পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 X 3 রামেন্দ্রস্বন্দর রচনাসমগ্র ওলাউঠ ও বসন্তের এই প্রকোপকালে । সম্প্রতি কলিকাতার অৰ্দ্ধেক লোক বসন্তেব টকা লক্টল , বাকী অৰ্দ্ধেক হয়ত দুই দিন পরে ওলাউঠার টীকা লইবে । যেরূপ হাওযাব গতি দেখিতেছি, তাহাতে কিছু দিন পবে কুকুরদংশনেও টীকা লইতে হইবে, ইহা বোধ করি বিধাতাৰ বিধান,–ভবিতব্য । বস্তুতঃ শ্বাপদসমাকুল অবণ্যানা আর মানুষের ভয়বিধায়িনী নহে , শয্যাতলে লুক্কায়িতা কালভূজঙ্গিনীও আর যমদূতী নহে , এখন স্থল দৃষ্টিৰ অগোচৰ কম-বসিলাস অথবা দাডি-ভিত্রিও কথন কোন অলক্ষিতে দেহমধ্যে প্রবেশ লাভ করিয়া অকস্মাৎ অস্তুরাত্মাকে তাহার প্রিয়তম আধার হইতে পিচু্যত করিয়া ফেলিবে, এই আশঙ্কাতেই অন্তরাত্মা এক রকম পূৰ্ব্ব হইতেই ওটগ্রান্তে অবস্থিত থাকেন। প্রকৃতই আজকাল শঙ্কাভিঃ সৰ্ব্বমাক্রান্তম । জীবিতব্য কিরূপে, ভাবিবাব দরকার নাই , জীবন যে এ পর্য্যন্ত রহিয়াছে, ইহাই আশ্চযা । জীববিদ্যাঘটিত এই নুতন তত্ত্বের সহিত মহাত্ম। পাণ্ডুল্লের নাম চিরকালের জন্য গথিত রহিয়াছে , কিন্তু সকলে হয়ত জানেন না যে, এই নুতন মস্ত্রেব হেলম হোলৎজক্ট পুরাতন ঋষি । জৈব পদার্থ কিরূপে পচিয়! যায়, ইহা একটা রসায়নশাস্ত্রের সমস্যা । পচিবার সময় জৈব পদার্থের অঙ্গারভাগ বায়ুস্থিত অম্লজানের সহযোগে ধারে ধীরে পুডিয়া যায়, ইহা অবশু বাসায়নিকগণের পুবাতন আবিষ্কাব। কিন্তু কতকগুলি ক্ষুদ্র ও প্রায অতীন্দ্রিয় জীবাণু যে এই অবকাশে অপ্রতিহত প্রভাবে আপনাদের শরীর পুষ্টি ও বংশবৃদি সাধিত করিয়া লয়, এই গুপ বার্তাটুকু কিছু দিন পূৰ্ব্বে কেহই জানিতেন না । আজকাল অবশ্য টিণ্ডাল প্রভৃতির প্রসাদে এইরূপ দুইচাবিটা কথার সংবাদ রাখা বড়ই স্নকর হইয়াছে , এবং যে জানে না, সে কতকটা ত্রেত যুগের জীব বলিয়া গণ্য হইয়া থাকে। কিন্তু ফলে হেলমহোলৎজ পঞ্চাশ বৎসর পূৰ্ব্বে তাহাব নুতন ক্রীত অণুবীক্ষণ-সাহায্যে পচনশীল দ্রব্যে এই জীবাণুর অস্তিত্ব প্রথম আবিষ্কাব করেন। শুধু অস্তিত্বের আবিষ্কার নহে, এই জীবাণুর অবস্থিতিই যে পচনক্রিয়ার একমাত্র কাবণ , যেখানে জীবাণুপ্রবেশের পথ রুদ্ধ, সেখানে জৈব পদার্থ সহস্ৰ বৎসব অম্লজানের স্পর্শে বক্ষিত হইলেও পচিবে না, শর্কবায় মাদকত্বের উৎপত্তি ঠিকু এই পচনক্রিয়ার অনুরূপ ; ইহাতেও জীবাণু-বিশেষের অবস্থিতি আবশ্বক ; এ সমুদয়ই হেলমহোলৎজ সপ্রমাণ করেন। একটা আপত্তি উঠিবাব সম্ভাবনা ছিল—হয়ত সেই সেই জীবাণুর শরীর হইতে এরূপ কোনও রস বা বিষ নিঃস্থত হয়, যাহ! শুদ্ধ রাসায়নিক ক্রিয়াবলে জৈব পদার্থকে বিরুত কবে ও শর্করাকে স্বরায় পবিণত করিয়া থাকে। হেলম্হোলৎজ শর্করা ও জীবাণুর মাঝে একখানি সূক্ষ্ম পদ রাখিয়া দেখাইলেন যে, পদাখানি নিঃস্তত রসের সঞ্চার রোধ করিতে পাবে না, জীবাণুগণেরই সঞ্চার রোধ করে মাত্র । কিন্তু এরূপ স্থলে চিনিরও মদ্যে পরিণতি ঘটে না। সিদ্ধান্ত হইল, এই ব্যাপারটা জৈব প্রক্রিয় ; রাসায়নিক প্রক্রিয়া নহে । এই সিদ্ধান্তের ফলে মন্থয্যের চিন্তাপ্রণালী কিরূপ বিপৰ্য্যস্ত হইয়া গিয়াছে, তাহ সকলে না জানিতে পারেন ; এই ক্ষুদ্র প্রবন্ধে তাহার উল্লেখও অসম্ভব।