পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ s ] শ্রোতসুত্র। এ কারণেই সোমযাগের অন্তর্গত অগ্নিষ্ট্রোমের বর্ণনা দিতে গিয়ে রামেন্দ্রসুন্দর ঐতরেয় ও শতপথ ব্রাহ্মণ এবং কাত্যায়ন শ্রেীতসূত্রের সাহায্য নিয়েছেন । তবে জটিল জ্যোতিষ্টোম যজ্ঞের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তিনি দেননি। অনেক কাটছাট করে সংক্ষেপে জ্যোতিষ্টোম যজ্ঞের বিবরণ দেওয়া হয়েছে এখানে । পরবর্তী প্রবন্ধ খ্ৰীস্ট-যাগ’ একটি নূতন ধরনের রচনা। এই প্রবন্ধে রামেন্দ্রকুন্দর খ্ৰীষ্টানদের Eucharist ভক্ষণের এবং খ্ৰীস্টের আত্মোৎসর্গের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেছেন। এই ব্যাখ্যার একটা নিগৃঢ় কারণ আছে। বেদপন্থী ও খ্ৰীষ্টীয় সমাজের সাদৃশ্ব বের করতে ইচ্ছুক বলেই রামেন্দ্রসুন্দর এভাবে আলোচনায় এগিয়েছেন। প্রথমে এসেছে Eucharistic Sacrifice-HI SF 1 so Sacrifice T-STC-FT SFIfFT cs রুটি ও মদ উৎসর্গ করে, তা হল খ্ৰীস্টের মাংস ও রক্ত। তা খেলে খ্ৰীস্টকেই খাওয়া হয়। তা’র দ্বারা খ্ৰীস্টের সঙ্গে খ্ৰীস্টানের একাত্মতা সাধিত হয়। খ্রীস্টান খ্রীস্ট হয়। মানুষ পায় দেবত্ব। গোড়া খ্রীস্টানের মনে করেন, এটা তাদের নিজস্ব অনুষ্ঠান। অন্য কোন সমাজে এরূপ কোন অনুষ্ঠানের কথা শুনতে পেলে তারা তাকে শয়তানের কারসাজি’ বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু রামেন্দ্রসুন্দর এখানে মানবতত্ত্বজ্ঞ পণ্ডিতদের দ্বারা সংগৃহীত নানাদেশের দুষ্টান্ত সংগ্রহ করে দেখিয়েছেন, দেবতার সঙ্গে একাত্মতা লাভের এই উপায়টি কেবল খ্ৰীস্টানের আবিষ্কার নয়। দেবতাকে আত্মস্থ করার এই ধরণের উপায় বহু দেশেই প্রচলিত আছে। রামেন্দ্রসুন্দর প্রশ্ন তুলেছেন, এ ধরণের অতুঠান আমাদের বেদপন্থী সমাজেও ছিল কি না ? 'যজ্ঞকথা’র ‘খ্রস্টষাগ’ এবং পুরুষ-যজ্ঞ’ শীর্ষক আলোচনায় আমরা দেখব, খ্ৰীস্টান সমাজের অনুরূপ অনুষ্ঠান আমাদের বেদপন্থী সমাজের মধ্যেও ছিল । “পুরুষ-যজ্ঞ’ শীর্ষক প্রবন্ধটিকে রামেন্দ্রম্বন্দরের যজ্ঞকথার উপসংহার বলা চলে। আলোচ্য প্রবন্ধে বেদপন্থীর যজ্ঞ নিয়ে আলোচনা করেছেন রামেন্দ্রসুন্দর। বেদপন্থীর যজ্ঞে পশুমাংস দেওয়া হ’ত । ইষ্টিযাগে মাংসের বদলে রুটি দেওয়া হ’ত । সোমযজ্ঞে সোমরস দেওয়া হত ; কোথাও বা সোমরসের বদলে স্বরা বা অন্য কিছু দেওয়া হত। রামেন্দ্রসুন্দর এখানে প্রশ্ন তুলেছেন—এই সকল দ্রব্যে কোন দেবতার অধিষ্ঠান হয় কিনা ? যদি হয় তো, সে কোন দেবতা ? সে দেবতার সঙ্গে যজমানের সম্পর্কই বা কি ? এ প্রশ্নগুলোর জবাব খুজতে গিয়ে তিনি প্রথমেই সোমরস নিয়ে আলোচনা করেছেন। খ্ৰীষ্টপন্থীর স্বরাপানের সঙ্গে বেদপন্থীক্ষ সোমপানের, আর তন্ত্রপন্থীর স্বরাপানের সম্পর্ক বুঝিয়েছেন। প্রসঙ্গতঃ বাগ দেবীর সঙ্গে সোমের সম্পর্কও আশ্চর্য নিপুণতার সঙ্গে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, অমৃতস্বরূপ সোমকে পূর্বে কেউ জানত না। স্বয়ং বাগ দেবতা তাকে দেবগণের জন্যে এনেছিলেন। তারপর মানুষরা তাকে পেয়েছে। খ্ৰীস্টানদের খ্ৰীস্টও স্বয়ং বাগ দেবতা। তিনিও স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে অমৃত এনেছিলেন। এ কারণেই খ্ৰীষ্টপন্থী বজমান যেমন স্বরা পান করে অমরতা লাভ করে, বেদপন্থী যজমানও সেইরূপ সোমপান করে পান অমরতা। এইভাবেই সোমের কথা বলেছেন রামেন্দ্রস্বন্দর। রামেন্দ্রস্বন্দর বোঝাতে চেয়েছেন, স্থষ্টিকর্তা নিজের দেহ দিয়ে এই জগৎ সৃষ্টি করেছেন । এই