পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা : পুরুষ-যজ্ঞ > > > সরস্বতীরূপে তিনি ব্রহ্মাবৰ্ত্তে বেদপন্থী সমাজের প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন । ভারতীরূপে তিনি ভারতবর্যের কুলদেবতা, বাগ দেবীরূপে তিনি ব্রহ্মরূপিণী। তিনি গায়ত্রীরূপে মৰ্ত্ত্যলোকে অমৃত আনিয়াছিলেন, সাবিত্রীরূপে আমাদের ধীশক্তির অদ্যাপি প্রচোদনা করিতেছেন। অগ্নিপত্নী স্বাহারূপে তিনি আমাদের জীবনযজ্ঞের যাবতীয় কৰ্ম্মকে আহুতিরূপে গ্রহণ করিতেছেন, ইন্দ্রপত্নী শচীরূপে তিনি সেই যজক্ৰতুর পরিচালনা করিতেছেন। তিনিই দেবমাতা অদিতি—স্বয়ং প্ৰজাপতি দক্ষ তাহাকে জন্ম দিয়াছেন । “অদিতিহি অজনিষ্ট দক্ষ যা দুহিতা তব, তাং দেব অন্বজায়ন্ত ভদ্রা অমৃতবন্ধবঃ,”—অদিতিই দক্ষ প্রজাপতির দুহিতা হইয়া জন্মিয়াছিলেন ; সেই অদিতি হইতেই ভদ্র ও অমৃতবন্ধু দেবগণ জন্মিয়াছেন । তাহারই নামান্তর দক্ষকন্যা সতী—যিনি প্রজাপতির যজ্ঞে আপনাকে উৎসর্গ করিয়াছিলেন ; তাহার যজ্ঞোৎহষ্ট দেহ নারায়ণচক্রে শত খণ্ডে খণ্ডিত হইয়া কামরূপ হইতে হিঙ্গলাজ, জালন্ধর হইতে কন্যাকুমারী পর্য্যন্ত ভারতভূমির দেহে পরিণত হইয়াছে। অশ্বক্রাস্তা, রথক্রাস্তা, বিষ্ণুক্রাস্ত সেই ভূমি মহাবিষ্ণুর ত্রিপাদচ্ছায়ায় আক্রান্ত রহিয়াছে। ভারতভূমির প্রত্যেক ধূলিকণায় চক্ৰচ্ছিন্ন সতীদেহের বা হিমবৎকন্যা পাৰ্ব্বতীর দেহের পরমাণু প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে ; সেই ধুলি-উৎপন্ন প্রত্যেক ধান্যশীর্ষে ও যবশীর্ষে ইড়ারূপ পরমায়ের অমৃতরস সঞ্চিত আছে। বিষ্ণুরূপী যজ্ঞপুরুষে অর্পণের পর, পঞ্চ মহাযজ্ঞে যাবতীয় ভূতে অর্পণের পর হবিশেষরূপে সেই ইড়াভোজন মাত্রে আমরা অধিকারী রহিয়াছি। এই সৰ্ব্বদেবময়ী মহতী দেবতাকে সম্বোধন করিয়া আমরা অকুতোভয়ে বলিতে পারি ;– তং হি দুর্গা দশপ্রহরণধারিণী কমলা কমলদলবিহারিণী বাণী বিদ্যাদায়িনী নামামি ত্বাম্— বন্দে মাতরম্ ।