পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র نه و& چ দেহ লইয়া, সদাপ্রফুল্ল, হান্তপূর্ণ মুখ লইয়া, ব্যোমকেশ মুস্তফী সৰ্ব্বদা অসাধ্য সাধনে প্রস্তুত—সৰ্ব্বদা অসাধ্য সাধনে সমর্থ। ইহা যন্ত্রে কুলায় না, ইহার জন্য প্রাণের টান চাই ; ইহার জন্য বুকের রক্ত ঢালিতে হয়। পরিষদের সেরেস্তায় দুইখানি খাতা ছিল। একখানি আমার, একখানি প্যের্মিকেশের। এই খাত দুইখানি আশ্রয় করিয়া ব্যোমকেশের সহিত আমার কথাবার্তা, তর্কবিতর্ক, বাদাতুবাদ চলিত। উভয়ের মধ্যে মাঝে মাঝে যে ভাষার ব্যবহাব হইত, তাহা ছোট বড় কোন পার্লেমেণ্টে, এমন কি, কোন ভদ্রসমাজে উপস্থাপিত কবিবার যোগ্য নহে। . ব্যোমকেশের প্রতি আমি যেরূপ তীক্ষ্ণ বাণ নিক্ষেপ কবিতাম, তাহা অন্য কেহ হয় ত সহিত না—এক রামকমল ভিন্ন অন্য কেহ বোধ করি, এখনও সহিবে না । ব্যোমকেশ তাহ অবলীলাক্রমে সহিয়৷ যাইত , সে এত সহজে সহিয়া যাইত যে, আমার পক্ষে ঐ ভাষাপ্রয়োগ একরূপ অভ্যস্ত হইয়া গিয়াছিল। আমি ঐ ভাষাপ্রয়োগে কখনও সঙ্কুচিত বা লজ্জিত হই নাই । ইহা বোধ হয়, আমার কাপুরুষতা—কিন্তু আমাব এই কাপুরুষতার জন্য ব্যোমকেশ আমাকে কখনও দৈন্য অনুভব করিতে দেয় নাই বা লজ্জা অন্তভব করিতে দেয় নাই । আমবি তিরস্কারের উপহার ব্যোমকেশেব নিকট জয়মাল্য হইত, ব্যোমকেশ তাহা সাদরে ধারণ করিত। খাত দুইখানি এখনও বোধ কবি, কাৰ্য্যালয় খুজিলে মিলিতে পারে ,—উহ রাখিয়া দাও বা পোডাইয় ফেল, এপন তাহাতে ক্ষতি নাই । আমাদের দত্ত তিরস্কারের জয়মাল্য সে সাদরে গ্রহণ করিত , সে আমাদিগকে যাহা দিয়! গিয়াছে, তাহ রাখা আমাদের ইচ্ছাধীন। “দিয়ে যায় যত যাহ, রাথ তাহ ফেল তাহ, যা ইচ্ছ। তোমাক । সে ত নহে বেচা-কেনা ফিবিবে না ফেবাবে না, জন্ম-উপকাব ৷ ” কেন আমার সঙ্কোচ বোধ হইত না ? ব্যোমকেশের সহিত আমার সম্পর্ক আপিসের সম্পর্ক ছিল না—আপিসের সম্পর্কে ভদ্রলোকের মধ্যে ওরূপ ব্যবহার চলে না । ব্যোমকেশ আমাকে অগ্রজের মত দেখিতে শিখিয়াছিল,—আমার গুণে নয়, নিজের গুণে। ব্যোমকেশ আমাকে আপনার করিয়া লইয়াছিল। এট। ব্যোমকেশের বিশিষ্টতা। আপনাদের মধ্যে র্যাহার ব্যোমকেশের সম্পর্কে আসিয়। ছিলেন, র্তাহারাও জানেন, ব্যোমকেশের নিকট কিরূপ একটা পরশপাথর ছিল,— তাহার স্পর্শমাত্রে আপিসের সম্পর্ক আত্মীয় সম্পর্কে দাড়াইত। আজি ব্যোমকেশ নাই, কিন্তু ব্যোমকেশের সাহিত্য-পরিষৎ আছে। ব্যোমকেশের সাহিত্য-পরিষৎ ব্যোমকেশের স্মৃতিচিহ্ন স্থাপন করিবেন—হয়ত একখানা চিত্রপট বা আর কিছু স্থাপন করিবেন। সাহিত্য-পরিষৎ তাহ করুন ; আমি তজ্জন্য বিশেষ ব্যাকুল নহি । সাহিত্য-পরিষদের প্রত্যেক ইষ্টকে, প্রত্যেক নথিতে, প্রত্যেক লাল ফিতায় বোমকেশের স্মৃতি জড়িত রহিয়াছে। সাহিত্য-পরিষদে ব্যোমকেশ যে প্রাণের ধারা ঢালিয়া দিয়া গিয়াছে, তাহাই সন্ত্রীবনী সুধারূপে