পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> 8 রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র বিবাহের পর স্থাপনীয় । যিনি অবিবাহিত, তাহার শ্রেীত অগ্নিস্থাপনে অধিকার নাই। বিবাহের পর গৃহস্থের নাম হইত গৃহপতি । বাড়ীর মধ্যে কোনও স্থানে অগ্নিশালা বা অগ্ন্যাগার স্থায়ীভাবে নিৰ্ম্মিত হইত। সপত্নীক গৃহস্থ সেই অগ্ন্যাগারমধ্যে যথাবিধি শ্রেীত অগ্নি স্থাপন করিতেন । এই অগ্নিপ্রতিষ্ঠা কৰ্ম্মের নাম অগ্ন্যাধান বা অগ্ন্যাধেয় । সংক্ষেপে উহার বিবরণ দিতেছি । আপনারা তিন অগ্নির নাম শুনিয়াছেন । গার্হপত্য, আহবনীয় এবং দক্ষিণাগ্নি । এই তিন অগ্নিই শ্রেীত অগ্নি। অগ্নিশালায় চতুষ্কোণ বেদি নিৰ্ম্মাণ করিয়া তাহার তিন দিকে তিন অগ্নির স্থাপন হইত। বেদির পশ্চিমে গার্হপত্যের স্থান, বেদির পূর্ব দিকে আহবনীয়ের স্থান, এবং দক্ষিণ দিকে দক্ষিণাগ্নির স্থান । মাটির বেড়া দিয়া অগ্নির স্থান নিৰ্ম্মিত হইত। গার্হপত্যের স্থান চতুভূজাকার, আহবনীয়ের স্থান বৃত্তকার, দক্ষিণাগ্নির স্থান অৰ্দ্ধবৃত্তাকার । তিনেরই ক্ষেত্রফল বা area সমান । এক হাত দীর্ঘ, এক হাত বিস্তৃত ক্ষেত্রের সমান। গার্হপত্য অগ্নি গৃহপতির অগ্নি ; উহা গৃহপতির প্রতিনিধিস্বরূপ। এই অগ্নিকে গৃহের কৰ্ত্ত বলা যাইতে পারে। আহবনীয় অগ্নি দেবতাদিগের অগ্নি ; উহাতেই দেবতাদের উদ্দেশে যাবতীয় দ্রব্যের আহুতি হয় । আহুতি হয় বলিয়াই নাম আহবনীয়। দেবতারা পূৰ্ব্ব দিকের অধিবাসী, দেবতাদের রাজা ইন্দ্র পূর্ব দিকের অধিপতি। আজিও আমরা পূৰ্ব্বমুখে বসিয়া দেবতাদের পূজা করি ; এই জন্য আহবনীয়ের স্থান পূর্ব দিকে। দক্ষিণ দিকৃ পিতৃগণের । পিতৃগণের রাজা যম দক্ষিণ দিকের অধিপতি। দক্ষিণাগ্নিতে পিতৃগণের উদ্দিষ্ট দ্রব্য দেওয়া হয় । অগ্ন্যাধান কৰ্ম্মের পূর্বদিনের দেহশুদ্ধির জন্য প্রায়শ্চিত্ত এবং বৃদ্ধিএাদ্ধাদি মাঙ্গলিক কাৰ্য্য করিয়া যজমান কৰ্ম্মের জন্য প্রস্তুত হন। অধ্যযু নামক ঋত্বিকৃ বিহিত স্থান হইতে আগুন আনিয়া গার্হপত্যের স্থানে রাখিয়া দেন। সন্ধ্যাকালে গৃহস্থ ও র্তাহার পত্নী অগ্নিশালায় প্রবেশ করিয়া সেইখানেই রাত্রিবাস করেন। এমন এক কাল ছিল, যখন কাঠে কাঠে ঘষিয়া আগুন করিতে হইত। যজ্ঞকৰ্ম্মের সেই প্রাচীন প্রথা পরিত্যক্ত হয় zitē | Retzş Tā survival in culture ; zifriff RF wyštza, fit-tqvē: সামাজিক ধৰ্ম্মকৰ্ম্মের অনুষ্ঠানে কোনও দেশেই লোকে প্রাচীন প্রথা সহজে ত্যাগ করিতে চাহে না । পুরাতনের মোহ কাটাইতে চায় না। শমীবৃক্ষের পরগাছারূপে যে অশ্বখ গাছ জন্মে, উহার কাঠ ঘষিলে সহজে আগুন জন্মে। ঐ কাঠে দুইখানি অরণি প্রস্তুত হয়। অরণিদ্বয় অগ্নিশালাতেই রাত্রির মত রক্ষিত হয়। গাৰ্হপত্যে নে আগুন রাখা হইয়াছিল, তাহাতে সমিৎ অর্থাৎ কাষ্ঠখণ্ড প্রক্ষেপ করিয়া জালাইয়া রাখিতে হয়। যজমান রাত্রি জাগিয়া উহ জালাইয়া রাখেন। প্রাতঃকালে অধ্যযু সেই অগ্নি নিবাইয়া দেন। স্থৰ্য্যোদয়ের পূৰ্ব্বে অরণি ঘর্ষণের দ্বারা নূতন আগুন উৎপাদন করিতে হয়। এই কৰ্ম্মের নাম অগ্নিমন্থন । অগ্নিমস্থনের পূৰ্ব্বে একটি ঘোড়া আনিয়া রাখিতে হয । যজমানু একখানি অরণি ধরিয়া বসেন । দ্বিতীয় অরণি দ্বারা প্রথমে তাহার পত্নী, পরে অধ্বযু অগ্নি উৎপাদন করেন। মাটির খাপরায় গোবরের ঘুটা রাখিয়া তাহাতেই সেই মন্থোনোৎপন্ন অগ্নি গ্রহণ করা হয়। যজমান উহাতে ফু দিয়া জালাইয়া দেন। অধ্যযু সেই আগুনে যঞ্জীয় কাঠ জালাইয়া গার্হপত্যে রাখেন।