পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষৎ : ግ » বলিতে পারি না। প্রস্তাব মাত্রই সাধু এবং সাধু সঙ্কল্পের সিদ্ধিতে যত্নবান হওয়াই উচিত ;-সাহিত্য-পরিষদেরও উচিত। প্রথমে যখন সাহিত্য-পরিষদের স্বাক্ট হয়, তখন সুবিখ্যাত ফরাসী আকাডেমির আদর্শ অনেকের মনে ছিল। এমন কি, সাহিত্য-পরিষদের ইংরেজী নাম— Bengal Academy of Literature cro años? &ras offo I of আকাডেমি যে উদ্দেশ্য লইয়। জন্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন, সেই উদ্দেশ্য সাধনে কত দূর সফল হইয়াছেন, ঠিক জানি না। হইয়া থাকিলেও হাতীর অনুকরণ মূষিকের পক্ষে বিজ্ঞানুমোদিত নহে। * g উদ্দেশ্য যাহাই হউক, বঙ্গ-সাহিত্যের উন্নতি সাধনার্থ সাহিত-পরিষং এ পi্যিন্ত যে কাজ করিয়াছিলেন, তাহাতে দৃষ্টি রাখিয়া উক্ত সভাকে নিম্নোক্তস্বরূপ প্রশংসাপত্র দেওয়া যাইতে পারে। . প্রথম, সাহিত্য-পরিষং কলিকাতার সাহিত্যসেবীদিগের ও বাঙ্গালী স্থাহিত্যে অনুরাগী ব্যক্তিদিগের প্রধান সম্মিলনস্থান । এইখানে তাহীরা প্রতি মাসে অন্ততঃ একবার উপস্থিত হইয়া পরস্পর আলাপ পরিচয় করেন, কাব্য, দর্শন, ইতিহাস, ব্যাকরণ ইত্যাদি নানা শাস্ত্রের আলোচন৷ করিয়া থাকেন। বলা বাহুল্য, এইরূপ একটি সাহিত্যিক অডিড নানা কারণে বিশেষ বাঞ্ছনীয়। সাহিত্যসেবীদের সমাজে পরস্পর প্রীতিবন্ধনের ইহা একটা সমীচীন উপায়। উদ্দেশ্য মহৎ । দ্বিতীয়, এ দেশের ইংরেজী, সংস্কৃত ও বাঙ্গালা শিক্ষাপ্রণালীর সঙ্গে বাঙ্গল সাহিত্যের সম্বন্ধ অতি নিকট। গবর্ণমেণ্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় এই শিক্ষাপ্রণালীর পরিচালক। সাহিত্য-পরিষৎ গবর্ণমেণ্টের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষানীতির উপর চক্ষু রাখিয়া বসিয়া আছেন। সাহিত্য-পরিষদের চেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট বাঙ্গাল শিক্ষার কিঞ্চিৎ আদর হইয়াছে, সাহিত্যপরিষদের প্রাথিত শিক্ষা-সংস্কার অনেক স্থলে গবৰ্ণমেণ্টের অনুমোদিত হইয়াছে। তৃতীয়, সাহিত্য-পরিষৎ বাঙ্গালীর পরিচালিত একমাত্র বৈজ্ঞানিক সভা ; এবং বর্তমান কালে উহার উপযোগিতা ও আবশ্বকত৷ সাধারণকে একটু স্পষ্ট করিয়া বুঝান আবশ্যক। একমাত্র বৈজ্ঞানিক সভা বলিলে প্রথমেই ডাক্তার সরকারের প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানসভার কথা মনে আসে । উক্ত মহাশয়ের প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানসভা পদার্থবিদ্যা, রসায়নশাস্ত্র, শারীর তত্ত্ব প্রভৃতি বিজ্ঞানের আলোচনা করেন। আলোচনা সম্প্রতি ছাত্রবর্গকে তত্তৎবিষয়ে উপদেশদানে পরিণত । বিজ্ঞানচর্চ বা বিজ্ঞানশাস্ত্রের অনুশীলন বিজ্ঞানসভার প্রতিষ্ঠাতার অভীপিত থাকিলেও উহা অর্থাভাবে কার্য্যে পরিণত হয় নাই। সাহিত্য-পরিষৎ পদার্থবিদ্যা বা তংশ্রেণীস্থ বিজ্ঞানের অনুশীলন করেন না। কিন্তু স্বদেশের ভাষা, স্বদেশের সাহিত্য ও স্বদেশের ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়ের বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে অনুশীলন করিয়া থাকেন। এ বিষয়ে সাহিত্য-পরিষদের আদর্শ অনেকটা বাঙ্গালার এশিয়াটিক সোসাইটির মত। ঐ প্রাচীন সোসাইটি এশিয়ার ভূতত্ত্ব ও উদ্ভিদতত্ত্বের আলোচনা করিয়া থাকেন, মাঝে মাঝে এক আধট রসায়নশাস্ত্রের বা গণিতশাস্ত্রের প্রবন্ধ বাহির করিয়া আমোদ বোধ করেন। কিন্তু এশিয়া মহাদেশের এবং মুখ্যতঃ ভারতবর্ষের সমাজতত্ত্ব; ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব,