পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

It-G রামেন্দ্রস্বন্দর রচনাসমগ্র আপনাদের নিকট মার্জনা ভিক্ষা করিতেছি। এই ভিক্ষার সহিতই আমি সাহিত্যসম্মিলনের নিকট এ বংসরের জন্য—অথবা ভবিতব্য বিধানে হয় ত চিরদিনের জন্য বিদায় লইতেছি । ( মানসী’, চৈত্র ১৩১৯ ) । অভিভাষণ গত বর্ষে চট্টগ্রামে বঙ্গীয়-সাহিত্য সম্মিলনের য়ে অধিবেশন হয়, আচাৰ্য্য ডাক্তার প্রফুল্লচন্দ্র রায় সেই অধিবেশনে বিজ্ঞানশাখার নেতৃত্ব করিয়াছিলেন। আমি সেখানে উপস্থিত হইতে পারি নাই । বোধ করি আমার এই অনুপস্থিতির স্বযোগ পাইয়া আমার পরম শ্রদ্ধাভাজন বন্ধুগণ বৰ্ত্তমান বর্ষে বিজ্ঞানশাখার সভাপতিত্বের ভার আমার উপর অর্পণ করেন। এই বিষয়ে তাহারা আমার মতামতের অপেক্ষ মাত্র রাখেন নাই। যোগ্যতা বিচার দূরে থাকুক, যেরূপ দৈহিক অবস্থা ন হইলে এইরূপ সভার নেতৃত্বগ্রহণ কখনই সম্ভবপর হয় না, দুই বৎসর হইতে আমার সেই অবস্থাই নাই। যোগ্যতা এবং ক্ষমতা, উভয়ের অভাব সত্ত্বে ও সভার পরিচালন কিরূপে সাধ্য হইবে, সে বিষয়ে আমি তাহাদের উপদেশপ্রার্থ হইলে ও তাহারা আমাকে সে উপদেশটুকু দিতে কুষ্ঠিত হইয়াছেন । সভাপতিত্বের গুরুভার আমার মস্তকে ন্যস্ত হইয়াছে, এই সংবাদ যখন আমাব নিকট পৌছিল, তখন শুনিলাম, এই ভার অস্বীকারেও আমার স্বাধীনতা নাই । জগদ্বিখ্যাত আচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র সদ্য যে আসন ত্যাগ করিয়াছেন, সেই আসন গ্রহণে স্পদ্ধ প্রকাশ পাইতে পারে কিন্তু ইহাতে মনে মনে একটু শ্লাঘ এবং আনন্দ পাই নাই, এই কথা বলিলে মিথ্যা উক্তি হইবে। হয় ত সেই শ্লাধার বশীভূত হইয়াই এ বিষয় লইয়া আর গণ্ডগোল করি নাই ; কিন্তু সম্প্রতি ঘটনাক্রমে আমার দুৰ্ব্বল স্নায়ুযন্ত্র এরূপ আহত ও অবসন্ন হইয়াছে, যাহাতে এই গুরুভার গ্রহণে নিতান্ত অহম্মুখতার পরিচয় হইবে, ইহা বুঝিয়া সাহিত্যসম্মিলনের কতৃপক্ষের নিকট আমার অবস্থা বিজ্ঞাপন করিয়াছিলাম, এবং তৎসঙ্গে কোন যোগ্যতর পাত্রে এই ভার ন্যস্ত হয়, এইরূপ বিনীত নিবেদনও জানাইয়াছিলাম। কিন্তু আমার করুণ কাহিনী তাহাদের হৃদয় আৰ্দ্ৰ করিল না। বিজ্ঞানসভার নেতৃত্বকার্য্যে যোগ্যতা বা ক্ষমতা কিছুরই প্রয়োজন নাই, সন্মিলনের অধ্যক্ষগণ কিরূপে এই সিদ্ধান্ত করিলেন, তাহ আমার নিকট উৎকট সমস্ত । থাকিয়া গেল। কিন্তু বঙ্গদেশের এই কেন্দ্রস্থলে বৈজ্ঞানিকমণ্ডলীর পুরোভাগে আসীন হইয়া হংসমধ্যে বকের ন্যায় কিরূপ শোভমান হইব, ইহা মনে করিয়া আমার দুর্বল স্নায়ুযন্ত্র কিরূপে কম্পিত হইতেছে, আমি স্বয়ংই তাহার ভূক্তভোগী। যাহা হউক, অধ্যক্ষগণ আমাকে আশ্বাস দিয়াছেন যে, এই মহতী সভার পুরোভাগে না দাড়াইলেও আমার চলিতে পারে। সেকালে নিয়ম ছিল, এবং এ কালেও হয়ত বহু স্থলে প্রথা আছে যে, রাজদরবারে বা গুণিগণের সভায় কাৰ্য্যারম্ভের পূর্বে নকিব ফুক্রায়, অর্থাৎ একট। লোক, যাহার যুক্তি এবং বেশভূষা সভায় জনগণের হান্ত উৎপাদনে সমর্থ, ৰে অতি উচ্চকণ্ঠে প্রায় অবোধ্য