পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्रृङ्गब-यछ খ্ৰীষ্ট-যজ্ঞের কথা বলিয়াছি। খ্ৰীঃ-যজ্ঞে হবিঃশেষের নাম ইউকেরিষ্ট। যথাবিধি মন্ত্রোচ্চারণের পর রুটিতে ও মদে দেবতার আবির্ভাব হয় ; উহা খাইলে দেবতাকেই খাওয়া হয় ; দেবতাকে আত্মস্থ করিলে দেবতার সহিত ঐক্য ঘটে। ঐ দেবতাটি কে ? ইনি স্বয়ং ঈশ্বর—ঈশ্বরের অগ্রে জাত পুত্র হইলেও অনাদি নিত্য পরিপূর্ণ ঈশ্বর। তিনি শবব্রহ্ম বা বাগ দেবতারূপে অনাদি, নিত্য ও পরিপূর্ণ ঈশ্বর। তিনি আবার পরিপূর্ণ জীব—যিনি ঈশ্বর, তিনিই জীব। তিনিই যজমানরূপে যজ্ঞ করিয়াছেন ; এবং সেই যজ্ঞে আপনাকেই পশুরূপে—মেষরূপে কল্পনা করিয়া জীবহিতার্থ আত্মসমর্পণ করিয়াছেন। ইউকেরিষ্ট সেই পশুর রক্ত ও মাংস—উহা থাইলে ইতর যজমান দেবতার সহিত একত্ব পায়, মৃত্যু জয় করিয়া অমরত পায়। কেন না, খ্রষ্ট্রের রক্ত ও মাংস অমৃতস্বরূপ। এখন বেদপন্থীর যজ্ঞে আসিব । বেদপন্থীর যজ্ঞে পশুমাংস দেওয়া হইত—ইটুিযাগে মাংসের বদলে পুরোডাশ বা রুটি দেওয়া হইত। সোমযজ্ঞে সোমরস দেওয়া হইত ; যজ্ঞবিশেষে সোমরসের বদলে স্বরা বা আর কিছু দেওয়া হইত। এখন প্রশ্ন যে, এই সকল দ্রব্যে কোন দেবতার অধিষ্ঠান হয় কি না ? সে কোন দেবতা ? সে দেবতার সহিত যজমানের সম্পর্ক কি ? প্রথমে সোমরসের আলোচনা করিব । ইহুদীর দেবতা জেহোবা রক্তপ্রিয় ছিলেন । খ্ৰীষ্ট মেষস্বরূপ হইয়াছিলেন ; মেষরূপেই আপনার রক্ত দিয়াছিলেন । খ্ৰীষ্টানের যে স্বরা পান করেন, ঐ সুরা খ্ৰীষ্টের রক্ত । সোমরস কিন্তু দেবতার রক্ত হইতে পারে না ; কেন না বেদপন্থীর দেবতা রক্তপ্রিয় ছিলেন না। পশুযজ্ঞে পশুর রক্ত রাক্ষসের প্রাপ্য ; রাক্ষসদের জন্য উহা বেদির পার্থে উৎকরে ফেলিয়া দেওয়া হইত। সোমরস রক্ত নহে, তবে উহা অমৃতস্বরূপ, সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। সোমযজ্ঞ প্রসঙ্গে ইহ পুনঃ পুনঃ বলিয়াছি। সোমপানে অমরতা পাওয়া যায়। আগেই বলিয়াছি, সোমরসের পরিবৰ্ত্তে ক্ষত্রিয়ের বট, অশ্বখ প্রভৃতির রস পান করিতেন। ঐতরেয় ব্ৰাহ্মণ বলিতেছেন, ইহাতে প্রত্যক্ষ ভাবে না হউক, পরোক্ষভাবে সোমপানই তইত । কেন না, এই যে বটবৃক্ষ, ইহা পরোক্ষভাবে সোমেরই স্বরূপ। ক্ষত্রিয় “সোমং রাজানমিহ ভক্ষয়ামি” এই মন্ত্র উচ্চারণ করিয়াই সেই বটের রস পান করিতেন । রাজস্থয় যজ্ঞে অভিষেকের পর ক্ষত্রিয় রাজা স্বরা পান করিতেন। রাজার হাতে স্বরাপূর্ণ কাংস্তপাত্র দেওয়া হইত। “স্বাষ্ঠিয়া মষ্টিয়া পবশ্ব সোমধারয়া, ইন্দ্রায় পাতবে স্বতঃ” এই মন্ত্রে রাজার হাতে দেওয়া হইত। এই মন্ত্রে স্বরাকেই সোম বলিয়া সম্বোধন করা হইতেছে। বলা হইতেছে—আহে সোম,ইন্দ্রের পানের জন্য তোমার অভিষব হয় ; তোমার স্বাদু ও মাদক ধারার দ্বারা এই রাজাকে পূত কর। পানাস্তে রাজা সেই মুরাশেষ তাহার কোন বন্ধুর হাতে দিতেন। এক পাত্রে স্বরাপানে উভয়ের মিত্রত প্রতিষ্ঠিত হইত। সোঁত্রামণি যজ্ঞে স্বরা দেওয়া হইত ; বিধিমতে সন্ধান বা fermentation দ্বারা স্বর প্রস্তুত করিয়া সেই স্বরা দেওয়া হইত। এই যজ্ঞের দেবতা ছিলেন অশ্বিদ্বয়, সরস্বতী, আর ইন্দ্র স্বত্রামা । অধ্বযু আগুনে হুধ ঢালিয়া দ্বিতেন ;