পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉2br রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র সৰ্ব্বপ্রধান পাত্র স্থির করিয়াছিলাম, ইহাও নিঃসঙ্কোচে স্বীকার করিতেছি । আশমানির ঘরে বিমলার আকস্মিক প্রবেশের সহিত বিদ্যাদিগগজ ঘরের কোণে লুকাইয়া আত্মগোপন করিলেন, এবং তাহার শীর্ষরক্ষিত হাডি হইতে অড়হরের ডাল বিগলিত হইয়া অঙ্গ প্রত্যঙ্গে মন্দাকিনীর ধারা বহাইল, সেই বিবরণ যখনই পাঠ করিলাম, তখনই বুঝিলাম যে, বাঙ্গালা সাহিত্য অতি উপাদেয় পদার্থ, এই সাহিত্যের সরোবরে বিদ্যাদিগগজের মত শতদল কমল যখন বিদ্যমান আছে, তখন গঞ্জাম গঞ্জাম চত্বরপুরেব কাটাবন ঠেলিয়া ও সেই কমল চয়নের চেষ্টা অকুচিত নহে । ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র সম্বন্ধে এত লোকে এত কথা কহিয়াছেন যে, আর সে বিষয়ে কোন কথিতব আছে কি না, আমি জানি না। কথিতব্য থাকিলেও আমি কোন কথ। বলিতে সাহস করিব না। শ্রোতৃগণের মধ্যে অনেকেই হয়ত দাবি করেন যে, আমি যখন বঙ্কিমচন্দ্রের সম্বন্ধে প্রবন্ধপাঠে উদ্যত হইয়াছি, তখন আমি স্থৰ্য্যমুখীর ও ভ্ৰমবেব চবিত্র আব একবার স্বাক্ষরূপে বিশ্লেষণ করিয়। উভয় চরিত্রের তুলনামূলক সমালোচনে বাধ্য আছি । যদি কেহ এইরূপ দাবি রাখেন, তাহাব নিকট আমি ক্ষমাভিক্ষা করিতেছি । বাকনল আব টেষ্টটিউব হাতে দিয়া নানাজাতি কিন্তুতকিমাকার দ্রব্যেব বিশ্লেষণ আমার ব্যবসায় বটে, কিন্তু মানবচবিত্র বা মানবীচরিত্র বিশ্লেষণে আমার কিছু মাত্র শিক্ষ। প। দক্ষতা নাই , কেন না, নভেল-বর্ণিত মানবচরিত্র বিশ্লেষণে সলফবেট হাইড্রোজেনেব কিছুমাত্র উপযোগিতা নাই , ঐ মানবচরিত্র নমনীয়ও নহে, দ্রবণীয় ও নহে এবং জলে দ্রব করিয়া উত্তাপ প্রয়োগে উহাব ভাস্করতাপাদনও অসম্ভব। আব আমার কাব্যবস গ্রাহিতার যে নমুনা দিয়াছি, তাহাতে আপনারাও আমার নিকট সে আশা রাখেন ন । বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস সম্বন্ধে একটা স্থল কথা আমার বলিবাব আছে, সেই কথাট। সংক্ষেপে বলিয়াই আমি আপনাদিগকে রেহাই দিব । এক শ্রেণীর সমালোচক আছেন, তাহারা বলেন, মানবসমাজেব সুখ-দুঃখ, রেষারেষি, দ্বেষাদৃেষি, এব” ভালবাসাবাসি যথাযথরুপে চিত্রিত কবাই নবেলের মুখ্য উদেশ্ব ; উহাতে কল্পনাব পেলার অবসর নাই। ইহারা বঙ্কিমচন্দ্রেব উপব সম্পূর্ণ প্রসন্ন নহেন। আর এক শ্রেণীর সমালোচক বলেন, পাপ-পুণ্যের ফলাফলের তারতম্য দেখাইয়৷ সমাজেব নীতিশিক্ষার ও ধৰ্ম্মশিক্ষার বিধানই নবেলের মুখ্য উদ্দেশু হইবে এবং সেই উদ্দেশু সাপনে সফলতা দেখিয়াই নবেলের উৎকর্ষ বিচার কবিতে হইবে । ইহারাও বঙ্কিমচন্দ্রের প্রতি সম্পূর্ণ প্রসন্ন নহেন। ব্যাকবণশাস্ত্রে যেমন ভটিকাব্য, ইহাদের মতে ধৰ্ম্মনীতিশাস্ত্রে তেমনি নবেল, কাব্যেব ছলন। কবিয়া পাঠকগণকে কাদানই নবেল রচনার মুখ্য উদ্দেশু । মানবসমাজের ষযাযথ চিত্র আঁকিতে নৈপুণ্যের প্রয়োজন, আর নীতিশাস্ত্র অতি সাধু শাস্ত্র, ইহা স্বীকাব করিয়াও আমরা মনে করিয়া লক্টতে পারি—নবেল এক কাব্য এবং সৌন্দর্য্যস্থষ্টিই কাব্যেব প্রাণ। কেবল নীতিশাস্ত্র কেন, যদি কেহ দর্শনশাস্ত্র বা রসায়নশাস্ত্রকেই নবেলের বিষয় করিতে চাহেন, তাহাতে আপত্তি করিব না। কিন্তু বিষয়টি যদি সুন্দর না হয়, তাহা হইলে তাহা কাব্য হয় না। সৌন্দর্ঘ্যেরও প্রকারভেদ আছে ; গাছ-পালার ছবি সুন্দর হইতে পারে, গুপ্ত কথার