পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা : যজ্ঞ—অগ্ন্যাধান ও অগ্নিহোত্র ૨ છે সেই কয়েকটি প্রশ্ন আমি উপস্থাপিত করিয়৷ ক্ষাস্ত থাকিব । আচাৰ্য্যগুহে বিদ্যালাভ করিয়া ঘরে না ফিরিলে গৃহধৰ্ম্মে অধিকার জন্মিত না এবং পত্নীগ্রহণে অধিকার জন্মিত না, ইহা নিশ্চয়। পত্নী গ্রহণ না করিলে অগ্ন্যাধানে অধিকার জন্মিত না, এবং অগ্নিহোত্ৰাদি শ্রেীত কৰ্ম্মে অধিকার জন্মিত না। কিন্তু বিবাহ করিলেই অগ্ন্যাধান করিতেই হইবে, এরূপ নিয়ম ছিল কি না ? পিতা বৰ্ত্তমানে পুত্র ঘরে ফিরিয়া বিবাহ করিলেন। বিবাহের পর তিনি আপনার জন্য অগ্ন্যাধানে বাধ্য ছিলেন কি না ? যদি ধরা যায় যে, পুত্রও পিতৃগৃহে থাকিয়া নিজের জন্য পৃথক অগ্নি স্থাপন করিতেন, তাহা হইলে একই গৃহমধ্যে একাধিক অগ্নিশালার প্রয়োজন হয়। একই গৃহে একাধিক অগ্নিশালা থাকিতে পারিত কি না ? তাহ সম্ভব হইলে আমি উপরে যে থিয়োরি দিলাম, তৎসম্বন্ধে ব্যাঘাত ঘটে ৷ হইতে পারে, বিবাহিত পুত্রের পিতা বৰ্ত্তমানে স্বতন্ত্র অগ্ন্যাধানের কোনও প্রয়োজন ছিল না । হয়ত পিতা বর্তমানে তাহাকে কোন শ্রেীত কৰ্ম্মই করিতে হইত না। যদি বা কোনও কৰ্ম্ম করিতে হইত, তাহা পিতার অনুমতি লইয়া পিতার অগ্নিতেই সম্পাদন করিতে পারিতেন। পুত্র পিতার প্রতিনিধিরূপে পিতার অগ্নিতে অগ্নিহোত্র করিবেন, পিতা প্রবাসে থাকিলে অগ্নিহোত্র বিষয়ে তাহার প্রতিনিধিত্ব করিবেন, এরূপ যখন স্পষ্ট বিধান আছে, তখন মনে করা যাইতে পারে, পুত্র বিবাহিত হইলেও তাহার পক্ষে পৃথক অগ্নি স্থাপন না করিলেও চলিতে পারিত। তাহার পক্ষে পৃথকৃ শ্রেীত কৰ্ম্ম না করিলেও চলিতে পারিত। আবার নিতান্তই যদি তিনি পৃথকৃ অগ্নি স্থাপন করিয়া তাহাতে পৃথক ভাবে শ্রেীত কৰ্ম্ম করিতে ইচ্ছা করিতেন, তাহা হইলে পিতৃগৃহ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া পৃথক গৃহে পৃথকৃ গৃহস্থালী পাতিতেন। সেইখানে অগ্নিশালা নিৰ্ম্মাণ করিয়া আপনার জন্য অগ্নি-স্থাপনা করিতেন। পিতা বর্তমানে পিতৃগৃহ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া এইরূপে পৃথকৃ গৃহস্থালী পাতা সে কালে প্রথা ছিল কি না, এবং ঐ প্রথা বিধিসঙ্গত ছিল কি না, তাহা আমি জানি না। হিন্দু আইনে র্যাহারা পারদর্শী, তাহারা এ প্রশ্নের উত্তর দিবেন। বর্তমান কালে আমাদের সমাজে একান্নবৰ্ত্তী প্রথা প্রচলিত আছে । যে কালের কথা আমি কহিতেছি, সে কালে এরূপ একান্নবর্তী গৃহস্থালী কিরূপে প্রচলিত ছিল, সে প্রশ্ন এই সঙ্গে উপস্থিত হয় । পিতা বর্তমানে পুত্রগণ র্তাহার অধীন হইয়। র্তাহার সমীপেই বাস করিবেন এবং তাহার অধীন থাকিবেন ; পিতার দেহাস্তের পর তাহার ইচ্ছা করিলে পৈতৃক সম্পত্তি ভাগ করিয়া লইয়া প্রত্যেকে পৃথকৃ গৃহস্থালী স্থাপন করিতে পারেন ; একান্নবর্তী পরিবারের ইহাই নিয়ম । আপনার! patriarchal familyর—পিতৃতন্ত্র গৃহস্থালীর কথা জানেন । এই প্রথামতে গৃহপতি পিতাই পুত্ৰগণের দণ্ডমুণ্ডের কৰ্ত্ত। পুত্রগণ র্তাহার তৃত্য মাত্র ; সৰ্ব্বতোভাবে অধীন ভৃত্য মাত্র। পিতা ইচ্ছা করিলে পুত্রদের বধদগু পৰ্য্যন্ত দিতে পারেন। আমাদের প্রাচীন সমাজে পিতার এতটা ক্ষমতা বোধ করি ছিল না । পুত্র জন্মিবা মাত্র পৈতৃক সম্পত্তিতে তাহার একটা ভাবী স্বত্ব জন্মিত। পিতা সেই স্বত্বে তাহাকে বঞ্চিত করিতে পারিতেন না। কেন না, পৈতৃক সম্পত্তি র্তাহার নিজস্ব নহে, উহা সেই গৃহের সম্পত্তি ; তিনি তাহার রক্ষাকৰ্ত্ত—trustee মাত্র। কাজেই পুত্ৰগণের উপর পিতার