পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা ; পুরুষ-যজ্ঞ ' جه د afāorifoss-“Nature does not work by moral rules. Nature, red in tooth and claw, does by system all that good men by system avoid”. প্রত্যেক মনুষ্য-পশু এইরূপে জগৎকে চিবাইয়া আত্মসাৎ করিতে চাহিতেছি ; নিঃশেষে ভোগ করিতে চাহিতেছে ; ইহাই তাহার নৈসর্গিক প্রকৃতি । কিন্তু মনুষ্য-পশুর ভিতরে আর একটা মানুষ গোপনে বসিয়া আছে, সে কেবলই না—না—না—না বলিতেছে । মানুষ বিরোধের দ্বারা ভোগের পথে চলিতে গেলেই সেই মাকুযটা প্রবৃত্তির মুখে লাগাম দিয়া কেবলই বলিতে থাকে, না—না— না—না, ও পথে না—ও পথে না । ইনিই সেই আসল মানুষ প্রজাপতি, যিনি চরতি গর্ভে অন্তঃ । ইনি বলিতেছেন, আমি বিশ্বযজ্ঞে আমাকে দান করিয়া আপনাকে বড় করিয়াছি—জগৎকে চিবাইয়া আত্মসাৎ না করিয়া, আপনাকে ছড়াইয়া জগতে বিলাইয়া দিয়াছি, আপনাকে এইরূপে জগতে সম্প্রসারণ করিয়া বড় হইয়াছি । ইহা ত্যাগের পথ এবং ত্যাগের দ্বারা মিলনের পথ । এইরূপ উন্ট পথে আপনাকে পরে মিশাইয়া পরকে আমি আত্মস্থ ও আত্মসাৎ করিয়াছি— আমার নিকটে পর নাই—এইরূপেই আমি পরের বন্ধন হইতে মুক্ত হইয়া স্বাতন্ত্র্য প|ইয়াছি । ইহাই খাটি Individualism ; কেন না, সমস্ত পর আত্মস্থ হইয়া গেলে পরাধীন পরবশ হইবার সম্ভাবনা পৰ্য্যন্ত থাকে না। কিন্তু এই মুক্তিলাভের পূৰ্ব্বে বন্ধন আবশ্যক—বিশ্বজগতের যাবতীয় দ্রব্যের সহিত মিলনের সম্বন্ধ পাতাইয়া সহস্র বন্ধনে আপনাকে জড়াইতে হইবে—যমনিয়মের সহস্র বন্ধনে ভিতরের নৈসর্গিক পশুটাকে বধিয়া ফেলিতে হইবে—সংসারের যুপস্তম্ভে সেই পশুটাকে বদ্ধ করিয়৷ তাহাকে পুরুষ-যজ্ঞে আহুতি দিতে হইবে। মানবজীবনের থিয়োরি সম্পর্কে বেদপন্থীর সহিত খ্ৰীষ্টপন্থীর গোড়ায় আশ্চৰ্য্য মিল আছে, আপনাদিগকে দেখাইয়াছি । ইউরোপের খ্ৰীষ্টানেরা কিন্তু মনুষ্য-জীবনকে দুইটা কুঠরিতে ভাগ করিয়া ফেলিয়াছেন ; একটা secular,temporal, আর একটা religious, spiritual—এবং এই দুই কুঠরির মধ্যে একটা দেওয়াল গাথিয়া ফেলিয়াছেন । সাবেক রোমানের জীবন ছিল একটা কুঠরিতে নিবদ্ধ ; খ্ৰীষ্টানের জীবন ছিল অন্য কুঠরিতে। খ্ৰীষ্টীয় সমাজ আত্মরক্ষার জন্য রোমান রাষ্ট্ৰতন্ত্রের আশ্রয় লইতে গিয়া এই বিরোধের স্বষ্টি করিয়া ফেলিয়াছেন এবং আজি তাহার ফল ভোগ করিতেছেন। ভুবনবিজয়োদ্যত ইসলামের জয়ধ্বজাকে পিরিনীসের ও-পারে ঠেলিয়া দিয়া চালাস মার্টেল খ্ৰীষ্টীয় সমাজকে রক্ষা করেন । ইহার ফলে রোমের বাবাজী পোপ যে দিন চালাস মাটেলের বংশধর বড় চালসের—শাল মেনের মাথায় রোমের কাইসারের মুকুট পরাইয়া রাষ্ট্ৰপালের সহিত ধৰ্ম্মপালের একটা অস্বাভাবিক সন্ধি স্থাপন করিলেন, সেই দিন এই বিরোধের বীজ বপন হয় ; উভয়ের মধ্যে সন্ধি টেকে নাই ; ফলে কিন্তু ইউরোপের ইতিহাসে হাজার বৎসর জুড়িয়া একটা মৰ্ম্মগত বিরোধ খ্ৰীষ্টপন্থীর জীবনের এক অংশকে অন্য অংশের প্রতিদ্বন্দ্বী করিয়া রাথিয়াছে। ইউরোপ আজ বালক বালিকার ও বৃদ্ধ বনিতার রুধিরের হ্রদে স্নান করিয়া সেই বিরোধ মিটাইবার চেষ্টা করিতেছে। ভোগমত্ত রতিকামের