পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেন্দ্রস্থনদর রচনাসমগ্র ماء لا একচেটিয়া নহে ; অন্যান্য দেশে ও অন্যান্য সমাজে ও অগ্নির দেবত্ব স্বীকৃত হয়। অগ্নিমুখেই যে দেবতারা খাদ্য গ্রহণ করেন, তাহা অম্বুমান করিবার প্রচুর কারণ আছে। দেবতারা সূক্ষ্মশরীরী, তাহারা স্কুল অন্ন গ্রহণ করিতে পারেন না। কোনও দ্রব্য আগুনে ফেলিলে তাহ ধূমে, বাম্পে, বায়ুতে পরিণত হয়। এইরূপে সুন্ধত পাইলে উহা দেবতাদের স্থম্মদেহের উপযোগী হয় । দেবতারা উদ্ধলোকে বাস করেন । অগ্নিশিখা স্বভাবতঃ উৰ্দ্ধমুখী, উহা ধূম এবং বাষ্পরূপে উৰ্দ্ধমুখে উঠিয়া দেবতাদের খাদ্য দেবতা দিগকে পৌছাইয়া দেয়। বিশেষত: আর্য্যজাতির মধ্যে অগ্নির মাহাত্ম্য বিশেষ বলবৎ ছিল । পণ্ডিতেরা হয়ত বলিবেন, আর্য্যজাতি এক কালে শীতপ্রধান দেশের অধিবাসী ছিলেন ; সেই জন্য র্তাহাদের নিকট অগ্নির এত মাহাত্ম্য । বাল গঙ্গাধর টিলক মহাশয় হয়ত বলিবেন, এই অগ্নিমাহাত্ম্য আর্য্যজাতির সুমেরুপ্রদেশ বাসেরই সমর্থন করিতেছে। যেখানে ছয় মাস ধরিয়া রাত্রি, সেইখানে আগুনের সমাদর এবং চব্বিশ ঘণ্টা আগুন জালিয়া রাখার বিশেষ ব্যবস্থা না করিলে চলিবে কেন ? কাস্পীয় সাগরের তীরে বহু প্রদেশে কেরোসীন তেলের আকর আছে। ভূগর্ভ হইতে সৰ্ব্বদা কেরোসীনের বাষ্প উদগত হয় এবং আপনা হইতে জলিয়া উঠে । সে দেশের লোকের পক্ষে অগ্নিপূজা স্বাভাবিক। এখনও সেই দেশে অগ্নি মন্দির দেখা যায়। র্যাহারা মনে করেন, আর্য্যজাতি এক কালে মধ্য এশিয়ায় বাস করিতেন, তাহারা এই অল্পমানে খুসী হইবেন । গ্রীক এবং রোমানেরা আমাদের জ্ঞাতি ছিলেন ; তাহাদের মধ্যেও অগ্নিপূজার প্রচলন ছিল, তাহা আপনারা জানেন। প্রাচীন গ্রীকদের অগ্নিদেবতার নাম Hestia । প্রত্যেক গ্রীক গৃহস্থের ঘরে ঘরে অগ্নিশালা থাকিত। সেখানে অগ্নি রক্ষিত হইতেন ও পূজা পাইতেন। গ্রীকেরা যখন নিজের দেশ ছাড়িয়া দেশান্তরে উপনিবেশ স্থাপন করিতে যাইতেন, তখন আপন গৃহস্থিত অগ্নি সঙ্গে লইয়া যাইতেন। এইরূপে উপনিবেশের সহিত মাতৃভূমির সম্বন্ধ পাকা হইত। গ্রীকদের মধ্যে যিনি Hestia, রোমানদের মধ্যে র্তাহার নাম Vesta ; Vesta দেবতা রোম নগরের, রোমের রাষ্ট্রের রক্ষাকত্রী ছিলেন। সাধারণ স্থানে তিনি পূজা পাইতেন। কয়েক জন কুমারী অগ্নিরক্ষার্থ নিযুক্ত হইতেন। তাহাদিগকে কৌমার ধৰ্ম্ম পালন করিতে হইত। র্তাহাদের কতকগুলি বিশেষ অধিকার ছিল । সৰ্বসাধারণের নিকট তাহারা বিশেষ সম্মান পাইতেন। পারস্তবাসী ইরাণীদের কথা বলা অনাবশু্যক। প্রাচীন ইরাণী সমাজের সহিত প্রাচীন বেদপন্থী সমাজের বিশেষ পার্থক্য ছিল না। র্তাহার। আমাদের মত যজ্ঞানুষ্ঠান করিতেন, ইহা আপনারা সকলেই জানেন । * অগ্ন্যাধান অনুষ্ঠানে একটি ঘোড়ার দরকার হইত, ইহা বলিয়াছি। এই ঘোড়াটির তাৎপৰ্য্য কি, বলা কঠিন। মানবতত্ত্ববিৎ পণ্ডিতেরা ইহার কি তাৎপৰ্য্য বাহির করিবেন, তা জানি না। শুনিতে পাই, ঘোড়ার সহিত আৰ্য্যজাতির একটি বিশেষ সম্বন্ধ ছিল । আর্য্যজাতি না কি প্রথমে বুনো ঘোড়াকে পোষ মানাইয়া মানুষের ব্যবহার্য্য করিয়াছিলেন, domesticate করিয়াছিলেন। মধ্যএশিয়ায় ক্যাস্পীয় এবং আরাল সাগরের তীরবর্তী steppes জমিতে প্রচুর ঘাস হয়। এখনও হয়, পূর্বে আরও হইত। সেই জমি অশ্বপালনেয় পক্ষে বিশেষভাবে উপযোগী | আর্য্যগণ ঘোড়ায় চড়িয়া দ্বিগ্বিজয়ে