পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

డి సిఫి রামেন্দ্রম্বন্দর রচনাসমগ্র দাড়াইল এই। বাঙ্গালা ভাষার সম্পূর্ণ কোষগ্রন্থে দুই শ্রেণীর শব্দ থাকিবে,— (১) “খাটি’ সংস্কৃত ও (২) ’খাট’ বাঙ্গালা। রচনার ভাষায় ও কথার ভাষায় দুই শ্রেণীর শবাই প্রচুর পরিমাণে বর্তমান আছে। চেষ্টা করিলে বরং 'খাটি’ সংস্কৃতকে কতক পরিহাব করা যাইতে পারে, কিন্তু ’খাট’ বাঙ্গালার সম্পূর্ণ পরিহার একবারে অসাধ্য ! থাটি সংস্কৃতের পরিহার কতক চলিতে পারে বটে ; কিন্তু সেইরূপ পরিহার কৰ্ত্তব্য বটে কি না, সে স্বতন্ত্র কথা । তার পরের কথা, কোন শ্রেণীর শব্দ ভাষা মধ্যে সংখ্যায় অধিক ? বল কঠিন ; বাঙ্গালা ভাষার শব্দসমূহের সংখ্যা নিরূপণে এ পর্য্যন্ত কেহ হঠাৎ সাহসী হয়েন নাই। বাঙ্গালার সম্পূর্ণ কোষগ্রন্থ সঙ্কলিত হয় নাই। যে সকল অভিধান প্রচলিত আছে, তাহা সংস্কৃত কোষগ্রন্থ হইতে সঙ্কলিত ; তাহাতে এমন থাটি সংস্কৃত শব্দের উল্লেখ আছে, যাহা আজি পৰ্য্যস্ত বাঙ্গালা ভাষার,—"বিশুদ্ধ’ বাঙ্গালা ভাষার রচনাতেও ব্যবহৃত হয় নাই। কিন্তু খাটি বাঙ্গালা শব্দের যেগুলি নাহলে আমাদের দৈনিক জীবনযাত্রা অচল হয়,—বিশুদ্ধ বাঙ্গালা রচনাও অসাধ্য হয়, তাহাদের অধিকাংশই সেই সকল কোষগ্রন্থে স্থান পায় নাই। এ সম্বন্ধে শ্ৰীযুক্ত দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের আক্ষেপোক্তি সাহিত্য-পরিষদের অনেকেরই মনে আছে, সন্দেহ নাই । সাহিত্যের ভাষায় ও লৌকিক ভাষায় একটা পার্থক্য থাকিবেই। এই পার্থক্য বিলোপের চেষ্টায় কোন ফল নাই। যে অংশের উদ্দেশু লোকশিক্ষা, তাহ লৌকিক ভাষার নিকটবৰ্ত্তী হইবে ; এবং যে অংশের উদ্দেশ্য শিক্ষিতের জন্য রসসৃষ্টি, অথবা অভিঞ্জের সহিত জ্ঞানালোচনা, তাহাও লৌকিক ভাষা হইতে দূরবর্তী হইবে। ইহা সাধারণ নিয়ম। কেবল এ দেশে কেন, উহা সৰ্ব্বদেশে সৰ্ব্বকালে প্রচলিত সাধারণ নিয়ম। সকল দেশেই এই প্রভেদ আছে ও থাকাই উচিত ও থাকিবেই। তজ্জন্য বাদামুবাদ বৃথা । লেখকগণও ব্যক্তিগত শিক্ষা দীক্ষা ও রুচি অনুসারে কেহ বা সাহিত্যের ভাষাকে লৌকিক ভাষার অভিমুখে, কেহ বা বিমুখে লইয়া যাইবেন, সে বিষয়েও বাদাম্ববাদ বৃথা। সকলের ভাষা এক ছাচে ঢালা হইবে না ; কখনও হয় নাই ও হওয়া প্রার্থনীয়ও নহে। তাহা হইলে সাহিত্যে বৈচিত্র্যের ও সৌন্দর্ঘ্যের নাশ হইবে মাত্র । ব্যক্তিগত রুচিভেদের জন্য কোন নিয়ম-বন্ধন চলে না । যাহারা নিয়মের বন্ধনে ব্যক্তিগত রুচিকে আবদ্ধ করিতে চান, তাহারা নিতান্তই নিস্ফল শ্রম করিয়া থাকেন । র্যাহারা ব্যক্তিগত প্রতিভাকে নিয়মরজুতে আবদ্ধ করিতে চান, র্তাহারা নিতান্তই মৃণালতন্তু দ্বারা মত্ত হস্তাকে বাধিতে চাহেন। সুতরাং এ বিষয়ে নিয়ম স্থাপনের চেষ্ট নিরর্থক, উপদেশদান নিরর্থক ও বাদামুবাদ নিতান্তই নিরর্থক। আপনার রুচি ও আপনার উদ্দেশ্য অনুসারে, পাঠকের রুচি ও পাঠকের উদ্দেশ্যের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া, কেহ সংস্কৃত শব্দ প্রয়োগের, কেহ বা বাঙ্গাল শব্দ ব্যবহারের পক্ষপাতী হইবেন, ইহাই নিয়ম । অন্য সঙ্কীর্ণ নিয়ম জারি করিলে তাহ কেহ মানিবে না। যাদ কোন সাধারণ নিয়ম স্থাপন করা চলে, তাহা এই। ভাষার মধ্য শ্রতিকটুত