পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রঘুবংশ ও পদ্মপুরাণ ২৬৫ সম্ভবতঃ অন্য পুস্তকেরও পূর্ববর্তী খণ্ডে অর্থাং স্বৰ্গখণ্ডে আছে। পাতালখণ্ডের পূর্ববর্তী স্বৰ্গখণ্ড। স্বৰ্গখণ্ডের পুস্তক খুজিবার আমার সময় হয় নাই। পাঠকেরা কেহ অনুগ্রহ করিয়া স্বৰ্গখণ্ডের শেষ ভাগে রঘুবংশবর্ণনা আছে কি না, সন্ধান দিলে বাধিত হইব । ফলকথা, পদ্মপুরাণের স্বৰ্গখণ্ডের মুদ্রিত বা হস্তলিখিত পুস্তক না দেখিয়া মীমাংস চলে না। রঘুবংশের বিবরণ আমার পুথিতে পাতালখণ্ডের আরম্ভে, অন্য পুস্তকে স্বৰ্গখণ্ডের শেষে থাকিলে, উহাকে পদ্মপুরাণমধ্যে প্রক্ষিপ্ত বলিবার উপায় থাকে না । ধরিয়া লইলাম, উহ। পদ্মপুরাণের অন্তর্গত। আর এই বর্ণনা যদি পদ্মপুবাণের অন্তর্গত হয়, তবে কালিদাসের দিলীপকর্তৃক গোসেবাঘটিত উপাখ্যানের মূল সন্ধানের জন্য ঋতম্ভরের উপাখ্যানের আশ্রয় লইতে হয় না। 窯 না, ঋতম্ভরের উপাখ্যানের সহিত কালিদাসের উপাখ্যানের সাদৃশ্য যৎসামান্য டு | এইখানেই আমার বক্তব্য শেষ করিতে পারিতাম। কিন্তু প্রবন্ধলেখক পদ্মপুরাণের আর এক জায়গায় ঐ গোসেবার বৃত্তান্ত আমাকে দেখাইয়াছেন। বোম্বাই সংস্কৰণ ও কলিকাতার কেদারনাথ ভক্তিবিনোদের সংস্করণ, উভয়ত্র পদ্মপুবাণের উভয়খগুমধ্যে এক জায়গায় দিলীপকৃত গোসেবীর কথা বণিত দেখিলাম। সেখানে সূৰ্য্যবংশবর্ণনা নাই, তবে পুত্রপ্রাপ্তির উপায় নির্দেশের প্রসঙ্গক্রমে বলা হইয়াছে, দিলীপ নামে সূৰ্য্যবংশে এক রাজা ছিলেন, তিনি গোসেবা করিয়া পুত্ৰলাভ কবিয়াছিলেন। এইরূপে দিলীপের বশিষ্ঠাশ্রমগমন, গোসেবা, মায়াসিংহদৰ্শন ও বরলাভে পুত্রোৎপত্তি পৰ্য্যন্ত বণিত হইয়াছে। এই উপাখ্যানটুকুর ভাষার সহিতও কালিদাসের ভাষার খুব সাদৃত। আমার পাতালখণ্ডের ভাষা, এই উত্তরখণ্ডের ভাষা ও কালিদাসের ভাষা, পরস্পরের এত মিল যে, একটাকে অন্যটার paraphrase বলা যাইতে পারে। যদি কেহ বলেন, কালিদাসের রঘুবংশ সম্মুখে রাখিয় কোন মহাত্ম পাতালখণ্ডে দিলীপ হইতে অজবিলাপ পৰ্য্যন্ত বসাইয়া দিয়াছেন এবং আর কোন মহাত্মা উত্তরখণ্ডে দিলীপেব গোসেবাঘটিত উপাখ্যানটুকু বসাইয়া দিয়াছেন, তাহার উত্তর দেওয়া কঠিন হয় । এখন এই গুরুতর প্রশ্ন উপস্থিত হয়, কে কাহার নিকট ঋণী কালিদাস পদ্মপুবাণ হইতে লইয়াছেন বা পদ্মপুরাণলেখক কালিদাস হইতে লইয়াছেন ? ইহার মীমাংসা আমার অসাধ্য। এ দেশের পণ্ডিতের দ্বিধাহীন হইয়া বলিবেন, কালিদাসই ঋণী ; সাহেবী দল তেমনই নিঃসঙ্কোচে বলিবেন, পদ্মপুরাণই ঋণী। মীমাংসা আমার অসাধ্য ; তবে এ প্রসঙ্গে দুটা কথা বলিয়া ফেলিতেও চাই । পদ্মপুরাণ পাতালখণ্ডের আগাগোড়া উন্টাইয়া দেখিয়াছি। রামাশ্বমেধকথার পর কৃষ্ণকথার আরম্ভ। উহা বাঙলার ছাপা পুথি, বোম্বাইয়ের ছাপা পুথি ও আমার হাতে-লেখা পুথি, তিনেই রহিয়াছে। কৃষ্ণকথামধ্যে বৃন্দাবনমণ্ডলের যে বর্ণনা দেখিলাম শ্রীরাধিকার সর্থীগণের ষে বর্ণনা দেখিলাম, গোপীগণের কৃষ্ণভজনার যে মাহাত্ম্য দেখিলাম, তাহাতে এই বর্তমান পাতালখণ্ড ষে কালিদাসের বহু পরবর্তী, তাহাতে সংশয় করা বড়ই দুঃসাহসের কাজ। আমার অত সাহস নাই। আমি আধুনিক