পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা : ইষ্টিষাগ ও পশুযাগ ২৩ অৰ্দ্ধবৃত্তাকার করিয়া লণ্ডয়া যায়। চতুষ্কোণ খোলা মাঝে রাখিয়া তাহার চারি পাশে কোণহীন খোলাগুলি সাজাইয়া বসাইতে হয় ; মাঝে যেন ফাক না থাকে। অগ্নির উদ্দিষ্ট প্রথম পুরোডাশের জন্য আটখানি খোলা এইরূপে সাজাইতে হয় ; ইহার নাম অষ্টকিপাল পুরোডাশ। অগ্নি ও সোমের উদ্দিষ্ট দ্বিতীয় পুরোডাশের জন্য এগারখানি খোলা সাজাইতে হয় ; ইহার নাম একাদশকপাল পুরোডাশ। গার্হপত্যের আগুনে খোলাগুলি তপ্ত করিয়া, তাহার উপরে সেই যবের বা চাউলের পিটুলি ঢালিয়া দিয়া গাহঁপত্যের অঙ্গারেই সেকিতে হয়। এইরূপে পুরোডাশ তৈয়ার হইলে তাহাতে ঘি মাখাইয়া বেদির উপরে যথাস্থানে রাখিয়া দিতে হয়। যথাকালে এই পুরোডাশ আহুতি দিতে হইবে। সমুদয় কৰ্ম্ম অধ্বযু স্বহস্তে সম্পাদন করেন। প্রত্যেক কৰ্ম্মের জন্য নিৰ্দ্দিষ্ট যজুর্মন্ত্র থাকে। প্রধান যাগের কথা বলিলাম। প্রধান যাগের পূর্বে এবং পরে কৰ্ম্মাঙ্গ-স্বরূপে আরও কতকগুলি অপ্রধান যাগ করিতে হয়। কতকগুলি হোমও করিতে হয়। যাগের সহিত হোমের পার্থক্য আছে । যাগকালে আহুতি দেন অধ্বযু্য ; কিন্তু মন্ত্র পাঠ করেন আর এক জন ঋত্বিক, র্তাহার নাম হোতা । হোতা দেবতা আহবান করিয়া মন্ত্র পাঠ করেন। মস্ত্রের পর বৌষটু শব্দ উচ্চারণ করেন, ইহার নাম বষট্রকার। বষট্রকারের সঙ্গে সঙ্গে অধ্বযু আহুতির দ্রব্য অগ্নিতে অর্পণ করেন। তাহাকে কোন ও মন্ত্র পডিতে হয় না । ইহারই নাম ষাগ । আর হোম অনেকটা সংক্ষিপ্ত ব্যাপার। ইহাতে হোতার দরকার হয় না। অধ্বযু অগ্নির পাশে বসিয়া নিজেই যজুর্মন্ত্র পাঠ করেন ; মন্ত্রের পর স্বাহা উচ্চারণ করেন । ইহার নাম স্বাহাকার । স্বাহাকারের সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিতে আহুতি দেন। ইহাই হইল হোম। পূর্ণমাস-যজ্ঞে প্রধান যাগের পূর্বে বা পরে যে সকল অপ্রধান যাগ বা হোম করিতে হইত, যথাক্রমে তাহার উল্লেখ করিব । পূর্ণমাস-যাগে চারি জন ঋত্বিকের প্রয়োজন হয়। প্রথম অধ্বযু ; পুরোডাশ প্রস্তুত করা হইতে আহুতি দান পর্য্যস্ত সমুদায় কাজই অধ্বযুরি । মুখ্যতঃ যজুর্যন্ত্র-সাহায্যে ইহাকে কাজ করিতে হইত ; এই জন্য ইনি যজুৰ্ব্বেদে অভিজ্ঞ । এই হিসাবে অধ্বযু্য ঋত্বিকৃগণের মধ্যে প্রধান । তিনি অধ্বরের অর্থাৎ যজ্ঞের যেন দেহ নিৰ্ম্মাণ করেন । দ্বিতীয় ঋত্বিকের নাম হোতা। ইনি মন্ত্র পড়িয়া আহুতির পূর্বে দেবতাকে আহবান করেন। হুেত শব্দ হে ধাতু হইতে উৎপন্ন। দেবতাকে আহবান করেন বলিয়া ইহার নাম হোতা। হোতার পাঠ্য অধিকাংশ মন্ত্ৰই ঋকৃমন্ত্র। এই জন্য হোতার ঋগ্বেদে বিশেষজ্ঞ হওয়া দরকার। ইষ্টিযাগে সাম গানের প্রয়োজন হয় না। সে জন্য উদগাতার বা অন্য সামগায়ী ঋত্বিকের দরকার হয় না। তৃতীয় ঋত্বিকের নাম ব্ৰহ্মা । ইনি অধ্বযু এবং হোতা উভয়েরই উপরে। উভয়ের কৰ্ম্ম পরিদর্শন করেন ; ভ্রাস্তি ঘটিলে সংশোধনের ব্যবস্থা দেন। চতুর্থ ঋত্বিকের নাম অগ্নীং , ইনি ব্রহ্মার সহকারী। এই চারি জন ঋত্বিকৃকে পূৰ্ব্ব হইতে নিমন্ত্রণ করিয়া আনিয়া পূর্ণমাস-যাগ আরম্ভ করিতে হয় । o যাগের পূর্বদিন পূৰ্ব্বাহের ক্রিয়৷ অম্বাধীন এবং অপরাহের ক্রিয়া ব্রতগ্রহণ। পূৰ্ব্বাহ্লে