পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা : সোমযাগ & S সবনের জন্য রাখা হয়। সেইখানা ছেচিয়া যে রসটুকু পাওয়া যায়, তৃতীয় সবনের পক্ষে তাহাই প্রচুর। এইরূপে নিষ্কাশিত সোমরস বসতীবরী এবং একধন, এই দুই জলে মিশাইলে আহুতির জন্য রস প্রস্তুত হয় । রস রাখিবার জন্য তিনটি বড় বড় কাঠের গামলা বা কলস থাকে। একটির নাম আধবনীয়, একটির নাম দ্রোণকলস, আর একটির নাম পূতভূৎ । আধবনীয়ে বসতবরী এবং একধন, দুই জল ঢালিয়া তাহাতেই নিষ্কাশিত সোমরস মিশান হয়। এইরূপে প্রস্তুত রস ছাকিয় লওয়া দরকার। দ্রোণকলসের মুখে মেষলোমের ছাকনি রাখিয়৷ আধবনীয়ের জল ঢালিয়া ছাকিতে হয়। এইরূপে ছাকিলে সোমরস পূত অর্থাৎ শুদ্ধ হয়। ছাকা সোমের নাম হয় পবনাম সোম। এই বিশুদ্ধ সোমরসের অৰ্দ্ধেক দ্রোণকলসে এবং অৰ্দ্ধেক পুতভূতে রাখা হয়। পূতভূতে রাখিবার সময় একটু আড়ম্বর আছে ; পরে বলিব । সোমযাগে বহু দেবতাকে আহুতি দিতে হয় । এক এক আহুতিতে যতটুকু সোমরস গ্রহণ করা হয়, তাহার নাম গ্রহ। সোমরস ছোট ছোট পাত্রে লইয়া আহুতি দেওয়া হয় । প্রত্যেক পাত্রে একবার যাহ লওয়া হয়, তাহাই গ্রহ । তিন শ্রেণীর পাত্র আবশ্যক। প্রথম শ্রেণীর পাত্রকে পাত্রই বলে ; সংখ্যা এগারখানি । দ্বিতীয় শ্রেণীর পাত্রের নাম স্থালী ; সংখ্যায় চারিখানি । তৃতীয় শ্রেণীর পাত্রের নাম চমস ; সংখ্যায় দশখানি । এইবার যাগের আরম্ভ । (১) প্রথমে প্রাতঃসবন । প্রথমাহুতি স্বৰ্য্যের উদ্দিষ্ট। স্বৰ্য্যোদয়ের পূৰ্ব্বেই অধ্বযু একখানি পাত্রে কিঞ্চিং রস লইয়া উত্তরবেদির নাভিস্থিত আহবনীয় অগ্নিতে ঢালিয়া দেন। ইহা যাগ নহে; হোম। অধ্বযু নিজেই একটি যজুর্মন্ত্ৰ পড়িয়া আহুতি দেন। উপাংশু অর্থাৎ অনুচ্চ স্বরে মন্ত্র পড়া হয় বলিয়া হোমের নাম উপাংশু হোম। যে রসটুকু দেওয়া হয়, তাহ উপাংশু গ্রহ । ষে পাত্রে করিয়া দেওয়া হয়, তাহ উপাংশু পাত্র। স্বৰ্য্যোদয়ের পর পুনরায় স্থৰ্য্যেরই উদ্দেশে অন্তর্যাম হোম। ইহাও হোম। অন্তর্যাম পাত্রে অন্তর্যাম গ্রহ লইয়া যজুর্মন্ত্র সহিত আগুনে দেওয়া হয় । এই হোমের পর ঋত্বিকের মহাবেদির বাহিরে আসিয়া পুতভূতে ঢালিবার জন্য সোম ছাকেন। দ্রোণকলসে সোম আগেই ছাকিয়া রাখা হইয়াছে। পূতভূতে সোম ছাকায় আড়ম্বর আছে। এক দিকে সোম ছাকা হইতেছে, অন্য দিকে সেই পবমান সোমের উদ্দেশে উদগাত, প্রস্তোত এবং প্রতিহর্তা, এই তিন জন সামগায়ী ঋত্বিক সাম গান করিতেছেন । এই গানের নাম বহিস্পবমান-স্তোত্র গান। পবমান সোমের উদ্দেশে গীত হয় বলিয়া নাম পবমানস্তোত্র। মহাবেদির বাহিরে আসিয়া গীত হয় বলিয়া নাম বহিষ্পবমান-স্তোত্র। তৎপরে তিনটি দ্বিদেবত্য গ্রাহান্থতি তিন জোড়া দেবতার উদ্দিষ্ট। প্রথম আহুতি ঐন্দ্রবায়ব অর্থাৎ ইন্দ্র এবং বায়ুর উদ্দিষ্ট। দ্বিতীয় আহুতি মৈত্রাবরুণ অর্থাৎ মিত্র ও বরুণের উদ্দিষ্ট । তৃতীয় আহুতিটি আশ্বিন অর্থাৎ অশ্বিদ্বয়ের উদ্দিষ্ট। অধ্বঘুর্ণ যথাক্রমে এই তিন গ্রহ আহুতি দেন। এবার হোম নহে ; রীতিমত যাগ । হোতার সহকারী মৈত্রাবরুণ অনুবাক্যামন্ত্র এবং হোতা স্বয়ং যাজ্যামন্ত্র পাঠ করেন। বষটকারের পর অধ্বযু আহুতি দেন। যাগের পর হবিঃশেষ ভক্ষণ । আহুতিদাতা