পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা : যজ্ঞ—অগ্ন্যাধান ও অগ্নিহোত্র * হইবে । বিজ্ঞান-বিদ্যার পক্ষে নান্য: পস্থা বিদ্যতে অয়নায় । উহা সংশয়ের পথ, দ্বৈধের পথ। অথচ উহাই এক মাত্র পথ । গোড়া খ্ৰীষ্টানকে যদি বলা যায় যে, তাহাদের বড়দিনের উৎসবের সহিত যীশুখ্ৰীষ্টের জন্মের কোনও সম্পর্ক নাই, উহা খ্ৰীষ্টানের বিশিষ্ট উৎসব নহে, মনুষ্যসাধারণের উৎসব, তাহা হইলে তিনি হয়ত চটিয়া যাইবেন । র্তাহার আজন্ম বিশ্বাস যে, ঐ সময়েই খ্রষ্টের জন্ম হইয়াছিল এবং সেই বিশ্বাসের অনুরোধেই তিনি ঐ উৎসব অনুষ্ঠানে সমস্ত শ্রদ্ধা অনুরাগ অর্পণ করিয়াছিলেন। সেই বিশ্বাসের মূল শিথিল করিয়া দিলে তাহার ধৰ্ম্মজীবনের গ্রন্থি ও শিথিল হইয়া যাইবে । বৈজ্ঞানিকেরা সহস্র প্রমাণ উপস্থিত করিলেও তিনি ঐ বিশ্বাসকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়াইয়৷ থাকিবেন। ফলে Nto Conducts; উপর, কৰ্ম্মের উপর প্রজ্ঞার –Reasonএর প্রভুত্ব বড় অধিক নহে। সংস্কার এবং বিশ্বাস প্রকৃত পক্ষে মনুষ্য-জীবনের নিয়ামক। প্রজ্ঞা ভুল-ভ্রান্তি দেখাইয়া মানুষকে শাসনে আনিতে চায় বটে, সংযত করিতে চায় বটে, কিন্তু সৰ্ব্বতেভাবে কৃতকার্য্য হয় না । কৰ্ম্মপথে বাহির হইয়া মানুষ সহজে প্রজ্ঞার শাসন মানিতে চায় না। তাহার সমস্ত অন্তরাত্মা বিদ্রোহী হইয়া উঠে। বিজ্ঞান-বিদ্যার সহিত রিলিজনের যে একটা বিরোধ আছে, যে বিরোধ কখন মিটিবার নহে, তাহার মূল এইখানে। সামাজিক মকুম্ভের কৰ্ম্মের তাৎপৰ্য্য বুঝিতে হইলে এ কথাটাকে অবজ্ঞা করিলে চলিবে না। বিজ্ঞান-বিদ্যা যাহাই বলুন, মানুষ তাহার সংস্কারকে এবং বিশ্বাসকে আপনার ধাতুর সহিত, আপনার প্রকৃতির সহিত সমঞ্চস করিয়া বাধিয়। লয় এবং তদনুসারে কৰ্ম্ম করিয়া থাকে। অধিকাংশ সামাজিক অনুষ্ঠানের ইতিবৃত্ত জানা যায় না। অবৈজ্ঞানিক মানুষ তাহা জানিবার জন্য বিশেষ ব্যগ্রও নহে । কিন্তু সে প্রত্যেক অনুষ্ঠানের একটা মনগড়া তাৎপৰ্য্য আরোপ করিয়া সেইটাকেই অঁাকড়াইয়া থাকে। যে ব্যক্তির কল্পনার দৌড় নাই, সে অপরের প্রদত্ত অর্থ মানিয়া লইয়া তাহাকেই জড়াইয়৷ থাকে। র্যাহাদের কল্পনার দৌড় অধিক, র্তাহারা নানারূপ তাৎপর্য্যের আরোপ করেন এবং ইতর সাধারণে সেই সকল আরোপিত তাৎপৰ্য্য গ্রহণ করে । আর্য্যজাতির যে শাখা ভারতবর্ষে প্রবেশ করিয়া বেদপন্থী সমাজ স্থাপন করিয়াছিলেন, তাহাদের প্রধান সামাজিক অনুষ্ঠানই ছিল যজ্ঞ । ইহার মূল অনুসন্ধান করিতে হইলে আরও প্রাচীন কালে যাইতে হয়। ভারতীয় এবং পারসীক ধৰ্ম্মগ্রন্থে তুলনামূলক অলোচনায় তাহ দেখিতে পাওয়া যায়। আর্য্যেতর অন্যান্য জাতির মধ্যেও যজ্ঞানুষ্ঠান কোনও-না-কোনও প্রকারে বিদ্যমান ছিল এবং এখনও আছে, তাহাও আপনার জানেন । এ-সব আপনাদের জানা কথা । ইহা লইয়া আমি আপনাদের সময় নষ্ট করিব না। ভারতবর্ষে বেদপন্থী সমাজে যজ্ঞাতুষ্ঠান কালক্রমে অত্যন্ত পল্লবিত হইয়৷ অত্যন্ত জটিলতা পাইয়াছিল। বহু অনুষ্ঠানের গোড়ার তাৎপৰ্য্য • লোকে ভুলিয়৷ গিয়াছিল। কিন্তু তাৎপৰ্য্য আরোপ করিবার লোকের অভাব ছিল না । কল্পনাশক্তিতে ভারতবর্ষের লোক কোনও দেশের লোকের নিকট কখনও হারি মানে নাই । আপনারা বেদের ব্রাহ্মণ-গ্রন্থের নাম শুনিয়া থাকিবেন। ব্রাহ্মণগ্রন্থগুলি মুখ্যতঃ যজ্ঞের