পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> o. o রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র হইতেই আছি ; এই বলিয়া কুৰ্ম্ম সহস্রশীর্ষ সহস্রাক্ষ সহস্রপাৎ পুরুষের মূৰ্ত্তি ধরিল। এই তিনটি বিশেষণেই আপনারা ইহাকে চিনিতে পারিবেন ; ইনিই পুরুষস্থক্তের বিরাট পুরুষ । এইখানে নারায়ণের কুৰ্ম্মাবতারের মূলও পাইবেন । প্রজাপতি বলিলেন, তাহা হইলে তুমিই জগৎ স্বষ্টি কর । তখন সেই পুরুষ অঞ্জলি ভরিয়া জল লইয়৷ এদিকে ওদিকে ছিটাইতে লাগিলেন। এক এক দিকে এক এক দেবতা জন্মিল—আদিত্য, অগ্নি, বায়ু, ইন্দ্র প্রভৃতি দেবতা জন্মিল। সেই জলের বিন্দু হইতে পিতৃগণ, মনুষ্যগণ, গন্ধৰ্ব্ব, অপারা, অস্কর, রাক্ষস প্রভৃতি জন্মিল। ফলে ঐ ষে কুৰ্ম্মরূপী পুরুষ, তিনি পূৰ্ব্ব হইতেই প্রজাপতির মধ্যেই ছিলেন, প্রজাপতির স্বষ্টিকামনার পর তিনি বাহিরে আসিলেন মাত্র । প্রজাপতিই জগৎ স্বষ্টি করিয়া সেই জগতে অতুপ্রবিষ্ট হইলেন। তৈত্তিরীয় আরণ্যক উপসংহারে বলিতেছেন,—“বিধায় ভূতানি বিধায় লোকান, বিধায় সৰ্ব্বান প্রদিশো দিশশ্চ, প্রজাপতিঃ প্রথমজা ঋতস্ত, আত্মন আত্মানম অভিসংবিবেশ”—সত্যস্বরূপ অগ্রজন্ম প্রজাপতি ভূতসকল ও লোকসকল বিধান করিয়া, দিক্‌বিদিকের স্বষ্টি করিয়া নিজেই নিজের স্বষ্টির মধ্যে অনুপ্রবেশ করিলেন। ইংরেজীতে বলিলে তিনি বিশ্বজগৎকে transcend করিয়াও তাহাতে immanent af as আরুণকেতুক নামক অগ্নি চয়নের অনুষ্ঠান প্রজাপতি কর্তৃক সেই জগৎহষ্টি ব্যাপারের অনুকরণ । উত্তরবেদির নীচে যে জল ঢালা হয়, উহাই সেই স্বষ্টির পূৰ্ব্বতন কারণসলিল ; পদ্মপত্রস্থ বা সরসিজাসনসন্নিবিষ্ট হিরন্ময়বপুঃ পুরুষ কারণসলিলশায়ী নারায়ণ ; পাশ্বে কাছিমটি কুৰ্ম্মরূপী বিরাটু পুরুষ । এই বিরাটু পুরুষ স্বদেহ দিয়া জগৎ স্থা করিয়াছেন, ইহাই তাহার অনুষ্ঠিত পুরুষ-যজ্ঞ । চিতির মধ্যে উত্তরবেদিতে যে অগ্নির প্রতিষ্ঠা হয়, ঐ অগ্নিই প্রজাপতির তৈজস রূপ ; বৈশ্বানর অগ্নিরূপে তিনি জগতের যাবতীয় কৰ্ম্মের প্রেরণা করিতেছেন । অগ্নির চারি দিকে ইট বসাইয়া যে চিতি নিৰ্ম্মিত হয়, তাহ প্রজাপতির স্কুল দেহ—বিশ্বজগৎক্লপ স্থল দেহ ; ইষ্টকগুলি সেই দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ,–কুৰ্ম্মপুরুষনিক্ষিপ্ত কারণ-সলিলের বিন্দু হইতে উৎপন্ন জাগতিক লোকসকল বা ভূতসকল। অরুণকেতু ঋষিগণের নামানুসারে ঐ অগ্নির নাম আরুণকেতুক অগ্নি। ঐ অগ্নিতে যে আহুতি দেওয়া হয়, তাহাতে পুরুষ-যজ্ঞেরই অনুষ্ঠান ঘটে । শতপথ ব্রাহ্মণ এই অগ্নি চয়নের থিয়োরি আরও ফলাইয়াছেন । ঐ অগ্নি বৈশ্বানর অগ্নি—জগতের যাবতীয় কৰ্ম্মের বা যাবতীয় ঘটনার প্রেরক । ঐ চিতি প্রজাপতির স্থল দেহ—উহ! প্রজাপতির দেহ বটে ; শতপথ বলেন, উহা যজমানের দেহও বটে—কেন না, যজমান প্রজাপতি হইতে অভিন্ন। উহ! আবার সংবৎসরের দেহ, অতএব কালস্বরূপ ; প্রজাপতিই সংবৎসর, সংবৎসরই কাল। অগ্নিচয়নানুষ্ঠান সংবৎসর ধরিয়া চলে। প্রজাপতির স্থটিক কাল ধ্যাপিয়া চলিতেছে ; উহার আদি নাই, অস্ত নাই। চিতিটিকে :খেন পার্থীর আকার দেওয়া হইত। এই শ্বেন পাখী উৰ্দ্ধলোক উঠিতে সমর্থ ; আপনাদের মনে থাকিবে, এই শু্যেন পার্থী একদা কোন উৰ্দ্ধলোকে হইতে সোমরূপী অমৃত আনয়ন করিয়াছিল। শতপথ ব্রাহ্মণ , বুঝাইতেছেন,