পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ግ8 রামেন্দ্রস্বন্দর রচনাসমগ্র তাহাকে জয় করিতে পারে নাই ; মৃত্যুকে পরাজয় করিয়া তিনি তৃতীয় দিনে সমাধি হইতে উখিত হইয়াছিলেন । পিতা-ঈশ্বরের পাশ্বে দাড়াইয়া মানবের সেই পুরোহিত মানব-যজমানের পক্ষ হইতে সেই আহুতি পিতার নিকট অদ্যাপি অপর্ণ করিতেছেন—চিরকাল অর্পণ করিবেন। এই আহুতি দ্বারা জীবের পাপ মোচন হইল ;-ঈশ্বরের ও জীবের মধ্যে যে ব্যবধান ছিল, তাহ দূর হইল—জীব পুনরায় পিতার নিকট পুত্ররূপে গৃহীত হইল। উভয়ের মধ্যে atonement হইল ; এই atenement *Roi at-one-ment offs making at one. খ্ৰীষ্টানে বলিবেন, è<I reconciliation ; άττάττει sifî স্থাপন ; বেদপন্থী বলিবেন, ইহা কেবল সন্ধি স্থাপন নহে, ইহা একাত্মতা স্থাপন ; যজমান ইহাতে দেবতা হইল ; জীব শিব হইল। মনে রাখিবেন, এই যজ্ঞ দ্বারাই জীবের সহিত শিবের মিলন ঘটিল । এ যজ্ঞের ঋত্বিকৃ স্বয়ং ঈশ্বর, আহুতির দ্রব্য স্বয়ং ঈশ্বর, এবং উদ্দিষ্ট দেবতাও স্বয়ং ঈশ্বর। প্রকৃতই ইহা ব্রহ্মাপণং ব্ৰহ্মহবিঃ ব্রহ্মাগ্নেী ব্রহ্মণা হুতম–ব্রহ্ম স্বয়ং ব্রহ্মাগ্নিতে ব্ৰহ্মরূপ হব্যকে ব্রহ্মের উদ্দেশে অর্পণ করিলেন । বাইবেলের বর্ণনামতে মৃত্যুর তৃতীয় দিনে খ্ৰীষ্ট সমাধি হইতে উখিত হইয়াছিলেন ; লোকে দেখিয়াছিল, তাহার সমাধি শূন্য ; কোন কোন ভক্তকে তিনি এই অবসরে সশরীরে দেখাও দিয়াছিলেন। তার পরে তিনি তিরোধান করেন—স্বর্গে আরোহণ করেন। এই ঘটনার নাম Resurrection বা পুনর্জন্মলাভ। বৈজ্ঞানিক যুক্তিতে এই ঘটনা টিকে না—এই ঘটনার পক্ষে যে সকল প্রমাণ দেওয়া হয়, কোন ঐতিহাসিক তাহাতে তুষ্ট হইবেন না ; কিন্তু খ্ৰীষ্টীয় সমাজ ইহাকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়াইয়া আছে—এই ঘটনাকে অমূলক বলিলে খ্ৰীষ্টীয় ধৰ্ম্মের মূল উৎপাটিত হয়। এই ঘট. নাতে প্রতিপন্ন হইল যে, খ্ৰীষ্ট মৃত্যুঞ্জয়। যে মৃত্যু জীবের পাপের অবশুম্ভাবী ফল, সেই মৃত্যুকে তিনি জয় করিলেন ; যিনি অমর, তিনি ত অমর রহিলেন ; মরণধৰ্ম্মী জীবকেও তিনি অমরত দান করিলেন। ঈশ্বরে যে অমরত স্বভাবতঃ বিদ্যমান, ইতর জীবও তাহাতে অধিকার পাইল। এই অমরতার প্রাপ্তি খ্ৰীষ্টানের salvation বা মুক্তি। এতদ্বারা জীব ঈশ্বরের সমীপস্থ হইল। আমাদের ভাষায় সালোক্য বা সামৗপ্য লাভ ঘটিল। ঈশ্বরের সহিত সাযুজ্য লাভ বা একবারে ঈশ্বরত্বলাভ খ্ৰীষ্টানের পক্ষে হয়ত বাঞ্ছনীয় নহে ;—আমাদের দেশে ভক্তিপথের পথিকেরাও যেমন সাযুজ্য চাহেন না, কতকটা সেইরূপ। অমরতা প্রার্থী খ্ৰীষ্টানের স্বর্গে বা ঈশ্বরের সমীপে যাইতে চান,—একবারে সশরীরে স্বর্গে যাইতে চান। কোনরূপ সূক্ষ্ম শরীর অবলম্বনে স্বর্গে যাইয়া তাহদের তৃপ্তি হয় না। মর্ত্যভূমির জীর্ণ বাস ত্যাগ করিয়া বিদেহমুক্তিতে র্তাহাদের পোষায় না—তাহার একবারে কলার নেকৃটাই সমেত সশরীরে ঈশ্বরের সালোক্য বা সামাপ্য প্রার্থনা করেন। সশরীরে স্বর্গে যাওয়ার কথা স্বামাদের পৌরাণিক আখ্যায়িকামধ্যেও আছে—যযাতি, ত্রিশঙ্কু, হরিশ্চন্দ্র প্রভৃতির সশরীরে স্বর্গগমন চেষ্টার কথা আপনারা শুনিয়া থাকিবেন। যুধিষ্ঠির প্রায় নির্বিঘ্নে সশরীরে স্বর্গে গিয়াছিলেন। বেদপন্থীর এই স্বর্গ কিন্তু নিকৃষ্ট লোক ; ইহা ব্ৰহ্মলোক নহে। বেদের ভাষায় ইহা দেবগণের প্রিয় ধাম ; ধিনি