পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●切* রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দেবগণের নিকটেও ইনি দুলভ ছিলেন। দেবতারা ইহার জন্য লালায়িত ছিলেন : ইহার সন্ধান পাইয়া কৌশল আশ্রয়ে ইহাকে আনিয়াছিলেন। সোম আনয়নের আখ্যায়িকাতে বৈদিক সাহিত্য পূর্ণ। স্বর্গের কোন উচ্চ দেশে সোম গুপ্ত ছিলেন ; সুপর্ণ বা প্তেন পার্থী সেখান হইতে দেবতাগণের জন্য, ইন্দ্রের জন্য সোম আহরণ করিয়াছিলেন । ঋগ্বেদসংহিতায় বহু স্থলে এই উপাখ্যানের উল্লেখ দেখিবেন । পুরাণে ইহা গরুড় কর্তৃক অমৃতহরণের আখ্যানে পরিণত হইয়াছে। বেদে দেখিবেন, সোম জলের মধ্যে, সমুদ্রের মধ্যে ছিলেন ; পুরাণেতিহাসে দেখিবেন, সোম বা অমৃত উদ্ধারের জন্য সমুদ্র মন্থন আবশ্যক হইয়াছিল—দেবগণ ও অস্বরগণ উভয়েই অমৃতপ্রাথী হইয়া সমূদ্র মন্থন করিয়াছিলেন। সেখান হইতে নানা নিধি উঠিয়াছিল ; সৰ্ব্বশেষে উঠিয়াছিলেন সোম বা অমৃত । দেবতারা অস্থরদিগকে পরাজয় করিয়া সেই অমৃত লাভ করেন ; কেবল মহাদেবের ভাগে পড়িয়াছিল বিষ। ব্রাহ্মণগ্রন্থেও সৰ্ব্বত্র এই আখ্যায়িকা নানারূপে দেখিবেন। সোম গন্ধৰ্ব্বদের নিকট লুকায়িত ছিলেন ; কোন পার্থী, শ্রেনী বা স্বপণী সেই সোম আনয়ন করে ; সেই স্বপণী আর কেহ নহে, স্বয়ং গায়ত্রী। আবার দেখিবেন, গন্ধৰ্ব্বদের নিকট সোম ছিলেন, দেবতারা বাগ দেবীকে সেই সোম আনিবার জন্য পাঠাইতেছেন ; স্ত্রীপ্রিয় গন্ধৰ্ব্বের নগ্ন কুমারী বাগ দেবীর লোভে সোম ছাড়িয়া দিল ; বাগ দেবী সোম লইয়া চলিয়া আসিলেন। সোমযজ্ঞের আরস্তে সোম ক্রয় উপলক্ষে এই ঘটনার অভিনয় হইত, তাহা আপনাদিগকে বলিয়াছি । এই বাগ দেবী এবং গায়ত্রী অভিন্ন ; কেন না, গায়ত্রী ছন্দোগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ । বেদের মন্ত্রই বাকৃ। এবং বেদের সারভূত গায়ত্ৰীমন্ত্র বেদের শ্রেষ্ঠ বাক্য ; গায়ত্রীই বাগ দেবতা । স্বয়ং বাগ দেবতাকে সোম আনয়ন করিতে হইয়াছিল—তিনি সোম আনিয়া দেবগণকে অমৃতত্ব দান করিয়াছিলেন । দেবতার। সোমযাগ করিতেন ; স্বয়ং প্রজাপতি সোমযাগ করিয়া প্রজা স্থষ্টি করিয়াছিলেন । বিবস্বান এবং ত্রিত অাপত্য দেবগণের পানের জন্য সোমরস প্রস্তুত করিতেন । আবেস্ত শাস্ত্রেও সোমের এই সমুদয় মাহাত্ম্য, এই সমুদয় আখ্যায়িকা কোনও ন৷ কোনও আকারে পাওয়া যায় ; আবেস্তা শাস্ত্রেও বিবস্বান এবং ত্রিত আপত্যের নাম প্রায় অবিকৃত অবস্থাতেই পাওয়া যায়। গ্রীকদিগের মধ্যেও উপাখ্যান আছে, দেবরাজ Zeusএর জন্য ঈগল পক্ষী মধু আনিয়াছিল ; জৰ্ম্মণদের মধ্যেও উপাখ্যান ছিল; দেবরাজ Odhin ঈগল রূপ ধারণ করিয়া মধু আনিয়াছিলেন। এই ঈগল পক্ষী হেন বা সুপর্ণ; এই মধুই সোম। এই সোম কেবল বেদপন্থীর প্রধান দেবতা নহেন ; সমস্ত আৰ্য্য জাতিরও অতি প্রধান এবং অতি প্রাচীন দেবতা । সোমযজ্ঞ আর্য্য জাতিরই প্রাচীনতম জাতীয় অনুষ্ঠান। সৰ্ব্বত্র ইহা অপ্রচলিত হইয়। পড়িয়াছে ; কেবল বোম্বাই প্রদেশে কয়েক জন পাস ঔপনিবেশিক এখনও এই প্রাচীন অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন নাই। এই সোম দেবতাটি কে ? আপনারা সোমলতা কখনও চোখে দেখেন নাই । সোম শবের অর্থ কি, প্রশ্ন করিলে আপনারা বলিবেন, সোমের অর্থ চন্দ্র। ঐতরেয় এবং শতপথ ব্রাহ্মণে সোমকে চন্দ্রই বলা হইয়াছে—পুনঃ পুনঃ বলা হইয়াছে, সোম আর