পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যজ্ঞ-কথা : সোমযাগ ¢ ግ অগ্নিষ্টোম, উকৃথ্য, ষোড়শী, অতিরাত্র, এই সকল সোমযজ্ঞ এক দিনেই শেষ হইবে । দীক্ষণ এবং উদ্যোগ আয়োজনে ও আনুষঙ্গিক ইষ্টিযাগাদিতে কয়েক দিন যায় বটে ; কিন্তু প্রকৃত সোমযাগ এক দিনের অনুষ্ঠান ; এক দিনেই তিন সবন । কিন্তু বড় বড় সোমযজ্ঞে একাধিক দিন লাগিত, তাহ পূৰ্ব্বে বলিয়াছি। বারো দিন অথবা তাহার অধিক দিন ধরিয়া যে যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হইত, তাহাকে সত্র বলিত । দ্বাদশাহ নামক সত্ৰ বারো দিনের অনুষ্ঠান ; গবাময়ন নামক সত্র সংবৎসরের অমুষ্ঠান । নৈমিষারণ্যে কুলপতি শৌনক বহুবৎসরব্যাপী সত্রানুষ্ঠান করিতেন, এইরূপ পৌরাণিক কাহিনী আপনারা শুনিয়াছেন । এই সকল বহুদিনব্যাপী সত্রাসুষ্ঠানে প্রত্যহই সোমষজ্ঞ হইত ; প্রত্যহই সোমের অভিষব, সোমের আহুতি ও তৎসহিত পশুযাগাদি হইত। দ্বাদশাহ যজ্ঞে প্রথম দিনে অতিরাত্র ও শেষ দিনেও অতিরাত্র যজ্ঞ ; মাঝে মাঝে কয়েক দিনের কোন দিন বা অগ্নিষ্টোম, কোন দিন উকৃথ্য, কোন দিন বা ষোড়শী ইত্যাদি যজ্ঞ হইত। সংবৎসরব্যাপী গবাময়ন সত্রও এরূপ—প্রথম দিনে অতিরাত্র, শেষ দিনে অতিরাত্র, অন্যান্য দিনে অগ্নিষ্টোমাদি যাগ । সংবৎসরকে দুই ভাগে ভাগ করা হইত , প্রথম ছয় মাসে যজ্ঞগুলির যে পৰ্য্যায় ছিল, দ্বিতীয় ছয় মাসে তাহার পর্য্যায় বিপরীত ক্রমে উন্টাইয়। বৎসরের দুই ভাগকে বিশ্ব-প্রতিবিম্বরূপে symmetrical করা হইত। এ সকলের আলোচনায় আর প্রয়োজন নাই। আর কথা বাড়াইলে আমাকে গালি দিবেন। সেমিরসে মাদকতা ছিল; কিন্তু আমি সোমযজ্ঞের যে বিবরণ দিলাম, তাহাতে আপনাদের অবসাদ বই উন্মাদন কিছুই হয় নাই। দুইট রোচক কথা বলিয়। আমি यांखि छूर्ध्नि लड़ेद । আগে আপনাদিগকে বলিয়াছি যে, সোমলতা যে কোন লতা, এ কালে তাহ কেহই জানে না। বেদ এবং আবেস্তা, উভয় শাস্ত্রের বিবরণে বুঝা যায় যে, উহা এক জাতি ওষধি। ওষধি শব্দে বর্ষজীবী উদ্ভিদ বুঝায় —যে সকল গাছ বৎসরের মধ্যেই জন্মে, বাড়ে ও মরিয়া যায় ; পর-বৎসর আবার নূতন করিয়া জন্মে, বাড়ে ও মরে। সোমকে ওষধিপতি বলা হয়। সোমের বা সোমরসের বর্ণ ছিল অরুণ, পিঙ্গল ; সোমের একটা প্রসিদ্ধ বিশেষণ শুক্র ; শুক্র অর্থে উজ্জল । উহার রসে মিষ্টতা ছিল ; উহার নামান্তর মধু—বেদে ইহাকে বহু স্থলে মধু বলা হইয়াছে ; উপরন্তু ইহা মাদকতা জন্মাইত, বাক্যে স্মৃত্তি দিত, গায়ে বল দিত। দেবতারা ইহা পান করিতেন ; ইন্দ্র সোম পান করিয়া বৃত্রকে পরাজয় ও বধ করিয়াছিলেন। শুধু বল কেন, সোমরস ব্যাধি দূর করিত। অধিক কি বলিব, বেদের ভাষায় সোম অমরত দিত। দেবতারা সোম পান করিয়াই অমর হইয়াছিলেন ; ঋষিরাও অমরত্ব পাইবার জন্য সোম পান করিতেন। অমরত দিতে পারে বলিয়াই সোমযজ্ঞের মাহাত্ম্য। সোমের নামান্তরই এই জন্য অমৃত । এই যে সোম, মৰ্ত্তো তিনি ওষধির রাজা ; স্বগে তিনি দেবগণেরও একজন রাজা ; ব্রাহ্মণগ্রন্থে দেখিৰেন, সোমকে ভূয়োভূয়: রাজা সোম বলা হইয়াছে। রাজা সোম যজ্ঞশালায় প্রবেশ করিলে উহার সম্মানার্থ আতিথ্য ইষ্টিযাগের বিধি । এক কালে