পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W obr রামেন্দ্রম্বন্দর রচনাসমগ্র লাভ করে নাই । রাজ্য বিস্তার দূরের কথা ; কিরূপে নিজের পরিচিত সীমানা পার হইয়া পা ফেলিতে হয়, তাহা আমরা জানি না, আমাদের সাহসেও কুলায় না। রাজ্য অধিকারার্থ কি কি অস্ত্র ব্যবহার করিতে হয়, তাহার কতকগুলার নাম কণ্ঠস্থ করিয়াছি বটে ; কিন্তু কখনও তাহ চক্ষে দেখি নাই। আমাদিগকে না চালাইলে আমরা চলিতে পারি না, আমাদিগকে পথ না দেখাইয়া দিলে আমরা পথ চিনিয়া লইতে পারি না ; আমাদের নিজের হাত পায়ের উপর নিজের কর্তৃত্ব নাই ; আমাদের জীবনীশক্তির মাত্রা শূন্য। আমরা সোলার সিপাই ; তার টানিলে আমাদের হাতের ঢাল তলোয়ার নড়িতে থাকে ; আমরা ছেলেদের খেলানার ব্যাঙ, ; পেট টিপিলে আমরা কক্ ককৃ করি। অবখ্য রাজনীতির ক্ষেত্রে আমরা এক হিসাবে অনেকটা অগ্রসর হইয়াছি ; কিন্তু একটু দূরে দাড়াইয়া দেখিলে সেই বা কতটুকু ? কতকটা আমরা একত্ব লাভ করিয়াছি, সন্দেহ নাই, কিছু দিন পূৰ্ব্বে বাঙ্গালী ও মান্দ্রাজী, মাৰ্হাট্ট ও শিখ এক কার্য্যের জন্য একাসনে বসিবে, ইহা অসম্ভব ব্যাপার ছিল। এখন সম্ভব হইয়াছে, ইহা কতকটা ইংরাজী শিক্ষার গুণে সন্দেহ নাই ; কিন্তু অনেকটা আবার ইংরাজী শাসনের গুণে ও অন্ত পাচটা কারণে। এবং এই একত্ব সাধনেও আমাদের চরিত্রের দুর্বলতা, লঘুতা, ও তন্তুহীনতা অনেকটা অস্তরায় হইয়া দাড়াইয়াছে। ইংরাজী শিক্ষার গুণে আমরা এই জাতীয় চরিত্রের এই হীনতাই দেখিতে শিখিয়াছি, এই পৰ্য্যন্ত বলিতে পারি , কিরূপে হীনতা শোধন করিতে হইবে, তাহা শিখি নাই। তবে ভবিষ্যতে ইংরাজী শিক্ষা ইংরাজের পায়ের বুট ও আমাদের রুগ্ন প্লীহা, এতদুভয়ের সাহায্য লাভ করিয়া কতকটা চরিত্র শোধনের পথ দেখাইয়া দিতেও পারে। আর জ্ঞানার্জনের কথা। পূর্বেই বলিয়াছি, আমরা শিথিয়াছি অনেক। টিটিকাকা টিম্বকৃষ্টুর ভৌগোলিক বৃত্তান্ত হইতে অক্সিজেন, ক্লোরীন, আর সিটি ও ঈথর, অনেক কথা শিখিয়াছি, যাহা পূর্বে জানিতাম না। আমরা বড় বড় অঁাক কষিতে পারি, যাহ। ভাস্করাচার্য্যের মাথায় কখনও আসে নাই ; বায়ুমধ্যে শব্দের বেগ নিৰ্দ্ধারণ করিতে গিয়া নিউটন কিরূপে ভুল করিয়া বসিয়াছিলেন, তাহা অক্লেশে বলিয়া দিতে পারি। এমন কি, বোতলের ভিতর হাইড্রোজেন পুরিয়া নিৰ্ভয়ে আওয়াজ করিতেও সমর্থ হইয়াছি। সুতরাং আমরা ইংরাজের প্রসাদে শিখিয়াছি যথেষ্ট ; এমন কি আমাদের শিখিবার শক্তি কত গভীর, এ পর্য্যস্ত তাহ কেহ মানরজ্জ্ব ফেলিয়া নির্ণয় করিতে পারিল না । কিন্তু হায়! আমাদের গড়িবার শক্তি কই, আমাদের উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় কোথায় । আমরা শোনা কথা ও শেখা কথা ভিন্ন জগতে মৃত্তন কথা কি বলিলাম! উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় ত কিছুই দেখি না, এবং আরও কিছু দিনের মধ্যে যে পরিচয় পাওয়া যাইবে, তাহারও কোন শুভ লক্ষণ দেখিতে পাইতেছি না। ইংরাজী শিক্ষার কি এই পরিণাম ? জাম্বর গুরু উপদেশ গ্রহণে অতিশয় মজবুত ; সে বিষয়ে আমাদের তুলনীয়