পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা ; পশুযাগ ও ইষ্টষাগ Wう@ খুসি রাখে। বিশেষতঃ উদর পূরণের ব্যবস্থটা ভাল করিলে সকলেই খুসি হয় । নইলে এ দেশের বড় লোকেরা সাহেবদিগকে খানা দিতে এত ব্যস্ত কেন ? দেবতাদের ভাল করিয়া খানার ব্যবস্থা করিতে হয়। পশুমাংস অনেক দেবতাই ভালবাসেন । কোন দেবতা কোন পশু ভালবাসেন, প্রত্যেক যজ্ঞে তাহার নির্দেশ আছে। যাজ্যমন্ত্রে দেবতাকে ডাকিয়া যখন বলা হয়, অগ্নি বীহি বৌষট— তাহার অর্থই যে, অগ্নি, তুমি খাও এবং দেবতার নিকট খাদ্য বহিয়া লইয়া যাও। বৌষটু শব্দটা মূলে বহ ধাতু হইতে উৎপন্ন। ইহাই হইল টাইলরের gift theory. তাহার পরে homage theory, এখানে দেবতার লাভের জন্য দেবতাকে উপহার দেওয়৷ হয় না ; যে উপহার দেওয়া যায়, দেবতা তাহা না লইতেও পারেন ; কিন্তু আমি যে দেবতাকে দিতে প্রস্তুত আছি; ইহাই জানাইয়া আপনার অধীনতার বা বশ্যতার পরিচয় দেওয়া হয়। ইহারই নাম homage । এ দেশে রাজাকে, জমিদারকে নজর দেওয়া রীতি আছে ; রাজা নজরের টাকা গ্রহণ করেন, অথবা স্পর্শ মাত্রই ফিরাইয়া দেন ; প্রজা তাহাতেই কৃতাৰ্থ হয়। দেবতাও সেইরূপ গ্রহণ করুন , আর না করুন, কোনও দ্রব্য উপহার দিয়া বা উপহারের অভিনয় করিয়া দেবতার বহুত স্বীকার করা হয়। এই অনুষ্ঠানে একটু ধৰ্ম্মভাব, একটু ethical element আছে। জেহোবার মন্দিরে ইহুদীরা মহা আড়ম্বরে পশু বলি দিত। মন্দিরের উঠান গরু এবং ভেড়ার পালে পরিপূর্ণ থাকিত। উচ্চ বেদির উপর সর্বদা আগুন জ্বলিত। বেদির নীচে নর্দমায় রক্তের স্রোত বহিত। আড়ম্বরের অস্ত ছিল না ; অথচ য়িহুদিরা তাহাদের জেহোবাকে খুব বড় দেবতা মনে করিত। তিনি যে কেবল উদর পূরণের জন্য এত উপহার লইতেছেন, এরূপ মনে করা বোধ হয় তাহাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাহাদের একটা প্রধান পূজার নাম sinoffering. য়িহুদী সৰ্ব্বদাই আপনাকে পাপী মনে করিত। তাহদের যত কিছু দুঃখ তাপ, তাহ সেই পাপেরই ফল মনে করিত। এই sin-offeringএর দ্বারা জেহোবার নিকট সেই পাপ স্বীকার করিয়া পাপ ক্ষালনের কথঞ্চিৎ চেষ্টা করিত মাত্র। ইহা দেবতাকে ঘুষ দেওয়া নহে ; দেবতার নিকট দৈন্য স্বীকার বা বহুত Hrta rin i Nostās ērtā abnegation theory. Abnegatio" :"** অর্থ স্বাৰ্থত্যাগ। এখানে উদেশ্ব স্বার্থলাভ নহে ; উদেশ্ব বরং তাহার বিপরীত । ইহার ভিতরে, মাহুষের ধৰ্ম্মভাবটা আরও ফুটিয়া উঠিয়াছে। দেবতার লাভ হউক বা না হউক, দেবতা ফল দেন বা না দেন, আমাকে কিছু ত্যাগ করিতেই হইবে । আমার কৰ্ত্তব্য আমি করিয়া যাই ; কৰ্ম্মফলে দৃষ্টি রাখিবার আমার দরকার নাই । এরূপ স্থলে ধৰ্ম্মানুষ্ঠানে দেবতার উদর পূরণের চেষ্টা থাকে না ; তবে এমন কোন £ দ্রব্য দিতে হয়, যাহাতে আমার স্বাৰ্থত্যাগের পরিচয় পাওয়া যায় ; যাহার ত্যাগে বস্তুতই আমার সমূহ ক্ষতি আছে। নরবলির কথা আপনারা জুনেন। এখনও বহু সমাজে নরবলি চলিত আছে ; এক কালে হয়ত সকল সমাজেই ছিল যাহারা নরমাংস উপাদেয় বলিয়া ভক্ষণ করে, তাহারা দেবতাকে সেই উপাদেয় মাংস ভোজনের জন্য দিবে, তাহাতে বিস্ময় কি! কিন্তু যাহারা নরমাংস ভোজন করে