পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা : ইংরাজী শিক্ষার পরিণাম \రిet ডাকিতে ডাকিতে পৈশাচিক বদন ব্যাদান করিয়া সমাজ-শরীর গ্রাস করিতে উদ্যত রহিয়াছে। রাজপুরুষগণ রাক্ষসীকে শাসনে রাখিবার চেষ্টায় আছেন ; কিন্তু শাসন আর মানে না। ইউরোপের রাজনীতি, ধৰ্ম্ম-নীতি, সমাজনীতি, এই জীবন-মরণ সমস্যা লইয়া বিব্রত। কিন্তু মীমাংস খুজিয়া মিলিতেছে না। আনি বেসান্টের বিচিত্র জীবনের বিবিধ বিপৰ্য্যয়ের মধ্যে একটা ধারাবাহিক শৃঙ্খলাস্থত্র দেখিতে পাওয়া যায়। উক্ত সমস্যা পূরণের জন্যই এই অসামান্য নারীর জীবনের প্রধান ভাগ অতিবাহিত হইয়াছে। লণ্ডনের দরিদ্রতার সহিত বহু দিন ধরিয়া তিনি দ্বন্দ্বযুদ্ধে প্রবৃত্তা ছিলেন। অবশেষে নিরাশ হইয়। ক্লান্তশরীরে তিনি এই শান্তরসাম্পদ পুরাতন পুণ্যতপোবনের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়াছেন। এই বৃদ্ধ স্থির ক্ষমাশীল সহিষ্ণু সংযত জাতির প্রতি চাহিয়াছেন, আর বলিয়াছেন, এমন আর হয় না , ইহার আর তুলনা নাই। . ইউরোপ কৰ্ম্মপ্রবণ, আর ভারতবর্ষ বৈরাগ্যপ্রবণ। কৰ্ম্ম হইতে ঐশ্বৰ্ষ্য, জ্ঞান, গৌরব ইউরোপ লাভ করিয়াছে ও করিতেছে । আর বৈরাগ্য হইতে ভারতবর্ষ তৃপ্তি, শান্তি, অনাশক্তি লাভ করিয়া ঐশ্বৰ্য্য, জ্ঞান, গৌরব বিসর্জন দিতে বসিয়াছে। তাই হিন্দুজাতির তৃপ্তি ও শান্তি স্থিতিশীলতায় হিমাচলের স্পৰ্দ্ধা করে। অক্ষুব্ধতায় প্রশান্ত মহাসাগরের তুলনীয় হয়। আর ইউরোপের জ্ঞান গৌরব পরাক্রম হয়ত আকাশবাহী উল্কার মত, অগ্নিগিরির উদগীরিত বহ্নির মত ক্ষণস্থায়ী শোভা বিস্তার করিয়া নিৰ্ব্বাণ হইতে পারে। আমাদের সম্মুখে ভিন্নমুখবর্তী দুই পথ বর্তমান। কোন পথ অবলম্বনীয়, ইহাই হিন্দুসপ্তানের প্রধান বিচাৰ্য্য । ( ‘সাহিত্য’, আষাঢ় ১৩০১ ) । ইংরাজী শিক্ষার পরিণাম পুরাণ পাঠ করিলে অবগত হওয়া যায় যে, সেকালের তেজীয়ান মুনি-ঋষিগণের সন্তান-সন্ততি সকল সময়ে জন্মগ্রহণের জন্য প্রচলিত নিয়মানুসারে দশ মাস কাল গর্ভাবস্থানরূপ যাতনা ভোগের অপেক্ষ রাখিতেন না । দেশ কাল পাত্রের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য না রাখিয়াই যত্র তত্র অকস্মাৎ এক এক ঋষিবংশধরের আবির্ভাব হইত, এবং তিনিও প্রায় ভূমিষ্ঠ হইবা মাত্র সাঙ্গোপাঙ্গ বেদশাস্ত্রের উচ্চারণ আরম্ভ করিয়া একটা ভাবী বিপ্লবের স্থচনা করিয়া ফেলিতেন। ষাট বৎসর পূর্বে এ দেশে সাব্যস্ত হইয়াছিল, ইংরাজী বিদ্যা না শিখিলে আমাদের মনুষ্যত্ব জন্মিবে না। সাব্যস্ত হইবা মাত্র বিলাতী সরস্বতী দশ মাসের অপেক্ষা ন! রাখিয়া একেবারে কতকগুলি শ্মশ্র গুম্ফধারী স্বপক সস্তান প্রসব করিলেন ; এবং অকস্মাৎ দেশমধ্যে একটা হৈ-চৈ পড়িয়া গেল। কেহ আশা করিলেন, ভারতমাতা অচিরেই হিমাচলের উচ্চতম শিখরে উন্নীত হইবেন , কেহ আশঙ্কা করিলেন, এইবার ইহার বুড়ীকে ভারতসাগরে ডুবাইয়া মারিল। তার পর ষাট বৎসর অতীত হইয়াছে কিন্তু ইহার মধ্যে ভারতের বিশেষ উন্নতির ब्रt-२०