পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেঞ্জস্বন্দর রচনাসমগ্র "לבס\ এই বিপ্লব হইতে সমাজ রক্ষার জন্য শাস্ববিৎ পণ্ডিতগণ শ্রীতির ও ধৰ্ম্মশাস্ত্রের দোহাই দিয়া সদাচার পুনঃ প্রতিষ্ঠার জন্য যথাশক্তি চেষ্টা করিয়াছিলেন। সেই জন্য সনাতন ধর্মের পুনঃ প্রতিষ্ঠার কালে আমরা আচারের বন্ধনের দৃঢ়তা দেখিয়া বিস্মিত হই ও স্মৃতিগ্রন্থকারদিগকে গালি দিই। র্তাহারা ধৰ্ম্মনীতির অপেক্ষ আচারনীতির অধিক আদর করিয়াছেন দেখিয়া তাহাদিগকে নানাবিধ কুবাক্য বলি । আমরা ভুলিয়া যাই, নীতির প্রতিষ্ঠা কোন দেশেই কোন ব্যবস্থাপকের ( Legislatorএর ) কাজ নহে ; আইনের দ্বারা সন্নীতির প্রতিষ্ঠা কোন কালেই হয় না ; তবে সদাচারের প্রতিষ্ঠ হইতে পারে। এবং সদাচার §§fälzis jofo decency, propriety প্রভৃতি আখ্যা দেওয়া যায়, তাহা সমাজ-স্থিতির জন্য একান্ত আবশ্যক ; এবং তাহার জন্যই রাজশাসনের ও শাস্ত্রের শাসনের আবশ্যকতা ; নীতি ( Morality ) প্রতিষ্ঠাপক্ষে, রাজশাসনের ও শাস্ত্রের শাসনের কোনই মূল্য নাই। আধুনিক কালে যে সকল নিবন্ধকার ও সংগ্রহকার আচার-বন্ধনে সমাজকে বাধিবার চেষ্টা করিয়া কতকটা কৃতকাৰ্য্য হইয়াছিলেন, র্তাহাদের অনেকেই রাজা শ্ৰয়ে প্রতিপালিত। তাহার স্বয়ং ঋষি ছিলেন না, তবে ঋষিবাক্যের দোহাই দিতেন ও রাজাকে পরামর্শ দিয়া রাজশাসন নিয়ন্ত্রিত করিয়া রাজবিধি দ্বারা সদাচার প্রতিষ্ঠায় সফল হইয়াছিলেন । কিন্তু ভারতবর্ষের দুর্ভাগ্যক্রমে একালের ধৰ্ম্মসম্প্রদায়-সকলের প্রবর্তকগণ শাস্ত্রের তাৎপৰ্য্য ঠিক বুঝেন নাই। এমন কি, স্বয়ং শঙ্করাচাৰ্য্যও শ্রীতির সেই প্রাচীন বচনের দোহাই দিয়া বৈরাগ্যের দ্বার অবারিত রাখিয়াছিলেন । পরবর্তী সম্প্রদায়প্রবর্ভকেরা স্ত্রীশূদ্রাদিকেও বৈরাগ্য গ্রহণে নিবারণ করেন নাই। ফলে আমরা শাক্ত মঠে ও বৈষ্ণব আখড়ায় বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে নাম মাত্র পরিবর্তন করিয়া বিরাজিত দেখিতে পাইতেছি। যতি শঙ্করাচাৰ্য্য যে দিন গৃহস্থ মণ্ডন মিশ্রকে পরাজয় করিয়া গৃহস্থাশ্রমের উপর সন্ন্যাসাশ্রমের প্রাধান্য সপ্রমাণ করেন, সেই দিন ভারতবর্ষের ইতিহাসে দুদিন বলিয়া গণ্য করাই সঙ্গত। একালে যে মন্থর সময়ের বর্ণাশ্ৰমধৰ্ম্ম পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হইবে, ইহা কেহ আশা করেন না। বোধ করি ইচ্ছাও করেন না। সে দিন নাই, হইবেও না । কিন্তু বিপ্লব কোন কালেই বাঞ্ছনীয় নহে। পুরাতন আদর্শ পুরাতন ভিত্তির উপর বজায় থাকুক, ইহাই প্রার্থনীয়। সেই আদর্শ কালানুযায়ী মূৰ্ত্তি গ্রহণ করুক, তাহাতে ক্ষতি নাই। 始 বিপ্লব বোধ করি কেহই চাহেন না। আধুনিক সমাজসংস্কারকেরাও চাহেন না। পরিবর্তন আবশ্যক, ইহা সকলেই স্বীকার করেন। তবে এক পক্ষ যতটা পরিবর্তন চান, অন্য পক্ষ ততটা চান না ;–স্থিতিশীল ও উন্নতিশীলে বোধ করি, এই মাত্র প্রভেদ। এই প্রভেদ সৰ্ব্বত্রই আছে ; এদেশেও আছে ; থাকাও প্রার্থনীয় । তবে একালে সমাজব্যবস্থায় রাজশক্তির সাহাষ্য পাইবার আশা নাই ; পাওয়া প্রার্থনীয়ও নহে। যখন হিন্দু রাজা ছিল, তখন ষে পরিবর্তন শাস্ত্রজ্ঞগণের পরামর্শে রাজসাহায্যে অবাধে সম্পাদিত হইত, একালে তাহা হইবার উপায়