পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৯৮ রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র হওয়ার পর সহসা প্রতিপন্ন হইয় গেল যে, ইহুদী ভাষার সহিত বিবিধ ইউরোপীয় ভাষার কোন সম্পর্ক নাই , এবং ইহুদী জাতির সহিত ইউরোপীয় জাতিসমূহের কোনরূপ নিকট শোণিতসম্পর্কও নাই । বৰঞ্চ সংস্কৃত ভাষার সহিত ঐ সকল ভাষার অত্যন্ত সম্পর্ক রহিয়াছে , এব” সংস্কৃতভাষী ভারতবাসীর সহিত পাশ্চাত্য জাতিগণের শোণিতসম্পর্কও রহিয়াছে। মক্ষমূলরের পূৰ্ব্বেষ্ট এই সত্য আবিষ্কৃত হইয়াছিল ; স্বতরা তাহাকে এই নুতন ভাষাতত্ত্ব ও নূতন জাতিতত্ত্বের আবিষ্কৰ্ত্তা বলিয়া নির্দেশ করিতে পারা যায় না। কিন্তু সংস্কৃত ভাষায় অভিজ্ঞত লাভ করিবার পর হইতেই তিনি এক্ট নুতন ভাষাতত্ত্ব ও নুতন জাতিতত্ত্বের তথ্যাঙ্গুসন্ধানে ও সাধারণের সমক্ষে প্রচারে আগ্রহসহকারে প্রবৃত্ত হইষাছিলেন। তাহার যত্ন, পরিশ্রম ও অধ্যবসায় আৰ্য্যভাষাসমূহের সম্বন্ধ নিরূপণে ও আর্য্যজাতিগণেব সম্বন্ধ-নির্ণয়ে যথেষ্ট আনুকূল্য করিয়াছে, এ কথা কেহত অস্বীকার করবেন না। ভাষাগত সম্পর্কের মূলে জাতিগত সম্পর্ক বৰ্ত্তমান বহিয়াছে , ইংরাজেব ভাষার সহিত আমাদের ভাযাব সম্পর্ক আছে, স্তবাং ইংবাজেব সহিত আমাদের শোণিতগত সম্পর্ক আছে, আমরা উভয়েই আর্য্যবংশধব, এই মোট কথাটা আজকাল সকলের মুথেই শুনিতে পাওয়া ধাম । আমাদেব মধ্যে অনেকে গুযও আছেন, যাহার। ইংরাজদিগকে আর্য্য নাম প্রদান কবিতে কুণ্ঠ বোধ কবিবেন, এবং বিশুদ্ধ আধ্য নামটা কেবল আমাদেব নিজস্ব মনে কবিয়া আনন্দ বোধ করিবেন । তাহদেব সহিত বিচারে প্রবৃত্ত হইতে আমার ইচ্ছা নাই তলে আমব যে আর্য্যবংশধব, সে কথা আমরা বহু শত বৎসব ধাবয সম্পূর্ণভাবে লিম গিয়াছিলাম ; এবং আমবা যে সেই অতি পুবাতন সত্যটা পুনবায় জানিতে পাবিযাছি ও আমাদেব আৰ্য্যত্বের জন্য স্থানে অস্থানে আস্ফালন কবিয় বেড়াইতে সমর্থ হইয়াছি, তজ্জন্য আমরা আর্য্য মক্ষমূলরের নিকট সম্পর্ণভাবে ঋণী , ইহা অস্বীকার কবিবার উপায় নাই। ঋগ্বেদসংহিতার প্রচাব মক্ষমূলবের জীবনের সর্বপ্রধান কাৰ্য্য, এবং ঋগ্বেদসংহিতার মাহাত্ম্য তিনিই পাশ্চাত্য দেশে পচাব করেন। ঋগ্বেদসহিতাকে তিনি আর্য্যজাতির প্রাচীনতম ও মানবজাতিব প্রাচীনতম গন্থ ললিয়। স্বাকাব কবিতেন, এবং ঋগ্বেদসংহিতাব কালনির্ণয়ে প্রবুহু হইয়। তিনি আর্য্যজাতির ভাবতবর্ষপ্রবেশেধ কালনির্ণয়েরও চেষ্টা করিয়াছিলেন । এই গ্রন্থের সাহায্যেই তিনি ভাবতবর্মে প্রবেশের প্রাকৃকালীন পুরাতন আর্য্য সমাজের অবস্থা নির্ণয়ে ও প্রয়াসী হইয়াছিলেন। এইরূপে মানবজাতির অতীত ইতিহাসেব একটা বিস্মৃত পরিচ্ছেদ তিনি নুতন কবিয়া আবিকারের প্রয়াস পাইয়াছিলেন। তৎক্লও কাল-নির্ণয় এল। তদুঘটিত ইতিহাস সকলে হয়ত নিৰ্ব্বিবাদে গ্রহণ করিতে সম্মত হইবেন না , জ্ঞানবৃদ্ধির সহকারে এই ইতিহাস হ্যত সম্পূণ পরিবন্তিত আকাব ধাবণ করবে। কিন্তু তাহা হইলেও মক্ষমূলর যে অসাধারণ পরিশ্রম, চিন্তাশীলতা ও অধ্যবসায়েব উদাহরণ দেখাইয়াছেন, তাহ। বিজ্ঞানের ইতিবৃত্তে সযত্নে লিপিবদ্ধ হইবে। আমাদের মধ্যে এক অতি বিজ্ঞ সম্প্রদায় আছেন, যাহাব বৈজ্ঞানিকগণের পুনঃ পুন: মত-পরিবর্তন দেখিয়া বিজ্ঞানকে উপহাস করিয়া থাকেন। কিন্তু তাহাদের জানা উচিত ষে, বিজ্ঞানের সহিত অজ্ঞানের এইখানেই প্রভেদ । বিজ্ঞান দিন দিন আপনাকে