পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র এই আকাঙ্ক্ষার ভাব ও অতৃপ্তির ভাব উমেশচন্দ্রের রচনার প্রত্যেক ছত্রে প্রকাশ পাইত। তিনি একটা পিপাসার উত্তেজনায় পানীয় আহরণে উদ্যত হইয়াছেন, এইরূপ বুঝিতে পাবিতাম। শুষ্ক মরুভূমির মধ্যে দণ্ডায়মান হইয়৷ তিনি প্রাণেব চেষ্টায় যেন জলের অন্বেষণ করিতেন , এবং সময়ে সময়ে মরীচিকাদর্শনেও যেন তৎপ্রতি ধাবিত হইতেন। অন্ধকূপস্থিত জীব নুতন জ্যোতির দেখা পাইয়া যেন তাহাব অভিমুখে ধাবিত হইতেছে, এইরূপ বোধ হইত। এই জন্য উমেশচন্দ্রের বৈদিক রচন। আমার নিকট এত ভাল লাগিত। বাঙ্গালায় আরও কতিপয় মনস্বী ব্যক্তি ইতিহাসের আলোচনা করিয়াছেন, অনেকেই বৈদেশিকের পদাঙ্ক অনুসরণ ও বৈদেশিকেরই অল্পবৃত্তিতে নিরস্ত হইয়াছেন। কেহ কেহ বৈদেশিক প্রণালীক্রমে নতন সত্যাবিষ্কারেও সমর্থ হইয়াছেন। উমেশচন্দ্রের সম্পাদিত কৰ্ম্মেব অপেক্ষ তাহদের সম্পাদিত কৰ্ম্ম এক হিসাবে অধিক মূল্যবান। কিন্তু উমেশচন্দ্রে যে চিত্ত-প্রবৃত্ত্বির স্মৃত্তি দেখিয়াছি, যে অনুরাগের, পিপাসার উত্তেজন| দেখিয়াছি, তাহ অন্যত্র দেখিয়াছি বোধ হয় না । কোথাও দেখি নাই বলিলে হয়ত ভুল হয়। অক্ষয়চন্দ্র দত্তে এই অমুরাগ ও পিপাসা পূর্ণ মাত্রায় বৰ্ত্তমান ছিল। বিধাতার নিগ্রহ তাহাব সেই পিপাস তৃপ্ত কবিতে দেয় নাই । বিধাতাব নিগ্রহে উমেশচন্দ্রে ও সেই পিপাসার কিঞ্চিৎ নিবৃত্তির অবসর ঘটিল না । বঙ্কিমচন্দ্র এক কালে বাঙ্গালাব একখানি ইতিহাস বচনার ইচ্ছা করিয়াছিলেন : কিন্তু ইতিহাসের উপকরণ তখনও সংগৃহীত হয় নাই , এখনও সংগৃহীত হইতে অনেক বিলম্ব । তিনি বঙ্গের ঐতিহাসিকদিগকে পথপ্রদর্শনের জন্য যথাসাধ্য যত্ন করিয়াছিলেন , সে চেষ্টা তাহাব আন্তবিক স্বদেশাতুরাগ হইতে প্রস্থত। উমেশচন্দ্রেরও একখানি বাঙ্গালার ইতিহাস লিখিতে ইচ্ছা ছিল। কোন বন্ধুকে তিনি পত্র দ্বারায় ইহা জানাইয়াছিলেন। বঙ্গের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করিয়া তিনি উপাদানেব ও সংগ্ৰহ করিতেছিলেন। উপাদান সংগ্রহ অনেকেরই সাধ্য ; কিন্তু এ দেশে সেই সাধ্য সাধনেও সকলে পরাজুখ । উপাদান একত্র করিয়া তাহাকে যথাবিধানে সজ্জিত ও যথাস্থানে বিন্যস্ত করা সকলের সাধ্য নহে। সংগৃহীত উপাদানের মূল্য নিৰ্দ্ধারণ, তাহার অর্থ আবিষ্কার, পুবাতন জিনিষকে নূতন চোখে দেখা, এ সকলই দুরূহ ব্যাপার। উমেশচন্দ্রে এ শক্তি প্রচুর পরিমাণে বর্তমান ছিল । কিন্তু এই অনন্যসাধাবণ শক্তির কার্য্যে বিনিয়োগ ঘটিল না। দরিদ্রের মনোরথ হৃদয়ে থাকিয়াই লয় পায়। আমাদের জাতীয় দারিদ্র্য কি চিরদিনই এইরূপ ফলোৎপাদনের প্রতিহর্তা থাকিবে ? উমেশচন্দ্রের দার্শনিক মত র্তাহাব সাংখ্যদর্শনের ব্যাখ্যায় প্রকাশিত হইয়াছিল। অন্য ও তাহাব আভাস পাওয়া যায়। র্তাহার অপ্রকাশিত রচনামধ্যে র্তাহার দার্শনিক মতের বিশদ উল্লেখ আছে। তিনি সাংখ্য মতাম্ববত্তী দ্বৈতবাদী ছিলেন ; প্রকৃতি ও পুরুষ, বাহ জগৎ ও অন্তর্জগতের অন্তস্তলে এই দুই স্বতন্ত্র অনিৰ্ব্বচনীয় পদার্থেব অস্তিত্ব স্বীকার করিতেন। ইংরেজী দর্শনে যাহাকে noumenon বলে ব। যাহাকে su stance বলে, প্রকৃত ও পুরুষ, সাংখ্য মতে ç Rx”i noumenon,