পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেঞ্জস্বন্দর রচনাসমগ্র 8ילוג: বিদ্যাসাগরের জীবদ্দশাতে র্তাহার স্বজাতি র্তাহার নিকট আপনার যে মূক্তি দেখাইয়াছিল, তাহা তাহার জীবনকাহিনীপাঠে কতকটা অনুমান করা যাইতে পারে। র্তাহার আত্মীয়-বন্ধুগণের সম্পর্কে আসিয়া তাহাকে পদে পদে লজ্জিত ও প্রতারিত হইতে হইয়াছে, ইহার ভূরি উদাহরণ র্তাহার জীবনের আখ্যায়িকামধ্যে সঙ্কলিত আছে। যদি কোন বৈদেশিক আমাদের জাতীয় চরিত্রের ছবি আঁকিতে প্রয়াসী হয়েন, তাহাকে মসীবর্ণ সংগ্ৰহ করিবার জন্য অধিক প্রয়াস পাইতে হইবে না ; ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের চবিত-লেখকগণ প্রচুর পরিমাণে ঐ সকল সামগ্রী একাধারে সংগ্ৰহ করিয়া রাথিয়াছেন। অণুবীক্ষণ নামুে এক রকম যন্ধ আছে, যাহাতে ছোট জিনিষকে বড় করিয়া দেখায় ; বড় জিনিষকে ছোট দেখাইবার নিমিত্ত উপায় পদার্থ-বিদ্যাশাস্বে নিদিষ্ট থাকিলেও ঐ উদ্দেশ্যে নিৰ্ম্মিত কোন যন্ত্র আমাদেব মধ্যে সৰ্ব্বদা ব্যবহৃত হয় না। কিন্তু বিদ্যাসাগবের জীবনচরিত বড় জিনিষকে ছোট দেখাইবাব জন্য নিৰ্ম্মিত যন্ধস্বরূপ । আমাদেৱ দেশের মধ্যে র্যাহাবা খুব বড় বলিয়া আমাদের নিকট পরিচিন্ত, ঐ গ্রন্স একখানি সম্মুখে ধরিব মাত্র তাহাবা সহসা অতিমাত্র ক্ষুদ্র হইয়া পডেন ; এবং এই যে বাঙ্গালীত্ব লইয়া আমরা অহোরাত্র আস্ফালন কবিয় থাকি, তাহাও অতি ক্ষুদ্র ও শীর্ণ কলেবর ধারণ কবে। এই চতুষ্পাশ্বস্থ ক্ষুদ্রতার মধ্যস্থলে বিদ্যাসাগরের মূৰ্ত্তি ধবল পৰ্ব্বতের ন্যায় শীর্ষ তুলিয় দণ্ডায়মান থাকে ; কাহাবও সাধ্য নাই যে, সেই উচ্চ চড অতিক্রম করে বা স্পশ করে । পূর্বেই বলিয়াছি, অনর্থক আত্মগ্লানির অবতারণা আমার অভিপ্রেত নহে। কিন্তু বিদ্যাসাগরকে আপনার বলিয় তাহার সমীপস্থ হইতে তুলনায় আত্মগ্নালি আপন হইতে আসিয়া পডে। বাস্তবিকই বিদ্যাসাগরের উন্নত দুট চরিত্রে, যাহা মেরুদণ্ড, সাধারণ বাঙ্গালীর চরিত্রে তাহাব একান্তই অসদ্ভাব। প্রাণিতত্ত্ববিদেবী মেরুদণ্ড দেখিয়া সমগ্র প্রাণিসমষ্টিকে উন্নত ও অমুন্নত দুই প্রধান পৰ্য্যায়ে ভাগ করেন। মেরুদণ্ডের অস্তিত্ব প্রাণীব পক্ষে সামর্থ্যের ও আত্মনির্ভরশক্তির প্রধান পরিচয় । বিদ্যাসাগর যে সামর্থ্য ও আত্মনির্ভরশক্তি লইয়া জন্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন, সাধারণ বাঙ্গালী-চরিত্রে তাহার তুলনা মিলে না। একটা কথা আজকাল অহরহ: শুনিতে পাওয়া যায়। বর্তমান রাজকীয় শাসনে চারি দিকে আমাদিগের জাতীয় অভ্যুদয়ের লক্ষণ দেখা দিয়াছে। অতি প্রাচীন কালে যখন হিন্দু রাজা হিন্দুরাজ্যে শাসনদণ্ড পরিচালনা করিতেন, তখন আমাদের জাতীয় অবস্থা সমধিক উন্নত ছিল, অনেকে এ কথা অস্বীকার করেন না ; অন্ততঃ হিন্দু জাতির পুরাবৃত্তের অভাবে এ কথা লইয়া তর্ক বিতর্ক যত ক্ষণ ইচ্ছা চালান যাইতে পাবে। কিন্তু গত কয় শত বৎসরে আমাদের দুর্দশার ষে একশেষ ঘটিয়াছিল, এবং বর্তমান কালে আমাদের সামাজিক জীবন সঙ্কটাপন্ন মুমুমু অবস্থা হইতে ফিরিয়া আসিয়াছে, ইহা এক রকম সৰ্ব্ববাদিসম্মত সত্য। এই নবজীবনসঞ্চারের কয়েকটা বড় বড় লক্ষণ দেখিতে পাওয়া যায় । একটা প্রধান লক্ষণ, আমাদের জাতীয় রুচির পরিবর্তন ও জাতীয় সাহিত্যের বিকাশ । বেহুলার নাচ দেখিয়া স্বর্গের দেবগণ যত দূর তৃপ্তি লাভ করিডেন, জাম্বর