পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র و G দিতে হয়। ঋত্বিকদের ভাগ এইরূপ—ব্রহ্মা, উদগাতা, হোতা, অধ্বযু্য, এই চারি জন প্রধান ঋত্বিকের প্রত্যেকে বারটি করিয়া আটচল্লিশটি । ব্রাহ্মণাচ্ছংসী, প্রস্তোতা, মৈত্রাবরুণ, প্রতিপ্রস্থাত, প্রত্যেকে ছয়টি করিয়া চব্বিশটি । পোতা, প্রতিহর্তা, আচ্ছাবাকু ও নেষ্টা, প্রত্যেকে চারিটি করিয়া ষোলটি । অগ্নীৎ, সুব্রহ্মণ্য, গ্রাবস্তুৎ, উন্নেতা, প্রত্যেকে তিনটি করিয়া বারটি । সমুদয়ে এক শতটি গাভী দক্ষিণ দিতে হয়। তদ্ব্যতীত কিছু সোনা, ঘোড়া, বস্তু, ছাতু, তিল ইত্যাদিও ঐ অনুপাতে দক্ষিণা দেওয়া হয়। চমসাধ্বযু্যরাও যথাসম্ভব দক্ষিণ পান। মাধ্যন্দিন সবনের সময় দক্ষিণ দিতে হয়। অগ্নিষ্ট্রোমের বিবরণ এইখানে সমাপ্ত করিলাম। আপনারা ধীরভাবে শুনিলেন ; আপনাদের জয় হউক । অগ্নিষ্টোমের নানা বিকৃতি আছে ; তন্মধ্যে উকৃথ্য, ষোড়শী ও অতিরাত্র, এই তিনটির সম্বন্ধে সংক্ষেপে কিছু বলিতে চাহি । ইহাদের পদ্ধতি অগ্নিষ্ট্রোমেরই মত ; তবে কিছু কিছু বিশেষ বিধি আছে। প্রথমে উকৃথ্য যাগ । অগ্নিষ্ট্রোমের প্রাতঃসবনে পাঁচটি শস্ত্র,—হোতার দুইটি, তাহার তিন সহকারীর তিনটি ; মাধ্যন্দিন সবনেও পাচটি শস্ত্র,—হোতার দুই ও সহকারীদের তিন । তৃতীয় সবনে শস্ত্রসংখ্যা দুইটি—হোতাই দুই শস্ত্র পাঠ করেন ; সহকারীদের শস্ত্র নাই। কাজেই অগ্নিষ্টোম যজ্ঞে তিন সবনে মোটের উপর শস্ত্রসংখ্যা বার। প্রত্যেক শস্ত্রের পূৰ্ব্বে স্তোত্রগান হয় ; অতএব স্তোত্রসংখ্যাও বার। আনুষঙ্গিক সবনীয় পশুযাগে একটি মাত্র পশু ; উহাই সবনীয় পশু ; অগ্নির উদ্দেশে একটি ছাগ দিতে হয়। এই হইল অগ্নিষ্ট্রোম। উকৃথ্য যজ্ঞের প্রাতঃসবন ও মাধ্যন্দিন সবন অগ্নিষ্টোমেরই মত । তৃতীয় সবনে হোতার দুই শস্ত্র ব্যতীত হোতার তিন সহকারীর, মৈত্রাবরুণ, ব্রাহ্মণাচ্ছংসী ও আচ্ছাবাকৃ, এই তিন জনের তিন শস্ত্র আছে। কাজেই প্রত্যেক সবনে শস্ত্রসংখ্যা পাচ ; তিন সবনে পনর । শস্ত্র যখন পনর, স্তোত্রও তখন পনর । সবনীয় পশু দুইটি—অগ্নির উদ্দেশে একটি ছাগ এবং ইন্দ্র ও অগ্নি উভয়ের উদ্দেশে আর একটি ছাগ। তার পর ষোড়শী যজ্ঞ । ইহাতে উকৃথ্য যজ্ঞে বিহিত পনেরটি শস্ত্র ত আছেই ; তাহার উপর অতিরিক্ত আর একটি শস্ত্র আছে। কাছেই শস্ত্রসংখ্যা ষোল । অতএব স্তোত্রসংখ্যাও ষোল । ষোল বলিরা যজ্ঞের নাম ষোড়শী। সবনীয় পশু এবার তিনটি ; অগ্নির ছাগ, ইন্দ্রাগ্নির ছাগ এবং ইন্দ্রের মেষ। তার পর অতিরাত্র যজ্ঞ ; পূৰ্ব্বোক্ত যজ্ঞগুলি দিনের বেলাতেই সম্পন্ন হয় ; রাজিতে কোন কাজ থাকে না। অতিরাত্র যজ্ঞে যোড়শীর উপরে অতিরিক্ত রাত্রিকৃত্য থাকে। এই জন্য নাম অতিরাত্র ; রাত্রিকালে তিন পর্য্যায়ে সোমাহুতি । প্রতি পৰ্য্যায়ে চারিটি শস্ত্র ; হোতার একটি, তাহার সহকারী তিন জনের তিনটি— এইরূপে তিন পৰ্য্যায়ে বারটি শস্ত্র । রাত্রিশেষে আরও একটি শস্ত্র হোতার পাঠ্য । কাজেই ষোড়শীর ষোল শস্ত্রের উপরে এই তেরটি যোগ করিলে মোটের উপর উনত্রিশটি শস্ত্র হয়। অতএব অতিরাত্র যজ্ঞে সমুদায়ে উনত্রিশটি শস্ত্র। অতএব উনত্রিশটি স্তোত্র। সবনীয় পশু চারিটি। অগ্নির ছাগ, ইন্দ্রাগ্নির ছাগ, ইন্দ্রের মেষ এবং তদ্ব্যতীত সরস্বতীর উদ্দেশে একটি ছাগ ।