পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

● > や রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রতিভার অপেক্ষায় ছিল । এক হিসাবে মন্ত্য-শবীবকে যন্ত্র হিসাবে দেখা যায়। তবে সে কালে অন্য যন্ত্রের সহিত দেহযন্ত্রের কোনরূপ তুলনা সস্তুবিত না । বাস্পযন্ত্রে কয়লা পোডাইতে হয়। ঘটিকাযন্ত্রে মাঝে মাঝে দম দিতে হয়, কিন্তু দেহযন্ত্রে জীবনরূপ একটা কি-জানি-কি অতিপ্রাক্লও শক্তি বিনা ব্যয়ে, বিনা শ্রমে কাৰ্য্য চালাইতেছে, এইরূপ একটা বিশ্বাস সকলেরই ছিল । হেলমহোলৎজের লিখিত উক্ত প্রবন্ধ প্রকাশের পর হইতে কথা উঠিয়াছে যে, জীবন হয়ত একটা কবিজনোচিত কল্পনা মাত্র, একট। আভিধানিক শব্দ মাত্র, কতকগুলি ক্রিয়াসমষ্টির অভিধান মাত্র। কয়লা নৃ পোডাইলে যেমন বাস্পযম্ব চলে না, কয়লা ন! পোড়াইলে সেইরূপ দেহযন্ত্রেরও চলিবাব সম্ভাবনা নাই, এবং এই উভয় কয়লাই আমাদের সেই চিরপরিচিত কৃষ্ণকায় অঙ্গলি । আমাদের সৌর জগৎ আর একটা প্রকাগুতর যন্ত্র। সূৰ্য্যমণ্ডল হইতে বাশি রাশি শক্তি বাহির হইয়া তাপকপে ও আলোকরূপে দিগ দিগন্তে আকীর্ণ হইতেছে ও তাহারই কণিকা মাত্র পাইয় গ্রহে উপগ্রহে নানাবিধ ভৌতিক ক্রিয়৷ চলিতেছে। এই পৃথিবীতে যে বায়ু বহে, জল পডে, মেঘ ডাকে, বৃক্ষ লত কীট পতঙ্গ হইতে মানুষ পৰ্য্যস্ত জন্মে ও মরে, হাসে ও কাদে, খেল৷ কবে ও নাচিয় বেড়ায়, সূৰ্য্যমণ্ডল হইতে সমাগত কণিকাপ্রমাণ শক্তিষ্ট এই সমুদ্বয়ের কারণ। কিন্তু এই অপরিমেয় শক্তি আসিল কোথা হইতে ? হেলমহোলৎজ দেখাইয়াছিলেন যে, স্থৰ্য্যমণ্ডলে এই শক্তিব ভাণ্ডার, অন্যত্র নহে , ইহারও পরিমাণ আছে ও ক্ষয় আছে। কোথা হইতে এই ভাণ্ডার সংগৃহীত হইল, এবং এই ব্যয়েরই বা পরিমাণ কি, হেলমহোলৎজ তাহারও হিসাব দিলেন। বলা বাহুল্য, সেই হিসাব সৰ্ব্বত্র গৃহীত হইয়াছে। সৌরজগৎরূপ মহাযশ্ব কিরূপে কত দিন হইতে চলিতেছে, তাই। গণিবার উপায় হেলমহোলৎজের নিকটেই মানবজাতি শিখিয়াছে । গণিতশাস্ত্রে হেলমহোলৎজ কি করিয়াছেন, কিরূপে বুঝাইব দানা বঙ্গভাষা ও দীন বঙ্গসাহিত্য ; অন্য দেশে যাহ। সম্পাদিত হইয়াছে, এ দেশে তাহার বর্ণনারও উপায় নাই । মহামতি লর্ড কেলবিনের বিখ্যাত vortex theory-র কথা অনেকে শুনিয়া থাকিবেন। জগদ্ব্যাপী আকাশে বা ঈথবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আবর্তের নাম জড পরমাণু। হেলমহোলৎজের প্রতিভা এই পরমাণুতত্ত্বের বীজ রোপণ করিয়াছিল। ঘর্ষণক্ষমতা-বজ্জিত তরল পদার্থে আবর্তোৎপাদন গণিবার যে প্রণালী তিনি উদ্ভাবন করিয়াছিলেন, বেলাভূমিতে উৰ্ম্মিরেখার ও বায়ুমধ্যে মেঘের উৎপত্তি হইতে আকাশমধ্যে জড পরমাণুর উৎপত্তি পৰ্য্যন্ত বুঝাইতে সেই প্রণালী ব্যবহৃত হইয়াছে । হেলমহোলৎজ অনেক নৃতন গডিয়াছেন, আবার অনেক পুরাতন ভাঙ্গিয়াছেন । ইউক্লিডের সময় হইতে মানবজাতি আজ পর্য্যন্ত কতকগুলি স্বতঃসিদ্ধ লইয়া জ্যামিতিবিদ্যা অথবা দেশতত্ত্ব গঠন করিয়া নিশ্চিন্ত ছিল । আজকাল সেই স্বতঃসিদ্ধগুলির মূল ভিত্তি লইয়া টানাটানি আরম্ভ হইয়াছে। কে বলিল, আমাদের দেশের (অর্থাৎ আকাশের) সীমা নাই ? কে বলিল, জামাদের দেশ সৰ্ব্বত্রই সমাকার ? দুইটা