পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষৎ ३१€) ইতিহাস নহে। আমাদের জাতীয় ইতিহাস এখনও আলোচিত হয় নাই । নগেন্দ্রবাবু কিঞ্চিং স্বত্রপাত করিয়াছেন মাত্র। আশা করি, তিনি দীর্ঘজীবী হইয়া সিদ্ধিলাভ করুন। দীনেশবাবু আমাদের সাহিত্যের ইতিহাস লিথিয়াছেন বলিলে ভুল হয়, তিনি আমাদের প্রাচীন সাহিত্যের খনি আবিষ্কার করিয়াছেন বলাই সঙ্গত। এখন সেই খনি হইতে বিবিধ মণি রত্ন, কয়লা প্রস্তর সংগৃহীত হইতেছে মাত্র। সাহিত্য-পরিষৎ এই সংগ্ৰহকাf্য প্রধান ব্রত বলিয়া গ্রহণ করিয়াছেন। সাহিত্য-পরিষদের এই মহৎ ব্রতে কুচ্ছ, সাধন আবশ্বক। সাধনা সিদ্ধির পথে অগ্রসর হউক। এই সাহিত্যের খনি হইতে যাহা বাহির হইবে, তাহা অবলম্বন করিয়া বাঙ্গালা ভাষার উৎপত্তি ও বৃদ্ধির ইতিহাস ভবিষ্ণুতে লিখিত হইবে। @ বাঙ্গালা দেশের এই ভাষার ইতিহাস, সাহিত্যের ইতিহাস, সমাজের ইতিহাস, আমোদের ইতিহাস, ধৰ্ম্মের ইতিহাস সঙ্কলন সাহিত্য পরিষদের মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিত, ইহাই আমার ধারণা। এ স্থানে কাৰ্য্যক্ষেত্র বিস্তীর্ণ–এখানে এখন দাড়াইয়া সীমা দেখিতে পাই না। খাটিবার জন্য লোক চাই—উচিতসংখ্যক লোক দেখিতে পাই না। যাহা হউক, মজুর খাট। আরম্ভ হইয়াছে, ইহার আবশ্বকতা অনেকে বুঝিয়াছেন, ইহাই আপাততঃ পবম লাভ বিবেচনা করি। সাহিত্য-পরিষৎ অন্য কাজ করুন, তাহাতে ক্ষতি নাই। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জ্যোতিষ, বেদ বেদান্ত সম্বন্ধে প্রবন্ধ পড়িয়া চিত্তবিনোদন করুন, আপত্তি নাই । কিন্তু ঐ সকল ক্ষেত্র সাহিত্য-পরিষদের নিজের নহে। পরিষং যেন নিজের কাজ না ভুলিয়া যান, ইহাই প্রার্থনা করি। চাই এখন বঙ্গবাসীর সহানুভূতি—লোকবল চাই, আর অর্থবল চাই। গরিবের দেশের গরিব সভা ভিক্ষার ঝুলি স্কন্ধে করিয়া স্বদেশীর নিকট দাড়াইয়াছে ; বাঙ্গাল ভাযায় র্যাহার অনুরাগ আছে, বাঙ্গালা সাহিত্যে র্যাহার শ্রদ্ধ আছে, বাঙ্গালীর ইতিহাস যিনি জানিতে চাহেন, তিনি সেই ঝুলিতে র্তাহার মুষ্টিভিক্ষা অর্পণ করুন। পরিষৎ সকলকেই সমাদরে আহবান করিবেন। ভিক্ষণভাণ্ডে মাসে মাসে আট আনা প্রদান করিয়া তাহারা সাহিত্য-পরিষদের সাধু সঙ্কল্পে সহায়তা করুন। র্যাহার এই ভিক্ষাদানে অসমর্থ, তাহারাও পরিশ্রম দিয়া সাহায্য করিতে পারেন। পুরাতন পুথি সংগ্ৰহ করিয়া দিন ; প্রাদেশিক শব্দ সংগ্ৰহ করিয়া, ব্ৰতকথা, গ্রাম্য কবিতা, গ্রাম্য গান, ছেলেভুলান গল্প, গ্রাম নগর পীঠস্থান দেবস্থান প্রভৃতির বিবরণ, দেবস্থানীয় ইতিহাসের টুকরা, কিংবদন্তীর ভগ্নাংশ, যাহা কিছু দুই চোখে দেখিতে পান, দুই হাতে কুড়াইয়৷ পান, পরিষদের কার্য্যালয় লক্ষ্য করিয়া সবেগে নিক্ষেপ করিতে থাকুন। পরিষং ভিক্ষুক, পরিষৎ তাহাদিগকে বেতন দিবার ক্ষমতা রাখেন না, তাহীরা দয়া করিয়া পরিষৎকে ভিক্ষণ দিন । ভারতীর আশীৰ্ব্বাণী তাহাদের পুরস্কার হইবে। উপসংহারে একবার ক্ষণেকের মত সম্পাদকীয় সাজ গ্রহণ করিয়া বঙ্গবাসীকে বঙ্গসাহিত্যের সেবার জন্য আহবান করিতেছি—নিতান্ত সম্পাদকোচিত ভাষায় র-.৮