পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র وئ R করিতে হয়, দেবহোতা অগ্নিকে ও সেইরূপ প্রবরণ করিতে হয়। যজমানের গোত্রের প্ৰবৰ্ত্তক প্রাচীন ঋষিদের দোহাই দিয়া ডাকিলে সেই ঋষিদিগের অগ্নি সেই ডাক শুনিতে পারেন। অতএব সেই ঋষিদিগের নামাকুসারে দেবহোতা অগ্নিকে ডাকিয়া, পরে সেই অগ্নিরই প্রতিনিধিস্বরূপে মানুষ হোতাকে বরণ করা হয়। এইরূপে নিয়োগ পাইয়া মান্তষ হোতা সেই পূৰ্বঋষিগণের অগ্নিকে আহবান করেন এবং সেই অগ্নিকেই মন্ত্রদ্ধাব দেবতা আহবানের জন্য অনুরোধ করেন। বরণান্তে হোতা বেদির উত্তরে স্বস্থানে আসন গ্রহণ করেন । এখন প্রকৃত পক্ষে যাগ আরম্ভ হয় । যাগ গুলির নাম একে একে করিব । ( ১ ) প্ৰযাজ যাগ, প্রধান যাগের পূৰ্ব্বে অনুষ্ঠিত হয় বলিয়া ইহার নাম প্রধাজ। আহুতির দ্রব্য আজ্য। অধ্যযু ঘৃতধারা দ্বারা আঘার হোম করিয়া পরে প্রষাজ যাগ করেন । পাচ দেবতার উদ্দেশে পাচটি আহুতি দেওয়া হয়। দেবতাদের নাম শুনিলে আপনার চমকিয়া উঠিবেন। এখনও আমরা বেদপন্থী বলিয়া পরিচয় দিই বটে ; কিন্তু এই দেবতাদের নাম একবারে ভুলিয়া গিয়াছি। প্রথম দেবতা সমিং ; দ্বিতীয় দেবতা তনুনপাৎ, অথবা যজমানের গোত্রভেদে নরাশংস ; তৃতীয় দেবতা ইড়: ; চতুর্থ দেবতা বহিঃ ; পঞ্চম দেবতা স্বাহাকার । ( ২ ) পঞ্চ প্রযাজের পর অগ্নির উদ্দেশে একবার এবং সোমের উদ্দেশে একবার অাজ্য আহুতি, ইহার নাম আজ্যভাগ দান । ( ৩ ) আজ্যভাগ দানের পর প্রধান যাগ । অগ্নির উদ্দেশে প্রথম পুরোডাশ, এবং তৎপরে অগ্নি ও সোমের উদ্দেশে দ্বিতীয় পুরোডাশ দান। দুইয়ের মাঝে অগ্নি ও সোমের উদ্দেশে একটু ঘৃতাহুতি দিতে হয় । উপাংশু অর্থাৎ অতুচ্চ স্বরে মন্ত্র পাঠ হয় বলিয়া এই ঘৃতাহুতির নাম উপাংশুযাগ । ( ৪ ) তৎপরে স্বিষ্টকুৎ যাগ । পুরোডাশ দুইখানির সমস্তটা আহুতি দিতে হয় না ; থানিকটা রাখিতে হয়। ইহারই কিয়দংশ কাটিয়া লইয়া অগ্নি স্বিষ্টরুতের উদ্দেশে দেওয়া হয়। অগ্নি স্বিষ্টকুৎ রুদ্রদেবতার মূৰ্ত্তি। এই রুদ্রদেবতাটিকে লোকে ভয় করিত। ইহার বাণকে সকলে ভয় করিত। এমন কি, স্পষ্ট করিয়া ইহার নাম উচ্চারণে সকলে সাহসী হইত না । উগ্র, ভীম, কপদী প্রভৃতি বিশেষণে ইহার স্বভাবের পরিচয় পাইবেন । ইহাকে খুলী রাখিবার জন্য কখন কখন শঙ্কর বলা হইত। ফলে বেদপন্থীদের অন্যান্য দেবতাদের সহিত ইহার পার্থক্য ছিল। ইনি একবার দেবতাদের অনুরোধে স্বয়ং প্রজাপতিকে লক্ষ্য করিয়া বাণ ছুড়িয়াছিলেন। দেবতার খুসী হইয়া ইহাকে পশুগণের আধিপত্য দিয়াছিলেন। তদবধি ট্রনি পশুপতি হইয়াছেন। অতি পূর্বে ইনি যজ্ঞের ভাগ পাইতেন না ; জোর করিয়া যজ্ঞের ভাগ গ্রহণ করেন । তদবধি স্বিষ্টকুৎ যাগের প্রচলন । স্বিষ্টরুৎ যাগে ষে আহুতি দেওয়া হয়, তাহ রুদ্রদেবই অগ্নি স্বিষ্টকৃৎ মূৰ্ত্তিতে গ্রহণ করেন। এই প্রসঙ্গে দক্ষযজ্ঞ-ঘটিত পৌরাণিক উপাখ্যান আপনাদের মনে আসিবে । ( ৫ ) স্বিষ্টকৃৎ যাগের পর অনুযাজ যাগ। প্রধান যাগের পূর্বে যেমন প্রধাজ, পরে তেমনই অনুযাজ। প্রধাজ যাগের পাচ দেবতা ; অনুষাজের তিন দেবতা—বহিঃ, নরাশংস, এবং পুনরায় অগ্নি স্বিষ্টকৃৎ । আহুতির দ্রব্য আজ্য । 尊 প্রধান ও অপ্রধান এই সমুদায় যাগের সম্পাদনে কতকগুলি সাধারণ নিয়ম আছে।