পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত-কথা : রজনীকান্ত গুপ্ত ఇర్సిలి খণ্ড বাহির হইয়াছে কি না, অমুসদ্ধানে বাহির হই । আর কোন বাঙ্গলা পুস্তকের আমি তাহার পূৰ্ব্বে অনুসন্ধান লই নাই। সে দিনের কথা আমার আজও মনে আছে। কলেজ ষ্ট্রট ৯৭ নং বাড়ী দোকানের বাহিরে ফুটপাথের উপর সন্ধ্যার পর গুরুদাসবাবু মোড়ার উপর বসিয়া ছিলেন। নিকটে আর কেহ ছিল না। অামি আগ্রহের সহিত র্তাহাকে জিজ্ঞাসা করিয়া কোন আশাপ্রদ উত্তর পাইলাম না । তখন নিতান্ত নিরুৎসাহ ও ক্ষুণ্ণ হইয়া বাসায় ফিরিলাম। এই সময়ে চাপাতল ফষ্টি লেনের উপরে, “বঙ্গবাসা’র কার্য্যালয় ছিল। রজনীবাবু তাহার চাপাতলার বাস হইতে মাঝে মাঝে চাপাতল সেকে গুলেন দিয়া বঙ্গবাসী-কাৰ্য্যালয়ে যাইতেন। ঐ লেনে আমার বাসা হইতে আমি রজনীবাবুকে মাঝে মাঝে দেখিতে পাইতাম । “বঙ্গবাসী’ কাগজে তাহার ঐতিহাসিক প্রবন্ধ যাহ। কিছু বাহির হইত, যত্বের সহিত তাহা পাঠ করিতাম। এই সকল প্রবন্ধ সংগৃহীত হইয়া 'আর্য্যকীৰ্ত্তি’ প্রথম খণ্ড বাহির হইয়াছে শুনিব৷ মুত্র একখান কিনিয়| আনিয়া পাঠ করি। রাজপুত ও শিখ ও মারাঠার কাহিনী রজনীবাবুর স্বাভাবিক ভাষায় বণিত হইয়া মনের মধ্যে নানা ভাবের উদ্দীপনা করিত। প্রেসিডেন্সি কলেজে তামাব পঠদ্দশার শেষ সময়ে রজনীবাবুর সহিত আমার সাক্ষাৎ সম্বন্ধে পরিচয় ঘটে। অখিল মিস্ত্রির লেনে পরলোকগত গিরিজাপ্রসন্ন রায় চৌধুরীর বাসায় তাহার সহিত আমার প্রথম পরিচয় হয়। তাহার বচন পাঠ করিয়া বাল্যাবধি র্তাহার নামে আকুষ্ট হইয়াছিলাম । পরিচয়ের পর তাহার চরিত্র-সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হইয়। আমি ততোধিক আকৃষ্ট হইয়া পড়িয়াছিলাম। সেই চরিত্রের সৌন্দর্য্যে, মাধুর্য্যে ও ঔদার্য্যে এই সভাস্থলের অনেকেই মুগ্ধ ছিলেন। তাহার সম্বন্ধে আমার বাগ বাহুল্যের কোন প্রয়োজন নাই । রিপন কলেজে কৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়| অবধি আমি রজনীবাবুর প্রতিবেশী ছিলাম । পরিচয় ক্রমশঃ বন্ধুতায় এবং বন্ধুত ক্রমশঃ আত্মীয়তায় ঘনীভূত হইয়াছিল। র্তাহার মধুর প্রকৃতির কোন অংশ আমার অজ্ঞাত ছিল না ; তাহার সহিত অবস্থান আমার বিদেশ-প্রবাসের সর্বপ্রধান আনন্দ ছিল। প্রায় দুই বৎসর হইল, র্তাহার অন্তিম রোগের সঞ্চার হয়, অন্ততঃ তাহার মনের ভিতর ঐরূপ আশঙ্কা জন্মিয়াছিল । কিন্তু ঐ রোগের বাহ্য লক্ষণ কিছুক্ট প্রকাশ পায় নাই , স্বাস্থ্যভঙ্গের কোন চিহ্নই লক্ষিত হয় নাই। তাহার আশঙ্ক। সম্পূর্ণ অমূলক বলিয়াই উড়াইয় দিতাম। তিনিও দুই একজন নিতান্ত অন্তরঙ্গ বন্ধু ব্যতীত অন্যের নিকট তাহ প্রকাশ করেন নাই । এমন কি, র্তাহার নিজ পরিবারস্থ কোন ব্যক্তিই এই আশঙ্কার কথা জানিতেন না। কিন্তু তদবধি তিনি স্বাস্থ্যের জন্য কিছু চিন্তিত হইয়াছিলেন । প্রত্যহ প্রাতঃকালে বেড়াইতে আরম্ভ করিয়াছিলেন ; মাঝে মাঝে গঙ্গাস্বান করিতেন । গত শীতকালের অবসানে বাইসাইকেল, অভ্যাসের চেষ্টা করিতেন । কচিৎ বা শিয়ালদহ ষ্টেশনে যাইয়৷ ওজন লইয়া আসিতেন। এই সময়ে রজনীবাবু তাহার জীবনের কৰ্ত্তব্যসকল সম্পূর্ণ করিবার জন্য কিছু ব্যগ্র হইয়া পাড়য়াছিলেন। র্তাহার গৃহের লাইব্রেরিটির পূর্ণত সাধনের জন্য তিনি অকাতরে পুস্তকসংগ্রহে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন ; গত বৎসর পূজার পর গয়াধামে