পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

e রামেক্সস্বন্দর রচনাসমগ্র বাঙ্গাল ব্যাকরণে তাহার উত্তর নাই ; অথচ তাহার উত্তর দেওয়াই বাঙ্গালা ব্যাকরণের কার্য্য । এই প্রশ্নের মীমাংসার জন্য যে যে ভাষার সাহায্য লইতে হয়, লও। প্রাচীন বাঙ্গাল সাহিত্যের ভগ্নাবশেষ যেখানে বাহা বর্তমান আছে, তন্ন তন্ন করিয়া খুজিয়া দেখ। বহুদেশের দূর-দূরাস্তের প্রাদেশিক ভাষায় কোন কোন রূপ বর্তমান আছে, খুজিয়া দেখ। তাহার পর উত্তর দিবার চেষ্টা করিও। তৎপূৰ্ব্বে একটা আনুমানিক উত্তর দিলে তাহা গ্রহণ করিব না ;–কিছুতেই না। হৰ্ণলী সাহেব বলিয়াছেন, ক ৰ্ত্ত ব্য হইতে ক রি ব উৎপন্ন হইয়াছে। পণ্ডিত শরচ্চন্দ্র শাস্ত্রী বলেন, ক রি বা t মি হইতে ক রি ব হইয়াছে। করি মিঃ কিরূপে ক রি ব’-তে পরিণত হইয়াছে, তাহার প্রমাণের জন্য সমস্ত প্রাচীন বাঙ্গালা সাহিত্য ঘাটিয়া দেখা আবশ্বক ; প্রাদেশিক ভাষা সমস্ত খুজিয়া দেখা আবশ্বক। সহজে প্রমাণ হইবে না। অর্থসাদৃশ্ব প্রমাণ নহে। প্রমাণ ভাষাব প্রাচীন ইতিহাসে। সে প্রমাণ কোথায় ? * হ ই য়। শব্দের ব্যুৎপত্তি নির্ণয়ে সমর্থ হইলে তখন যা ই য় ৷ করি য় । খ গ ই য় । প্রভৃতির ব্যুৎপত্তি নির্ণয়ের পথ সুগম হইবে। তখন বাঙ্গালা ব্যাকরণের একটা স্থত্র আবিষ্কৃত হইবে। সেই সূত্র একটা নবাবিষ্কৃত তথ্য ; এইরূপ তথ্যসমষ্টি লইয়া নুতন বাঙ্গাল ব্যাকরণের দেহ রচিত হইবে। সে বহুদূরের কথা ; এখন মজুরি কর। বাঙ্গালা ভাষার সমুদ্র আলোডন কব । ডুবুরির মত সাগরবক্ষে ঝাপ দাও। সমুদ্রগর্ভে শামুক ঝিনুক কঙ্কাল কঙ্কর মুক্ত প্রবাল যেখানে যাহা আছে, তুলিয়া আন। কাহাকেও বর্জন করিও না ; কাহাকেও অবজ্ঞা করিও না ; কাহাকেও অগ্রাহ করিও না। কি জানি, কোন অবজ্ঞাত জঞ্জাল হইতে কি নূতন তথ্যের আবিষ্কাব হইবে ! কি জানি, কোন অগ্রাহ কঙ্কর মাজিয়া ঘষিয়া দেখিলে কোন রত্বে পরিণত হইবে । ডুবুরির মত যাহা পাও, কুড়াইয়া আন। সংগ্ৰহ করিয়া বিশেষজ্ঞদের হাতে অপিত কর । জহুরি কোন উপলখণ্ড হইতে কি জহব বাহির করিবেন, কে জানে ? যতদিন বিশেষজ্ঞের হাতে না পড়ে, ততদিন জাতীয় মিউজিয়মে সযত্বে সংগ্ৰহ করিয়া রাখ। সাজাইয়া গোছাইয়া রাখিতে পার, উত্তম ; তোমার পরিশ্রম বিশেষজ্ঞের সহায় হইবে। সাজাইতে না পার, রাখিয়া দাও । কিন্তু অবহেলা করিও না। অবহেলায় তোমার অধিকার নাই। ‘অকিঞ্চিৎকর বলিবার অধিকার তোমার নাই। 'গ্ৰাম্য ভাষা" বলিয়া অবজ্ঞার অধিকার তোমার নাই । আমি যে ব্যাকরণের কথা বলিতেছি, তাহার উদ্দেশ্য নিয়ম আবিষ্কার। ভাষার মধ্যে অজ্ঞাত নিয়ম বর্তমান আছে ; সেই নিয়ম খুজিয়া বাহির করিতে খুজিতে হইবে। সকল ভাষাতেই নিয়ম আছে। সংস্কৃতে, প্রাকৃতে, ল্যাটিনে, গ্রীকে, ধাঙ্গড়ের ভাষায় ও সাওভালের ভাষায় সৰ্ব্বত্র নিয়ম আছে। কেন না, নিয়মহীন ভাষা চিন্তার অগোচর। নিয়ম আছে ; তবে বিনা অন্বেষণে তাহ বাহির হইবে না। নিয়ম সাহিত্যের ভাষাতে আছে, লৌকিক ভাষাতেও আছে। কথাবার্তার ভাষা অনেকটা বন্ধনশূন্ত বলিয়া বোধ হয়, কিন্তু বস্তুতই কি তাহ নিয়মবজিত ? অসম্ভব। প্রাদেশিক লৌকিক গুষিার মধ্যেও নিয়ম আছে। অন্বেষণ কর, বাহির হইবে। ব্যাকরণ কখনও নিয়ম বাধে মা ; উহা নিয়ম আবিষ্কার করে মাত্র। ব্যাকরণ ভাষার