পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা ঃ ইংরাজী শিক্ষার পরিণাম vర్ఫిరి ভারতবর্ষের, অর্থাৎ যে দেশের মধ্যে এক স্ববৃহৎ মানবসম্প্রদায় অতি প্রাচীন-কাল হইতে কেবল জ্ঞানার্জনের জন্য ধনলালসা ও ভোগাকাজক্ষা পরিত্যাগ করিয়া চিরজীবন পর্ণকুটার ও শাকান্ন লইয়া তৃপ্ত থাকিত। অধ্যয়ন ও অধ্যাপন ভারতের ব্রাহ্মণের জীবনের ব্রত ছিল। তাহার কোষে অর্থ ছিল না, তাহার হস্তে তরবারি ছিল না ; অধ্যয়ন ও অধ্যাপন মাত্র ব্ৰত করিয়া সে জীবনের সমুদয় ভোগাকাজক্ষা বিসর্জন দিয়াছিল ; এবং এই গরীয়ান স্বার্থ-সংহারের জন্য সমাজ তাহাকে শীর্ষস্থানে বসাইয়া পূজা করিত। অন্যাপি চতুষ্পাঠীর ব্রাহ্মণ অধ্যাপক হিন্দুসমাজের শীর্ষ স্থানে দণ্ডায়মান আছেন ; কোটিপতির মুকুট-মণ্ডিত মস্তক তাহার চরণরেণু স্পর্শ করিয়া কৃতার্থ হয়। 飘 o এখনও সেই প্রাচীনকালের পদ্ধতির বিশুদ্ধ ধারা ক্ষীণ স্রোতে এদেশে বহিয়া আসিতেছে। এখনও নাকি সিন্ধুতীর ও কৃষ্ণাতীর হইতে শিক্ষার্থী নবদ্বীপের চতুষ্পাঠীতে ভক্তি মাত্র দক্ষিণ ও উপহার লইয়া শিক্ষকসমীপে উপস্থিত হয়। তাহারা কি শেখে, কি মা শেখে, তাহা দেখিবার প্রয়োজন নাই। কি তাহদের উদ্দেশ্য, কি তাহদের আকাঙ্ক্ষা, কিসে তাহাদের তৃপ্তি কেবল তাহাই দেখিয়া নয়ন সার্থক কর । ভারতবর্ষের অন্য জাতির কথা জানি না ; কিন্তু হিন্দুজাতি জ্ঞানের মর্য্যাদা বুঝে না, ইহা তাঁহাদের জাতীয় অপকর্ষের পরিচয়, এ কথা বলিতে পারি না । তবে কেন এমন হয় ? কুক্ষণে ইংরাজ গবর্ণমেণ্ট শিক্ষিতগণকে বড় চাকরীতে নিয়োগ করিতে আবস্ত করিয়াছিলেন , এবং কুক্ষণে অর্থাগমের জন্য ইংরাজী জ্ঞানের দরকার হইয়াছিল। দরিদ্র অন্নার্থী ভারতবাসী অন্নাহরণের এমন সুগম পথ পাইয়া বfাকে বর্ণকে সেই পথে ছুটিবে, বিচিত্র কি ? তাহাদিগকে দোষ দেওয়া যায় না। অন্নচিস্ত মহুষ্যমাত্রেরই স্বভাবসিদ্ধ , সে জন্য যে দোষ, তাহা দরিদ্র হিন্দু যুবকের নহে , বিশেষতঃ মাসী পিসী ও পিসীত ভগিনীর বিধবা পুত্রবধূর অপোগণ্ড সন্তানগুলির সমবায়ভূত স্ববৃহৎ ক্ষুধাৰ্ত্ত হিন্দু-পরিবার যখন সতৃষ্ণ ও সোৎকণ্ঠভাবে কলেজ-যাতায়াতশীল যুবকের আগামী পরীক্ষায় পাশের জন্য উৰ্দ্ধমুখে তাকাইয়া থাকে। দেশ শুদ্ধ সমুদয় লোককে যে অন্নচিন্তা ও বস্ত্রচিন্তা ত্যাগ করিয়া বাগ দেবীর আরাধনায় নিরত হইতে হইবে, এমন অসঙ্গত প্রার্থনা করিতে পার না, এবং কলেজ হইতে বাহির হইবা মাত্র কিংকৰ্ত্তব্যবিমূঢ় হিন্দু যুবকের চক্ষের সম্মুখে অকস্মাৎ বৃদ্ধ পিতা ও বৃদ্ধ মাতার শুষ্ক অক্ষম ও কঙ্কালাবশেষ শরীর শুশ্ৰুষাৰ্থী হইয়া উপস্থিত হয়, ও বাল্যে বিবাহিত পত্নী তিন চারিটি শিশু সন্তান সহ অন্নাথিনী হইয় তাহার মুখের পানে চাহিতে থাকে, এই ব্যাপারের জন্ত মহন্যচরিত্র ও সমাজচরিত্রকে দায়ী করিতে পার ; হিন্দু যুবককে দায়ী করতে গেলে বড় নিষ্ঠুরতা হইবে। বিলাতী শিক্ষার সহকারে বিলাতী সভ্যতার নিয়ম এদেশে উপস্থিত হইয়া শিক্ষিত সম্প্রদায়ের সংসার খরচের মাত্রাট অযথা পরিমাণে বাড়াইয়া দিয়াছে ; সেটাও বিবেচনা করা উচিত। চাট জুতা ও তালপাতের ছাতা মাত্র সম্বল করিয়া, এমন কি, সেনেট হাউসে পদার্পণ করাঙ বড় সহজসাধ্য ব্যাপার নহে ; এবং উত্তরীয়