পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵԵ রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র ছিল না। সেই ক্ষীণ শক্তি লইয়া পরিষৎ কিরূপে এই বার্ষিক অনুষ্ঠানে প্রবৃত্ত হইবে, সেই চিন্তা বহু রাত্রি আমাব চিস্তার ব্যাঘাত করিয়াছে। সৌভাগ্যক্রমে ১৩১২ সালের শেষ ভাগে হঠাৎ বঙ্গীয়-সাহিত্য-সম্মিলনের সূচনা হয়। রঙ্গপুর হইতে শ্ৰীযুক্ত সুরেন্দ্রকুমার রায় চৌধুরী এবং বরিশাল হইতে শ্ৰীযুক্ত দেবেন্দ্র কুমার রায় চৌধুবী প্রায় একসঙ্গে বাঙ্গালার সাহিত্যসেবীগণকে সম্মিলিত হইবার জন্য আহবান করেন। ববিশালের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করিয়াছিলাম, কিন্তু বরিশালের সাহিত্য-সম্মিলন সেই বৎসর বরিশালে আহত রাষ্ট্রনৈতিক সম্মিলনের পুচ্ছ আশ্রয় করিতে যাওয়ায় সম্মিলনচেষ্টা ব্যর্থ হয়। পর বংসর মুর্শিদাবাদ জেলায় সাহিত্যসম্মিলনের আহবান ও দৈবক্রমে নিস্ফল হয় । তার পর-বৎসর কাশিমবাজারের মাননীয় মহারাজের আহবানে সাহিত্য-সম্মিলনেব প্রথম অধিবেশন ঘটে। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ সেখানে সভাপতি ছিলেন। সম্মিলনের সেই প্রথম বৎসর বিজ্ঞান আলোচনাব বিশেষ কোন সুবিধাই ঘটে নাই। পর-বৎসর রাজসাহী হইতে নিমন্ত্রণ আইসে। সেখানকার অভ্যর্থনা-সমিতির সম্পাদক শ্রযুক্ত শশধর রায় মহাশয়, সম্মিলন কোন পথে চালিত হওয়া উচিত, তৎসম্বন্ধে আমার অভিপ্রায় জানিতে চাহিয়| আমাকে অনুগৃহীত করেন। সাহিত্যের নানাবিভাগের সম্যকৃ আলোচনার জন্য সাহিত্য-সম্মিলনকে সাহিত্য, ইতিহাস এবং বিজ্ঞান—এই তিন শাখায় আপাতত: বিভাগ করা যাইতে পাবে, এই অভিপ্রায় আমি জানাইয়া ছিলাম। বলা বাহুল্য, ব্রিটিশ আসোসিয়েশনের আদর্শ আমার মনে জাগিতেছিল। শশধর বাবু এককালে কাব্য লিখিয়া যশস্বী হইয়াছিলেন, কিন্তু তাহার অস্থিমজ্জা বৈজ্ঞানিকের ধাতুতে নিৰ্ম্মিত। নানা মাসিকপত্রে মানবতত্ত্ব সম্বন্ধে তাহার বৈজ্ঞানিক আলোচনা এক শ্রেণীর পাঠকের পক্ষে আনন্দজনক ও অন্য শ্রেণীর পাঠকের পক্ষে ভীতিপ্রদ হইয়া পড়িয়াছে। Eugenics বা মানবজাতির উৎকর্ষবিধান সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিক আলোচনায় প্রবৃত্ত হইয়া তিনি দেশমধ্যে লোকের গার্হস্থ্য জীবন সম্বন্ধে বিবিধ প্রশ্নের যে সব ছাপান তালিকা ছড়াইতে আরম্ভ করিয়াছেন, তাহাতে বাঙ্গালাব গৃহস্থগণও সম্ভবত: ভীত হইয়া পড়িতেছেন। গৃহস্থের জীবনেব খুটিনাটি Wolfé Ho Life Assurance Company's; ছাপান তালিকা ইহার নিকট হারি মানে। রাজসাহীর সাহিত্য-সন্মিলনকে শশধর বাবু যেরূপে প্রায় বৈজ্ঞানিক সম্মিলনে পরিণত করিতে উপস্থিত হইয়া ছিলেন, তাহাতে আমিও কিঞ্চিং ভীত হইয়া পডিয়াছিলাম। সে বার সভাপতি ছিলেন ডাক্তার প্রফুল্লচন্দ্র রায়। কতকটা সেই কারণে এবং কতকটা শশধর বাবুর স্বত্রচালনায় রাজসাহীর সাহিত্য-সম্মিলনে বৈজ্ঞানিকের এবং বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধের ঘনঘটা হইয়াছিল। পর-বৎসর ভাগলপুরে এবং তৎপর-বৎসর ময়মনসিংহে বৈজ্ঞানিকেরা সেরূপ জটলার অবসর পান নাই। তবে ময়মনসিংহে স্বয়ং আচাৰ্য্য জগদীশচন্দ্র সভাপতি ছিলেন। র্তাহার অভিভাষণটাই বৈজ্ঞানিকের অভিভাষণ। পৃথিবীর যে কোন বৈজ্ঞানিক সম্মিলনে উহা সাদরে গৃহীত হইতে পারিত। তদ্ব্যতীত এই উপলক্ষ্যে সান্ধ্য সম্মিলনে তাহার আবিষ্কৃত নূতন তত্বসকল সাধারণকে বুঝাইয়া দিয়া তিনি একটা নূতন পথ দেখাইয় দেন। পর-বৎসর ভাগলপুরে