পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రిని ని রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র সহসা স্থির করা দায় হয়। এবং কবিও তাহার যখন যে মূৰ্ত্তির অনুভব করেন. তখন সেই মূৰ্ত্তি দেখাইতে বাধ্য হন। সচরাচর এইটা দেখা যায় যে, কতকগুলি লোক অপেক্ষাকৃত সৌভাগ্যশালী ; তাই তাহারা এক রকম স্বচ্ছন্দে আপনার অস্তিত্বটাকে বজায় রাখিয়া ও আপনার আত্মার পুষ্টিসাধন করিয়া চলিয়া গেল। অপর কতকগুলি লোক সেই সৌভাগ্যে বঞ্চিত ; তাহারা সংসারের ভীষণ আবর্তে পড়িয়া পাক খাইতে খাইতে ম্রিয়মাণ হইয়া মদিত হইতে থাকিল। মোটের উপর সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য লইয়া কথা ; কেন যে ইহার অবস্থা উহার অবস্থা হইতে ভিন্ন হইল, তাহার যুক্তি দেখান এক রকম অসাধ্য। সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য লইয়া কথা ; কেন না, সৰ্ব্বদাই দেখা যায়, যেখানে নিতান্ত দুর্বলচিত্ত ব্যক্তি অবহেলে হাসিয়া খেলিয়া পার হইল, সেখানে যাহার বাহুতে বল আছে ও অস্তরে সাহস আছে, সেও অকস্মাৎ স্বলিতপদ হইয়া দলিত ও পিষ্ট হইতে থাকিল। অবশু মানুষের সহজ যুক্তিপ্রিয়তা ও কারণাঙ্গুসন্ধানপরতা উভয় স্থলেই একটা থিওরি আবিষ্কার করিয়া বসিবে সন্দেহ নাই। যেখানেই “ধৰ্ম্মের জয় ও অধৰ্ম্মের ক্ষয়” এই সংক্ষিপ্ত অথচ রুচিকর নিয়মের ব্যভিচার দেখা যায়, সেইখানেই মাচুষে আপনার মনের ভিতর হইতে মনের তৃপ্তিকর একটা থিওরির আবিষ্কার করিতে বসে। কেহ বলে কৰ্ম্মফল, কেহ বলে অদৃষ্ট, কেহ বলে জন্মাস্তর সেই সনাতন নিয়মের ব্যভিচারের কারণ। বলা বাহুল্য, মকুস্থ্যের আবিষ্কৃত অনেক থিওরি কেবল অজ্ঞানেরই নামান্তর। অথবা অজ্ঞতা প্রচ্ছাদনেরই কৌশল । আসল ব্যাপারট। কিন্তু গোপন করিবার উপায় নাই। অধাৰ্ম্মিকে জয়ের ঢক্কা নিনাদিত করিয়া অকুতোভয়ে সংসারক্ষেত্রে বিচরণ করে, আর ধাৰ্ম্মিকে মুমূমুর্ণ হইয়৷ গুহার অন্তরালে লুক্কায়িত থাকে, ইহাও যেমন অনেক সময়ে সত্য কথা ; দুৰ্ব্বলে যেখানে উত্তীর্ণ হয়, সমর্থ সেখানে পতিত হয়, ইহাও সংসারের সেইরূপ একটা লোমহর্ষণ সত্য । এই সত্য তোমাদের প্রিয় ও রুচিকর না হইতে পারে. তোমাদের রুচির সহিত মিলাইবার জন্য ইহাকে প্রচ্ছন্ন রাখিবার হয়ত চেষ্ট} করিতে পার, অথবা কোন রুচিকর থিওরির দ্বারা ইহার সমর্থনের প্রয়াস পাইতে পার, কিন্তু ইহার অস্তিত্বে সন্দেহ করিও না । কথাটা সম্পূর্ণ প্রকৃত, কিন্তু তথাপি আমরা আমাদের যুক্তির ও থিওরির অভ্রাস্ততা বিষয়ে এমনই সংশয়হীন যে, প্রত্যেকেই এক একটা নৈতিক তুলাদণ্ড নিৰ্ম্মাণ কবিয়া ব্যক্তিবিশেষের নৈতিক বলশালিতার পরিমাণ করিতে বসি । এবং নিক্তিটা অমুক দিকে ঢলিয়া পড়িয়াছে দেখিবা মাত্র অমুক লোকটা এই মাত্রায় পাপিষ্ঠ ও অমুক লোকটা এই পরিমাণে পুণ্যবান, দ্বিধাহীন চিত্তে ও নিঃসঙ্কোচে রায় প্রকাশ করিয়া থাকি। আমরা মনেও ভাবি না যে, আমরা যে তুলাও হাতে লইয়া ওজন করিতে বসিয়াছি, সে তুলাদণ্ডের গঠনে এখনই একটা প্রকাও ভ্রাপ্তি রহিয়াছে, বাহা স্থিতিবিজ্ঞানের একান্ত বিরোধী। অথবা সেই ছইটা প্রব্যের ওজনের তুলনা করিতেছি, ভ্রান্তিবশে তাহার একটাকে জলের ভিতর মগ্ন করিয়া রাখিয়াছি ও অার একটা হাওয়ায় রাখিয়া দিয়াছি। অথব।