পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৌরীমঙ্গল 8(t স্মৃতি করি মুনিগণ সংগ্ৰহ করিল। গঙ্গানারায়ণ রচে ভবানীমঙ্গল । কলিযুগে তাহ লোকে বুঝা ভার হইল। কিরীট মঙ্গল আদি হইল সকল । মতে ভাষা আশা করি কৈল কবিগণ । এ সকল গ্রন্থ দেখি মম অাশা হইল স্মৃতি ভাষা কৈল রাধাবল্লভ শৰ্ম্মন ॥ গৌরীমঙ্গলের পুথি ভাষায় রচিল । বৈদ্যক করিয়া ভাষা শিখে বৈদ্যগণে । সকলে রচিল কথা পুরাণ ভারত। জ্যোতিষ করিয়া ভাষা শিখে সৰ্ব্বজনে ॥ কৌতুক রচিল কেহ কাহিনীর মত । বাল্মীকি করিল ভাষা দ্বিজ কৃত্তিবাস। কেহ না রচিল শক্তিতত্ত্ব নিরূপণ। মনসামঙ্গল ভাষা হইল প্রকাশ ॥ ব্ৰহ্মলীলা কেহ নাহি করিল রচন ॥ মুকুন্দ পণ্ডিত কৈলা শ্ৰীকবিকঙ্কণ। আগম নিগম সব বিচারিয়া মনে। কবিচন্দ্রে গোবিন্দমঙ্গল বিরচন ॥ রচিল কিঞ্চিৎ ব্ৰহ্মলীলা নিরূপণে ॥ ভাগবত ভাষা করি শুনে ভক্তমান । ষড় দরশনে যার দর্শন না পায়। চৈতন্যমঙ্গল কৈল বৈষ্ণব বিজ্ঞান ॥ মম রচা হাস্য ভাস্থ্য জানিবে সবাই ॥ বৈষ্ণবের শাস্ব ভাষা অনেক হইল ॥ মূখের স্বভাব মতে করিল রচন। অন্নদামঙ্গল ভাষা ভারত করিল ॥ দোষ না লইবে কেহ গুণবান জন ॥ মেঘঘটা যেন ছটা তডিতের পাতা । এই পুথি রচিল গীতগানের কারণ। শিবরাম গোস্বামী করিল ভক্তিলতা ৷ দিলাম দ্বারকানাথে করিতে গায়ন ॥ অষ্টাদশ পৰ্ব্ব ভাষা কৈল কাশীদাস । সেনভূমে (সিংতুম?) বাস রূপপুর নামে গ্রাম । নিত্যানন্দ কৈল পূৰ্ব্বে ভারত প্রকাশ ॥ চক্রবত্তী উপাধি বালকরামনাম ॥ চোর চক্ৰবৰ্ত্তী কীৰ্ত্তি ভাষায় করিল। লইলা এ পুথি বহু আগ্রহ করিয়। বিক্রমাদিত্যের কীf৪ পয়ার রচিল । গান গৌরীমঙ্গলের গীত শুদ্ধ হইয়া ॥ দ্বিজ রঘুদেব চণ্ডী পাচালি করিল। গুণের সাগর হন দয়ার সাগর । কবিচন্দ্র চোর কবি ভাষায় হইল ॥ নারদ তুম্বুরু সম গানে গুণিবর ॥

গ্রন্থকারের সাহিত্যানুরাগ ও অনুসন্ধানের যথেষ্ট পরিচয় পাওয়া যাইতেছে। ভক্তিলতা, ভবানীমঙ্গল প্রভৃতি গ্রন্থের অস্তিত্ব বিয়য়ে আমি কিছুই জানি না ; উল্লিখিত কবি ও কাব্যসকলের অধিকাংশই বোধ করি, বাঙ্গাল সাহিত্যের ইতিহাসে অদ্যাপি স্থান পায় নাই। গত চৈত্রের “সাহিত্যে” [ ১৩০২ ] বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাসলেখক শ্ৰীযুক্ত দীনেশচন্দ্র সেন যে কয়েকখানি বাঙ্গালা মহাভারতের নাম দিয়াছেন, তাহার মধ্যে নিত্যানন্দ-প্রকাশিত মহাভারতের উল্লেখ দেখিলাম না । "মেঘাটা, যেন ছটা তড়িতের পাতা" ভারতরুত অন্নদামঙ্গলের প্রতি গৌরীমঙ্গলরচয়িতার এই উক্তি বড় সুন্দর । অন্যান্য মঙ্গলগ্রন্থের ন্যায় গীত হইবার জন্য গৌরীমঙ্গল রচিত হইয়াছিল। কোন প্রদেশে এই গীত চলিত হইয়াছিল কি না, অবগত নহি । শুনিতে পাই, রাজা পৃথ্বীচন্দ্র শক্তিভক্ত ছিলেন ; শক্তিতত্ত্ব নিরূপণের জন্য গৌরীমঙ্গল লিখিত হয় ; সমগ্র গ্রন্থ শক্তির মাহাত্ম্যবর্ণনে পরিপূর্ণ। গৌরীমঙ্গল পাঠ করিয়া উহার সম্বন্ধে মত প্রকাশের অবসর আমার নাই। পাতা উন্টাইয়া যত দূর দেখিলাম, তাহাতে কাব্যাংশে ইহাকে অন্যান্য প্রচলিত মঙ্গলগ্রন্থের সহিত তুলনীয় করা যায় না। সংস্কৃত পুরাণের অনুকরণে উহ রচিত