ৰহ্মরূপী বিষ্ণু চতুষ্পদ ! গায়ত্রী ছন্দের কিন্তু তিনটি মাত্র চরণ ; গায়ত্রীর ব্রহ্মরূপ দৃঢ় করিবার জন্য বৃহদারণ্যক বলিতেছেন—ভূমি, অস্তরিক্ষ এবং দ্ব্যলোক ইহাই গায়ত্রীর প্রথম পদ ; ঋকৃ, যজুঃ, সাম, ইহাই গায়ত্রীর দ্বিতীয় পদ ; প্রাণ, অপান, ব্যান, ইহাই গায়ত্রীয় তৃতীয় পদ ; কিন্তু ইহার উপরেও আর একটি তুরীয় বা চতুর্থ পদ আছে, যাহা “পরোরজা” অর্থাৎ প্রত্যক্ষের অতীত। এই বাগ দেবতার ব্রহ্মস্বরূপত্ব সম্বন্ধে যদি এখনও আপনাদের সন্দেহ থাকে, তাহা হইলে ঋগ্বেদসংহিতার দশম মণ্ডল হইতে একটি স্থত্ত আপনাদিগকে আমি শুনাইতে চাহি। এই স্থজটির নাম দেবীস্বত্ত। আজি পৰ্য্যস্ত শরৎকালের দেবীপূজায় উহ আমাদের গৃহে গৃহে পঠিত হয়। ফলে আমাদের দেবীপূজা বা শক্তিপূজা ঐ স্থত্তটির উপর প্রতিষ্ঠিত। ঐ স্থক্তের ঋষির নাম বাক । তিনি অন্ত,ণ ঋষির কন্যারূপে কল্পিত হইয়াছেন । তিনি যিনিই হউন, খ্ৰীষ্টের স্বসমাচার-প্রচারক জোহনের বহু শত বৎসর পূর্বে, এমন কি, হীরাক্লিটাসের বহু শত বৎসর পূৰ্ব্বে তিনি আপনাকে বাকৃ অথবা শব্দব্ৰহ্মরূপে পরিচয় দিয়াছেন। আমাদের এই পুরাতনী ঋষিকন্যা, বাকু জোরের সহিত বলিতেছেন— অহং রুদ্রেভিৰ্বমুভিশ্চরামি, অহম আদিত্যৈরুত বিশ্বদেবৈঃ, অহং মিত্রাবকশোভা বিভমি,